৫০০ একর জমিতে পিএইচপির কারখানা, কর্মসংস্থান হবে ৩০ হাজার
ঢাকা: দেশের সর্ববৃহৎ মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্প স্থাপনের জন্য ৫০০ একর জমি বরাদ্দ পেলো পিএইচপি ফ্যামিলি। এ জন্য বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে দেশের এ শীর্ষ শিল্প প্রতিষ্ঠানটি। ৪ বিলিয়ন ডলার ( প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা) বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশের প্রথম বেসিক স্টিল মিল ও একটি সিমেন্ট কারখানা স্থাপন করবে পিএইচপি। এরমধ্যে বিদেশ থেকে আসবে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। কারখানাটি ২০২৫ সালের মধ্যে সম্পূর্ণ হবে এবং এতে কর্মসংস্থান হবে কমপক্ষে ৩০ হাজার লোকের।
রোববার (৫ আগস্ট) রজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সরকারের পক্ষে এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী সদস্য হারুনুর রশীদ এবং পিএচপি ফ্যামিলির পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ইকবাল হোসেন স্বাক্ষর করেন।
এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ।
এছাড়া বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী, বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেপজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. হাবিবুর রহমান খান, পিএইচপি ফ্যামিলির প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারম্যান সুফি মিজানুর রহমান এবং বিজিএমইএ সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমানসহ দেশি বিদেশি কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কূটনৈতিকরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
চুক্তির বিষয়ে অনুষ্ঠানে পিএইচপি ফ্যামিলির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সুফি মিজানুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দীর্ঘদিন থেকে বেসিক স্টিল মিল স্থাপনের বিষয়ে জমির বরাদ্দের আলচনা চলছিল। আল্লাহর রহমতে, দেশের সব থেকে বড় অর্থনৈতিক অঞ্চল মিরসরাইতে কর্তৃপক্ষ আমাদের ৫০০ একর জমি ৫০ বছরের জন্য বরাদ্দ দিয়েছেন। সুযোগ সুবিধাসহ ২০২০ সালের মধ্যে জমি পেয়ে গেলে ২০২১ সালের মধ্যে কারখানা স্থাপনের কাজ শুরু করতে পারব। আর ২০২৫ সালের মধ্যে উৎপাদনে যেতে পারব। যা দেশের নতুন ইতিহাস স্থাপন করবে। বাংলাদেশে এটাই প্রথম বেসিক স্টিল মিল হবে। লৌহ জাতীয় যেসব পণ্য এতদিন বিদেশ থেকে আমদনি করা হতো এখন পিএইচপি বাংলাদেশের মাটিতে তা তৈরি করবে।”
প্রযুক্তির বিষয়ে পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান বলেন, “আমাদের সঙ্গে যৌথভাবে কোন প্রতিষ্ঠান নাই। শুধুমাত্র টেকনিকাল কাজের জন্য বিদেশ থেকে লোক আনা লাগবে। জাপান ও কোরিয়ার সঙ্গে প্রযুক্তিগত চুক্তি করব এবং তাদেরকেই পছন্দ করছি। তবে আমাদের দেশের টাকা বিদেশির হাতে দিতে রাজি না। বিদেশের প্রযুক্তি আমদানি করবো, বিদেশি জনশক্তি আমদানি করবো এটা সত্য, তবে তাদের মধ্যেমে নিজেদের সন্তানদের তৈরি করবো, যাতে দেশের পয়সা দেশে থাকে।”
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, “বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে দক্ষ জনবলে পরিণত করতে অর্থনৈতিক অঞ্চলের বিকল্প নেই। এখানে বিনিয়োগের যে বিশাল সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে তার সর্বোত্তম সেবা দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বদ্ধ পরিকর। শিল্প সৃষ্টির পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা উত্তরণের সরকারি এবং বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সবুজায়ন ও জলাধার নির্মাণের ওপর জোর দেন তিনি।”
সভাপতির বক্তব্যে বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, “মিরসরাইকে আকর্ষণ করেনি দেশের মাটিতে এমন কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান নাই। সবাই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এছাড়া দেশের বাহিরেও এ অর্থনৈতিক অঞ্চলটি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করেছে। আজকে পিএইপি’র মত দেশের সেরা করদাতা এ কোম্পানিকে পেয়ে আমাদের আত্মবিশ্বাস আরও বেড়েছে। দীর্ঘ সময় থেকে আমাদের সঙ্গে থেকে তারা আজকে এ চুক্তির মাধ্যমে কাঙ্খিত শিল্প স্থাপনের স্বপ্ন বাস্তাবায়ন করতে যাচ্ছে।”