ভারতের দায়মুক্তি, আক্ষেপের বছরে দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন আশা

  • স্পোর্টস রিপোর্টার, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি- সংগৃহীত

ছবি- সংগৃহীত

চলতি বছরের জুনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের মাধ্যমে দীর্ঘ ১৩ বছর শিরোপা না পাওয়ার দায়মুক্ত হয়েছে ভারত। অথচ মাত্র সাত মাস আগেই আহমেদাবাদে লাখো দর্শকের সামনে হতাশায় ডুবেছিল দলটি। ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল। তবে সেই ক্ষত মুছে ভারতীয় দলের বিজয়োল্লাস হয় আটলান্টিকের পাড়ে ক্যারিবীয় দ্বীপ বার্বাডোজে।

বছরটাকে তাই ভারতের দায়মুক্তির বছর বলাই যায়। তবে তার ঠিক উল্টোটা ধরা যায় দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিয়ে। প্রোটিয়ারা এবারও নারী পুরুষ মিলিয়ে দুটো বিশ্বকাপের ফাইনালে হেরেছে জেতার মতো অবস্থানে থেকে। বছরটা তাই তাদের আক্ষেপের। তবে এ বছরের শেষটা আবারও তাদের নতুন আশায় বুক বাধার সুযোগ করে দিচ্ছে। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে যে উঠে গেছে দলটা।

বিজ্ঞাপন

ভারতের কথাই আগে বলা যাক। গেল এপ্রিলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কেনসিংটন ওভালে দুর্দান্ত পারফর্ম করে ভারত। কোহলির ৭৬, অক্ষর প্যাটেলের ৪৭ এবং শিভাম দুবের ক্যামিও ইনিংসে ১৭৬ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় তারা। জাসপ্রিত বুমরাহ ও আর্শদ্বীপ সিংয়ের ডেথ ওভারের দুর্দান্ত বোলিংয়ের সুবাদে ভারত মাত্র ৭ রানে জয় নিশ্চিত করে। ১৩ বছর পর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে আবারও বিশ্বসেরা হয় ভারত।

এরপর মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশে। কিন্তু রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে টুর্নামেন্ট সরিয়ে নেওয়া হয় সংযুক্ত আরব আমিরাতে। দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত ফাইনালে নিউজিল্যান্ড নারী দল দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে শিরোপা জেতে। এই জয় দিয়ে ২০১৫ ও ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপ এবং ২০০৯ ও ২০১০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে হারের আক্ষেপ ঘুচিয়েছে তারা।

বিজ্ঞাপন

তবে এই দুই দলের শাপমোচনের বিপরীতে দক্ষিণ আফ্রিকা আবারও তাদের ‘চোকার’ অপবাদ ঘোচাতে ব্যর্থ হয়েছে। পুরুষদের ফাইনালে অপরাজিত থাকার পরও ভারতের কাছে হারের মুখ দেখে তারা। শেষ ২৪ বলে ২৬ রান তোলার সহজ সমীকরণও মেলাতে ব্যর্থ হয় দলটি। অন্যদিকে, মাসখানেকের ব্যবধানে প্রোটিয়া মেয়েরাও তাদের হতাশার ইতিহাস পুনরাবৃত্তি করে।

এদিকে, সাদা পোশাকে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে। ভারতের হট ক্যান্ডিডেট হিসেবে শুরুর পরও ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ হয়ে তাদের সম্ভাবনা হোঁচট খেয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা এদিক দিয়ে উঠে গেছে ফাইনালে, যা তাদের শিরোপাখরা ঘোচানোর সুযোগ হয়ে এসেছে সামনে। দ্বিতীয় দল হতে পারে অস্ট্রেলিয়া, ভারত-শ্রীলঙ্কার আশাটা ক্ষীণই হয়ে গেছে রীতিমতো।
মাঠের বাইরে ভারত-পাকিস্তানের ‘হাইব্রিড’ মডেলের নাটক চলছেই। ২০২৫ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজন নিয়েও দুই দলের মধ্যে রাজনৈতিক টানাপড়েন অব্যাহত। তবে উভয় দেশ আগামী তিন বছরে নিজেদের মাটিতে অনুষ্ঠেয় বৈশ্বিক টুর্নামেন্টগুলো ‘হাইব্রিড’ মডেলে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

পাকিস্তান ক্রিকেটে বারবার নেতৃত্ব ও কোচ পরিবর্তনের ঘটনাও আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বাবর আজমের নেতৃত্ব থেকে সরে যাওয়া, আবার ফিরে আসা এবং মোহাম্মদ রিজওয়ানের দায়িত্ব নেওয়া—এই ঘটনাগুলো পুরো বছর জুড়ে পাকিস্তান ক্রিকেটকে অস্থির রেখেছে। কোচ পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায়ও নতুন অধ্যায় যোগ করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড।