ঈদযাত্রায় গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য বিআরটিসির ১৭১ বাস
ঈদে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য ১৭১টি বিআরটিসি বাস দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে আগামী শুক্রবার (৯ আগস্ট) সকাল ৭টা থেকে উত্তরবঙ্গের উদ্দেশে গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে প্রতি ১৫ মিনিট পরপর মোট ১৫১টি বাস ছাড়বে। এছাড়া চট্টগ্রাম থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকার উদ্দেশে আরও ২০টি বাস ছাড়বে।
নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে পোশাক শ্রমিকরা যাতে বাড়ি ফিরতে পারেন সে জন্য তৈরি পোশাক খাতের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইর উদ্যোগের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন (বিআরটিসি) এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিআরিটিসি বাসের পাশাপাশি শ্রমিকদের জন্য আলাদা ট্রেন ও লঞ্চ রাখারও আশ্বাস দিয়েছে সরকার। তারপরও যাতে শ্রমিকরা ঈদের কোনোরকম ভোগান্তি ও হয়রানি ছাড়াই যেন ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরতে পারেন সেই নিশ্চয়তা চায় বিজিএমইএ।
সার্বিক বিষয়ে বিজিএমইএর সভাপতি ড. রুবানা হক বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘গত ঈদে সরকার আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ বাস, ট্রেন এবং লঞ্চের ব্যবস্থা করেছিল। ফলে শ্রমিকরা নিরাপদে বাড়ি ফিরছে। তারা সুন্দরভাবে স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পেরেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেশিরভাগ নারী, তারা আমাদের সম্পদ। এই সেক্টরে কাজ করা শ্রমিকরা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ। তারা যাতে সুন্দরভাবে বাড়িতে পৌঁছাতে পারে সেই লক্ষ্যে কাজ করছি। কোনো শ্রমিককেই যাতে বেতন-বোনাস ছাড়া ঈদ করতে না হয়, সেই চেষ্টা করছি।’
গত রমজানের ঈদের মতোই কোরবানির ঈদের গার্মেন্টস শ্রমিকদের কথা চিন্তা করে বিআরটিসি বাসের জন্য গত ২০ জুলাই সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেন বিজিএমইএর সভাপতি।
একইদিন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) চেয়ারম্যানের কাছেও আবেদন করেন তিনি। তার আবেদনর পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমিকদের বাড়ি ফেরার জন্য ১৭১টি বাস দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিআরটিসি।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর কাছে পাঠানো চিঠিতে বিজিএমইএর সভাপতি লেখেন, ‘দেশের পোশাক শিল্পে প্রত্যক্ষভাবে ৪৫ লাখ এবং পরোক্ষভাবে দুই কোটি শ্রমিক-কর্মচারী কর্মরত রয়েছে। তাদের অবদানে রফতানি বাণিজ্যের ৮৩ শতাংশ বৈদেশিক মুদ্রা আসে দেশের অর্থনীতিতে। এই জনশক্তির বেশির ভাগই মুসলিম। ফলে ঈদের ছুটি শুরু হলে ঢাকা ও আশপাশের ৪৫ লাখ শ্রমিকরা বাস ট্রেন এবং লঞ্চের মাধ্যমে বাড়ি যেতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাতে বাস,ট্রেন এবং লঞ্চের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়। বাড়ি যেতে ভোগান্তি এবং হয়রানির শিকার হতে হয়। তাই গার্মেন্টস শ্রমিকদের নিরাপদে বাড়ি ফিরতে বাস প্রদানের জন্য আপনার সহায়তা কামনা করছি। অন্তত ১০০টি বিশেষ বাসের বরাদ্দ রাখার দাবি জানাচ্ছি।’
একইভাবে শ্রমিকদের জন্য বিশেষ ট্রেন ও লঞ্চের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রেলপথ ও নৌ মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন জানান রুবানা হক। তবে ওই দুই মন্ত্রণালয় থেকে তেমন সাড়া মেলেনি অর্থাৎ এ বছর ট্রেন কিংবা লঞ্চে বিশেষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সরকার।