নেটওয়ার্ক বিভ্রাট: গ্রামীণফোনের শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা!

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

দুই ঘণ্টার বেশি সময় বিভ্রাটের পর ফিরেছে দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্ক। ফাইবার অপটিক কেবল বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে সাময়িকভাবে অসুবিধায় পড়েছেন গ্রাহকরা বলে জানিয়েছে অপারেটরটি।

গ্রামীণফোন জানিয়েছে, গাজীপুর, টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ এলাকায় রাস্তায় খনন কাজ চলাকালে অনিচ্ছাবশত ফাইবার অপটিক ক্যাবল কেটে যাওয়ার ফলে এই নেটওয়ার্ক বিভ্রাট দেখা দেয়। তবে সূত্র জানিয়েছে ভিন্ন কথা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গ্রামীণফোন শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছে। নেটওয়ার্ক উন্নয়নের নামে হুয়াওয়ের সঙ্গে সংযোগ বসানোর সময় নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্নের ঘটনা ঘটে।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, গ্রাহকদের উন্নতমানের টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক পরিষেবা দিতে গ্রামীণফোন ও হুয়াওয়ের মধ্যে একটি চুক্তি রয়েছে। সেই চুক্তির আওতায় গ্রামীণফোন তার নেটওয়ার্ক উন্নয়নের কাজ করছে। হুয়াওয়ের নেটওয়ার্ক সার্ভারে সঙ্গে গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্ক বসানোর কাজ হচ্ছে। হুয়াওয়ের সার্ভার ডাউন হওয়ায় গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্ক বিভ্রাট শুরু হয়।

গ্রামীণফোনের কমিউনিকেশন্স বিভাগের প্রধান খায়রুল বাশার বলেছেন, অপটিক্যাল ফাইবার বিচ্ছিন্ন হওয়ায় প্রায় দুই ঘণ্টা গ্রামীণফোনের অনেক গ্রাহক সংযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন। কয়েকটি জেলায় সড়কে উন্নয়ন কাজের কারণে এই এ সমস্যার উৎপত্তি ঘটে। গাজীপুর, টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ এলাকায় রোডস অ্যান্ড হাইওয়েজ বিভাগের কাজ চলছে। রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি করার এক পর্যায়ে অপটিক্যাল ফাইবার ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং কিছু এলাকায় গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্ক বিঘ্নিত হয়।”

বিজ্ঞাপন

তার বক্তব্য অনুযায়ী, ঢাকা, গাজীপুর, সাভার ও সিরাজগঞ্জ এলাকায় গ্রামীণফোনের অনেক গ্রাহক সংযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন। তবে চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, রংপুরসহ দেশের অনেক জেলায় গ্রামীণফোন গ্রাহক সংযোগ না থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দেন। এতে বোঝা যায় শুধু ওই অঞ্চলগুলো নয়, পুরো দেশেই গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্ক বিপর্যয়ের মুখে পড়ে ভোগান্তিতে পড়ে।

এদিকে বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত এই বিভ্রাটের মধ্যে বিপুল সংখ্যক গ্রাহক ভোগান্তিতে পড়ায় গ্রামীণফোনের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে টেলিযোগাযোগ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি।

টেলিযোগাযোগ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির তরফ থেকে ব্যাখ্যা চেয়ে একটি জরুরি চিঠি পাঠানো হয় গ্রামীণফোনের সিইওকে।

বিটিআরসির পরিচলক (ইঞ্জিনিয়ারিং এ্যান্ড অপারেশন্স বিভাগ) মো. গোলাম রাজ্জাক স্বক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, গ্রাহক কর্তৃক প্রচুর পরিমাণে প্রাপ্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানা যায় যে দেশব্যাপী মোবাইলফোন অপারেটর গ্রামীণফোনের মোবাইল নেটওয়ার্ক প্রাপ্তিতে বিঘ্নতার সৃষ্টি হচ্ছে। দেশের শীর্ষ মোবাইল অপারেটর হিসেবে গ্রামীণফোনের গ্রাহক সংখ্যা বিবেচনায় গ্রাহকসমূহ মোবাইল নেটওয়ার্ক প্রাপ্তিতে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় সকল শ্রেণীর গ্রাহকগণ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এমতাবস্থায়, জাতীয় জরুরি অবস্থা বিবেচনায় গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্ক বিপর্যয়ের সঠিক কারণ ব্যাখ্যাসহ অতি দ্রুত জরুরি ভিত্তিতে দেশব্যাপী গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্ক নিশ্চিতকরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হল।”

আরও পড়ুন: নেটওয়ার্ক বিপর্যয়: গ্রামীণফোনের গোঁজামিল!