সাকিবকে ছাড়াই তাহলে ভারত সফর? বিকল্প অধিনায়ক তবে মাহমুদউল্লাহ!
শেষ পর্যন্ত তাহলে এই সিদ্ধান্ত!
সাকিব আল হাসান যাচ্ছেন না ভারত সফরে! সোমবার দিনভর এই আশঙ্কার খবরই শোনা যায় দেশের ক্রিকেটাঙ্গনে। ২৯ অক্টোবর, মঙ্গলবার বিসিবি সংবাদ এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে সংবাদ সম্মেলন করে। তবে তার আগেই বিষয়টা পরিষ্কার যে এই সফরে সাকিবকে দলের বাইরে রেখেই বিকল্প পরিকল্পনাও সেরে ফেলেছে বিসিবি।
সাকিব বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি এবং টেস্ট দলের অধিনায়ক। এই সফরে তাকে ছাড়া দল গেলে তাহলে নতুন অধিনায়ক কে হচ্ছেন? সেই উত্তরও ঠিক করে রেখেছে বিসিবি। টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি এই দুই ফরমেটের জন্য মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকেই বিকল্প অধিনায়কের দায়িত্ব দেওয়ার বিসিবির পরিকল্পনাও চূড়ান্ত।
সম্ভাব্য নতুন দায়িত্বের কথা শুনেই সোমবার রাতে একরাশ দুঃশ্চিন্তা নিয়ে ঘুমাতে গেছেন মাহমুদউল্লাহ। এমন পরিস্থিতিতে আসলে কি করা উচিত-তা নিয়েও কিছুটা দোটানায় এই মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান। তবে সব ছাড়িয়ে দেশ ও দেশের সন্মান আগে-এই বিবেচনাবোধটাই নিশ্চয়ই তার মধ্যে প্রবল।
ক্রিকেটারদের ধর্মঘটের সংকট ও দাবিদাওয়ার জটিলতা কিন্তু একঅর্থে মিটে গেছে। কিন্তু গ্রামীণফোনের সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তি করে সাকিব নতুন এক বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। তিনি জানতেন বোর্ডের চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটার হিসেবে কোন টেলকো কোম্পানির সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তি করার এখতিয়ার তার নেই। এই বিষয়ে বিসিবি’র স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা আছে। কিন্তু তারপরও তিনি সেই নিষেধাজ্ঞাকে পাত্তা না দিয়ে গ্রামীণফোনের সঙ্গে চুক্তি করেন। যার ফলশ্রুতিতে বিসিবি তাকে যথাযথ কারণ দর্শানের চিঠি দিয়েছে। বোর্ড স্পষ্টত জানিয়ে দিয়েছে এই বিষয়ে তারা সাকিবকে কোনো ছাড় দেবে না। অবস্থা দৃষ্টে পেছনের দুদিনের মধ্যে বোর্ডের সঙ্গে সাকিবের এসব বিষয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি নাজুক অবস্থার মধ্যে এসে দাঁড়িয়েছে। ব্যাপারটা আর সমঝোতা প্রক্রিয়ার মধ্যে নেই। রেষারেষি পর্যায়ে এসে উপনীত হয়েছে। সাকিব এরই মধ্যে আরেকটি বড় ভুল করেছেন অনুশীলন এবং দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ মিস করে।
দল অনুশীলনে ব্যস্ত। প্রস্ততি ম্যাচ খেলছে। অথচ সেই দলের অধিনায়ক সেখানে অনুপস্থিত। দলের অধিনায়কের এমন আচরণ বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের পছন্দ হয়নি। এই প্রসঙ্গে বোর্ড সভাপতির বক্তব্য খুবই স্পষ্ট-‘প্রথমদিন সে অনুশীলনে আসল না। পরের দিন গেল। কিন্তু অর্ধেক অনুশীলন করে চলে আসল। তৃতীয়দিন আবার নেই! আজও (সোমবার, ২৮ অক্টোবর) নেই। এসব দেখে কি মনে হয় না, এটার মধ্যে সন্দেহের যথেষ্ট কারণ আছে? আমি কি সন্দেহ করতে পারি না? আমাকে তো বিকল্প একটা ঠিক করে রাখতে হবে। আমি সেজন্যই বোর্ডে যাচ্ছি।’
ভারত সফরের জন্য টি-টোয়েন্টি দল বাংলাদেশ আগেই ঘোষণা করেছিল। সেই দলের মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ইনজুরির কারণে সফরে যাচ্ছেন না সেটা পুরানো খবর। নির্বাচকরা জানিয়েছিলেন-সাইফুদ্দিনের জায়গায় তারা নতুন কাউকে নেবেন না। ১৪ জনের দলই ভারত সফরে যাবে। এরই মধ্যে জানা গেলে তামিম ইকবালও পুরো ভারত সফর থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন। সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর পাশে থাকতেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তামিমের বিকল্প হিসেবে যে ইমরুল কায়েস যাচ্ছেন তাও নতুন খবর নয়।
নতুন খবরটা হলো এই টি- টোয়েন্টি দলে নাকি আরও কিছু যোগ-বিয়োগ হবে। তাই ২৯ অক্টোবর, মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন করে আরেকবার দল ঘোষণা হবে। বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই যদি সেই দলের নতুন অধিনায়কের নাম এদিন আপনি শুনতে পান!
-হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত কেন নিতে চলেছে বিসিবি?
এই প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন বিসিবি সভাপতি এভাবে, ‘কয়েকজনের মধ্যে ইনডিসপিন্সেবল (অপরিহার্য হয়ে উঠার) ভাব চলে এসেছে। ভাবটা এমন, এরা ছাড়া চলবে না। এই জিনিসটা ভাঙতে হবে।’
উপসংহার তাহলে এটাই!
আরও পড়ুন-