ফ্যাশনেবল-স্টাইলিস্ট রাজনীতিবিদ অরুণ জেটলির ব্র্যান্ডপ্রীতি



ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
স্টাইলিস্ট রাজনীতিবিদ অরুণ জেটলি/ছবি: সংগৃহীত

স্টাইলিস্ট রাজনীতিবিদ অরুণ জেটলি/ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজনীতিতে মেধা ও দক্ষতার পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনযাপনে ফ্যাশন ও স্টাইলের স্বাক্ষর রেখেছেন সদ্য প্রয়াত ভারতীয় রাজনীতিবিদ অরুণ জেটলি। দিল্লিতে জন্ম নেওয়া ও নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠ গ্রহণকারী অরুণ জেটলির জীবনচর্চায় ছিল রুচি ও আভিজাত্যের ছাপ। পোশাক ও নিত্য ব্যবহার্য্য সামগ্রীর ক্ষেত্রে তিনি হাল ফ্যাশনের আধুনিক স্টাইলের অনুসারী ছিলেন। বিশ্বসেরা ব্র্যান্ডের বাছাই করা পণ্যসমূহ নিজের জন্য পছন্দ করতেন তিনি।

বলে রাখা সঙ্গত যে, ভারতের রাজনীতিতে ফ্যাশন ও স্টাইলের অনুসরণ নতুন নয়। আধুনিক ভারতীয় রাজনীতির দুই দিকপাল জিন্না ও নেহেরু বিশেষ পছন্দের পোশাক ও সেরা দোকানের জিনিস বেছে নিতেন। অবশ্য সেটা ব্র্যান্ড আইটেমের যুগ ছিল না। ফলে তারা দেশ-বিদেশের নামজাদা সরবরাহকারীর কাছ থেকে নিজেদের ব্যবহারের জন্য নানা পণ্য সামগ্রী সংগ্রহ করতেন।

ফ্যাশন ও স্টাইলের ক্ষেত্রে পরবর্তীকালে নাম করেছিলেন মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়র রাজবংশের সদস্য রাজনীতিবিদ মাধব রাও সিন্ধিয়া ও তার বোন বসুন্ধরা রাজে। আরেকজনের নাম এক্ষেত্রে বহুলভাবে উচ্চারিত। তিনি হলেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের এককালের অধিনায়ক, পাঞ্জাবের পাতিয়ালার পার্শ্ববর্তী পতৌদির নবাব মনসুর আলি খান। যিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বংশধর, বোম্বের নামকরা বাঙালি নায়িকা শর্মিলা ঠাকুরের স্বামী এবং বলিউড নায়ক সাইফ আলি খানের পিতা।

অরুণ জেটলির মৃত্যুর পর তার অন্তরঙ্গ জীবনের যে বর্ণিল চিত্র প্রকাশ পাচ্ছে, তাতে তিনি অবধারিত ভাবে স্থান করে নিতে চলেছেন ফ্যাশন, স্টাইল ও ব্র্যান্ডের জগতেও। তুলনামূলকভাবে প্রাচীনপন্থী, ধর্মাশ্রয়ী ও রক্ষণশীল রাজনীতির মুখপাত্র হয়েও তিনি নিজেকে উপস্থাপন করেছিলেন আধুনিক ভাবমূর্তিতে। চলনে, বলনে, পোষাকে সেই রুচি, আভিজাত্য ও স্বাতন্ত্রিকতার ছাপ দেখা গেছে অরুণ জেটলির আইনজীবী পেশা ও রাজনীতির কেরিয়ারে।

অরুণ জেটলি ব্যবহার করতেন বিশ্বের সেরা ব্র্যান্ডের দামি ও অত্যাধুনিক সামগ্রী। ঘড়ি, কলম, জামা, জুতা, টাওয়েল ইত্যাদি তিনি বেছে নিতেন বিশ্বসেরা ব্র্যান্ড কোম্পানির কাছ থেকে। সর্ব-সাম্প্রতিক ও উচ্চমানের ব্র্যান্ডের প্রতি ছিল তার দুর্নিবার আকর্ষণ। তাকে বলা হতো ‘হাই-অ্যান্ড ব্র্যান্ড’ প্রেমিক।

রাজনীতিতে এসে যখন তিনি নিয়মিত কুর্তা আর পায়জামা পড়তেন একটি হাতাকাটা কোটের সমন্বয়ে, তখনও গ্রীষ্মে পিওর কটন আর শীতে সেগুলো পশমিনা কাপড়ে তৈরি করা হতো। তার আগে, আইনজীবী পেশাকালে তিনি লন্ডনের বেসপোক শার্ট এবং জন লবের তৈরি কারুশিল্পময় জুতার চেয়ে নিম্নমানের কিছুই পড়তেন না।

 https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/25/1566745804348.JPG

অরুণ জেটলির পাঁচ দশকের লম্বা রাজনৈতিক কেরিয়ারের ঘনিষ্ঠজনেরা তার ব্যবহার্য্য সামগ্রীর বিরাট তালিকার কথা জানিয়েছেন, যে তালিকা এতো লম্বা যে, শেষ হওয়ার নয়। তার কর্মক্ষেত্রের সবাই জানতো ব্র্যান্ডপ্রীতি আর ফ্যাশন ও স্টাইলের দিক থেকে তিনি সবার চেয়ে এগিয়ে। নিজের এই অভ্যাসের কথা অরুণ জেটলি লুকিয়ে রাখতেন না। তার প্রকাশ্য তৎপরতায় সেগুলো লক্ষ্য করা যেতো। ঘড়ি, কলম, জামা, জুতা, তোয়ালের ক্ষেত্রে নামকরা ব্র্যান্ডের প্রতি তার সহজাত আকর্ষণ ছিল অত্যন্ত তীব্র ও প্রখর। তার সংগ্রহেও ছিল নামকরা, দামি ব্র্যান্ডের বহু জিনিস। তিনি ব্যবহার করতেন পিটেক ফিলিপস নির্মিত ঘড়ি, মন্ট ব্ল্যাঙ্ক-এর কলম, বেসপোক ব্র্যান্ডের শার্ট এবং জন লবের তৈরি কারুশিল্পময় জুতা।

অরুণ জেটলি এতোটাই অগ্রসর ও অত্যাধুনিক ছিলেন যে, যখন অধিকাংশ ভারতীয়ই ওমেগা ব্র্যান্ডের ঘড়ি কেনার কথাও চিন্তা করতে পারতেন না, তখন তিনি নিজের কব্জিতে অবলীলায় পিটেক ফিলিপস-এর ঘড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন। তার ছিল উল্লেখ করার মতো মন্ট ব্ল্যাঙ্ক কোম্পানির কলম, জামাওয়ার ব্র্যান্ডের টাওয়েল, রুমাল, টাই। মন্ট ব্ল্যাঙ্ক কোম্পানি নতুন ধরনের কোনও কলম বাজারে ছাড়লেই সেটা নিজের জন্য সংগ্রহ করতেন অরুণ জেটলি। এমনকি, যেদিন কলমটি বাজারে রিলিজ করা হতো, সেদিনই তা নিয়ে নিতেন তিনি।

লেখক-সাংবাদিক কুমকুম চাড্ডা ‘দ্যা মেরিগোল্ড স্টোরি’ নামে যে বই রচনা করেছেন, তাতে অরুণ জেটলিকে নিয়ে রয়েছে একটি আস্ত অধ্যায়। ‘অরুণ জেটলি: দ্য পিড পিপার’ নামের সেই অধ্যায়ে অরুণ জেটলির কেতা-দুরস্ত জীবনযাপনের আদ্যোপান্ত রয়েছে। রয়েছে তার ব্র্যান্ডপ্রীতি, ফ্যাশন সচেতনতা ও স্টাইলের প্রতি আগ্রহের কথাও।

ব্র্যান্ড সচেতনতা অরুণ জেটলির জীবনের আগাগোড়াই উপস্থিত ছিল। রাজনীতিতে এসেও তিনি সেটা পরিত্যাগ করতে পারেন নি। তার আইনজীবী পুত্র রোহানের জন্য তিনি প্রথম যে জুতো জোড়া কিনেছিলেন, সেগুলোও ছিল স্যালভাটরে ফেরাগামো নামের নামকরা ইতালীয় লাক্সারি ব্র্যান্ডের। মন্ত্রী পরিষদেও তার চেয়ে লেটেস্ট ও সর্বাধুনিক ল্যাপটপ নিয়ে অন্য কেউ কাজ করতেন না।

অরুণ জেটলির এই ফ্যাশনেবল-স্টাইলিস্ট জীবনধারা ও ব্র্যান্ডপ্রীতি সবাই জানতেন। কিন্তু কেউ এই ব্যয়বহুল জীবনের কোনও সমালোচনা করার সুযোগ পেতেন না। কারণ তিনি নিজের উপার্জন ও ব্যয়ের মধ্যে পরিচ্ছন্নতা ও স্বচ্ছতা রক্ষা করতেন। আইনজীবী হিসাবে তার অফিসকে তিনি এতোটাই নিয়মতান্ত্রিক করেছিলেন যে, কোনও মক্কেলের পক্ষে টাকা নিয়ে দর কষাকষি বা হেনস্তা হওয়ার সুযোগ ছিল না। তার অফিসের কর্মচারীরাও নানা বাহানায় ক্লায়েন্টের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সুযোগ পেতেন না। তিনি সবার পারিশ্রমিক নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন এবং সেমতে টাকা জমা দেওয়ার জন্য হিসাবরক্ষক রেখেছিলেন।

মন্ত্রী হিসাবেও অরুণ জেটলি ব্যক্তিগত জীবন ও আর্থিক ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা দেখিয়েছেন। একবার নৈনিতালে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে তিনি একদল বন্ধু-বান্ধব নিয়ে গিয়েছিলেন। তবে সেখানে তাদের থাকা-খাওয়ার যাবতীয় খরচ তিনি কড়ায় গণ্ডায় হিসাব করে নিজের পকেট থেকে চুকিয়ে দিয়েছিলেন।

 https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/25/1566745816503.jpeg

আরেক বার, তিনি তখন ভারতের অর্থমন্ত্রী, লন্ডনে একটি বিখ্যাত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান তার ব্যবহারের জন্য একটি গাড়ি পাঠায়। তিনি সেই গাড়ি হোটেলের দরজা থেকে ফিরিয়ে দিয়ে নিজে ভাড়া করা গাড়িতে চলাফেরা করেছিলেন।

অরুণের স্ত্রী, জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক অর্থমন্ত্রীর মেয়ে সঙ্গীতা নিজের স্বামী সম্পর্কে গর্ব করে বলেছিলেন, ‘অরুণ নিজের সততা, স্বচ্ছতা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে সব অর্জন করেছে। কেউ তাকে হাতে তুলে কিছুই দেয় নি।’

অরুণ জেটলির ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক জীবনে বহু সাফল্যের সঙ্গে সঙ্গে কিছু সমালোচনা থাকলেও তিনি ছিলেন ব্যক্তি-মানুষ হিসাবে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য। অতুলনীয় জনসংযোগ ক্ষমতা ও মোহনীয় দক্ষতার অধিকারী অরুণ রাজনৈতিক কারণে অনেকের সঙ্গে লড়াই করতেও ব্যক্তিগত সম্পর্ককে কখনোই নষ্ট হতে দেন নি। রাজনীতিতে তার উচ্চরুচি ও উন্নত সাংস্কৃতিক বোধ বিদ্যমান সংঘাত ও হানাহানি প্রবণ পরিবেশে বিরল ও শিক্ষণীয় দৃষ্টান্ত।

যে কারণে তার মৃত্যুর পর দলমত নির্বিশেষে সবাই ভিড় করেছেন দিল্লির গ্রেটার কৈলাসে অবস্থিত অরুণ জেটলির বাড়িতে। চরম প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে তার বৈরিতা এমন হয়েছিল যে, উভয়ের মধ্যে কথা বলা ও মুখ দেখাদেখি বন্ধ ছিল। কিন্তু অরুণ জেটলির মৃত্যু সংবাদ পেয়ে পুত্র রাহুলকে নিয়ে ছুটে আসেন সোনিয়া। এখানেই অরুণ জেটলির ব্যক্তিত্বের সাফল্য নিহিত।

রাজনৈতিক কেরিয়ারের চকচকে ইমেজের মতো ব্যক্তিজীবনেও অরুণ জেটলি সবাইকে মোহিত করেছিলেন তার ফ্যাশন, স্টাইল, ব্র্যান্ডপ্রীতির দ্বারা। রুচি ও আভিজাত্যের দীপ্তিতে ভারতীয় রাজনৈতিক ঘরানায় রেখেছিলেন মেধার স্বাক্ষর এবং দারুণ সফলভাবে সম্ভব করে তুলেছিলেন নিজের আলোকিত ও সুশোভন উপস্থিতি।

অরুণ জেটলির মৃত্যুতে মেধাবী নেতা এবং সুস্নিগ্ধ-সুসজ্জিত ব্যক্তিত্বের অধিকারী রাজনীতিবিদের অভাব ভারতের রাজনীতিতে অনুভূত হবে, যে অভাব খুব সহজে কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে না।

আরও পড়ুন: অরুণ জেটলি: ভারতীয় রাজনীতির মেধাবী পুরুষ

   

তানজানিয়ায় বন্যা-ভূমিধসে নিহত অন্তত ১৫৫



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারী বৃষ্টিপাতের পর বন্যা ও ভূমিধসে পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ায় কমপক্ষে ১৫৫ জন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুই শতাধিক মানুষ।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে, প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে ইতোমধ্যেই প্রায় ২ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী কাসিম মাজালিওয়া জানিয়েছেন, তানজানিয়ায় এল নিনোর কারণে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত ১৫৫ জন মারা গেছেন।

মে মাস পর্যন্ত বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে জানিয়েয়ে তিনি সতর্ক করে দিয়ে মানুষ ও পরিবারগুলোকে বন্যাপ্রবণ এলাকা ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী কাসিম আরও জানিয়েছেন, প্রায় ২ লাখ মানুষ এবং ৫১ হাজারেরও বেশি পরিবার ইতোমধ্যেই এই দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন অংশে প্রবল বাতাস, বন্যা এবং ভূমিধসের সাথে এল নিনোর কারণে প্রবল বৃষ্টিতে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে জীবনহানি, ফসল, বাড়িঘর, নাগরিকদের সম্পত্তি এবং রাস্তা, সেতু এবং রেলপথের মতো অবকাঠামোর ধ্বংসও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।’

বিবিসি বলছে, ভারী বৃষ্টিপাত প্রতিবেশী কেনিয়া এবং বুরুন্ডিতেও হচ্ছে, যার ফলে এই অঞ্চলে মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে।

;

ভারতের লোকসভা নির্বাচন

রাহুল, শশী, হেমা মালিনীর ভাগ্য পরীক্ষা আজ



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের ১৮তম লোকসভার সাত দফা ভোটের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়েছে আজ শুক্রবার। দেশের ১৩টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মিলিয়ে ভোট হচ্ছে ৮৮টি আসনে। এই দফার ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন সাবেক কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা, বলিউড তারকা হেমা মালিনীসহ এক ঝাঁক হেভিওয়েট প্রার্থী। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্যেরও ‘ভাগ্যপরীক্ষা’ হবে এই দফার ভোটে।

এদিকে, দ্বিতীয় দফার ভোট হতে চলেছে তুমুল বিতর্ককে সঙ্গী করে। ক্ষমতায় এলে কংগ্রেস দেশের সম্পদ মুসলমানদের মধ্যে বাঁটোয়ারা করে দেবে জানিয়ে সেই বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজেই। কদিন ধরেই ওই বিতর্ক ঘিরে ভোটের রাজনীতি সরগরম। এই বিতর্ক দ্বিতীয় দফার ভোটে হিন্দুত্ববাদীদের বেশি করে ভোটদানে উৎসাহিত করে দেশব্যাপী ধর্মীয় মেরুকরণ ঘটায় কি না, সেটাই হতে চলেছে প্রধান দ্রষ্টব্য।

জানা গেছে, রাহুল গান্ধী তার পুরনো আসন, কেরালার ওয়েনাড় থেকে এবারও ভোটে লড়ছেন। সেখানে তার মূল লড়াই বাম জোট এলডিএফের সিপিআই প্রার্থী অ্যানি রাজার বিরুদ্ধে। তিনি সিপিআই সাধারণ সম্পাদক ডি রাজার স্ত্রী। রয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি কে সুরেন্দ্রনও। কেরালা থেকে কংগ্রেসের টিকিটে সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শশী তারুর (তিরুঅনন্তপুরম) এবং এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কেসি বেণুগোপাল (আলাপুঝা) ভোটে লড়ছেন। সিপিএমের উল্লেখযোগ্য প্রার্থী দুই সাবেক মন্ত্রী কেকে শৈলজা এবং টমাস আইজ্যাক (পথনমথিট্টা)।

সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য এ বিজয়রাঘবনও প্রার্থী পালাক্কাড় আসনে। কেরালা থেকেই ভোটযুদ্ধে রয়েছেন বিজেপির দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী— রাজীব চন্দ্রশেখর (তিরুঅনন্তপুরম) এবং ভি মুরলীধরন (অত্তিনগল)। মোদি মন্ত্রিসভার সদস্য গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত তার পুরনো আসন রাজস্থানের জোধপুর থেকেই আবার ভোটযুদ্ধে নেমেছেন। ওই রাজ্যের কোটা থেকে বিজেপি প্রার্থী, বিদায়ী লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। অন্য দিকে, সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতের ছেলে বৈভব (জালোর) এবং একদা পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক সিপি জোশী মরুরাজ্যে কংগ্রেসের উল্লেখযোগ্য প্রার্থী।

দ্বিতীয় দফার ভোটের লড়াইয়ে দুই সাবেক মুখ্যমন্ত্রী, কর্নাটকের এইচডি কুমারস্বামী (মান্ড্য) এবং ছত্তীসগঢ়ের ভূপেশ বঘেল (রাজনন্দগাঁও) রয়েছেন। কুমারস্বামী জেডিএস এবং ভূপেশ কংগ্রেসের প্রার্থী। উত্তরপ্রদেশ থেকে বিজেপির টিকিটে লড়ছেন দুই অভিনেতা হেমা মালিনী (মথুরা) এবং অরুণ গোভিল (মিরাট)। হেমা মথুরার দু’বারের সংসদ সদস্য। আশির দশকে টিভি সিরিয়াল রামায়ণে রামের ভূমিকায় অভিনয়কারী অরুণ এ বার প্রথম নির্বাচনী ময়দানে।

দ্বিতীয় দফায় কেরালার ২০টি লোকসভা আসনের সবগুলোতে ভোটগ্রহণ হবে। তাছাড়া কর্নাটকের ১৪, রাজস্থানের ১৩, উত্তরপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্রের আটটি করে, বিহার ও আসামের পাঁচটি করে লোকসভা কেন্দ্র রয়েছে এই তালিকায়। রয়েছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ত্রিপুরা এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীরের একটি করে লোকসভা আসনও।

;

গণগ্রেফতারেও থামছে না মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। গণগ্রেফতারের পরও দমন করা যাচ্ছেন ফিলিস্তিনপন্থী এই আন্দোলন। বরং দিন যত যাচ্ছে, বিক্ষোভ তত ছড়িয়ে পড়ছে।

বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিক্ষোভে উত্তাল আটলান্টার এমরি ইউনিভার্সিটিতে পুলিশ গণগ্রেফতার চালিয়েছে। বিক্ষোভের কারণে ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ায় একটি স্নাতক অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে।

এমরি ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, কলেজের সঙ্গে যুক্ত নয় এমন বিক্ষোভকারীরা বৃহস্পতিবার ভোরে ক্যাম্পাসের মাঠে প্রবেশ করে। তারা চলে যেতে অস্বীকার করলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে রাসায়নিক স্প্রে ব্যবহার করে।

সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, শহরের এমারসন কলেজ থেকে স্থানীয় সময় বুধবার রাতে প্রায় ১০৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে সন্ধ্যায় ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া থেকে ৯৩ জনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।

নিউইয়র্কের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হওয়ার এক সপ্তাহ মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কয়েক ডজন বিশ্ববিদ্যালয়ে তা ছড়িয়ে পড়েছে।

এদিকে টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের অস্টিন শহরে ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসে বিক্ষোভকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরে সেখান থেকে ৩৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কলাম্বিয়া, ইয়েল ও নিউইয়র্ক ইউনির্ভাসিটিতে বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক ধরপাকড়ের পর নতুন করে এসব গ্রেফতারের ঘটনা ঘটেছে।

ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যালামনাই পার্কে বিক্ষোভ করতে বুধবার (২৪ এপ্রিল) জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাদের বাধা দেয় দাঙ্গা পুলিশ। পুলিশের হেলিকপ্টার থেকে ঘোষণা দিয়ে বিক্ষোভকারীদের ১০ মিনিটের মধ্যে সরে যেতে বলা হয়। এরপরও ঘটনাস্থলে থেকে যাওয়া শিক্ষার্থীদের অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়।

জানা গেছে, ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ায় বিক্ষোভ প্রথমে শান্তিপূর্ণ ছিল। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ এক নারীকে আটক করতে গেলে পানির বোতল ছুড়ে মারেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় তারা স্লোগান দিতে থাকেন—‘তাকে ছেড়ে দিন।’ এ ছাড়া পুলিশ কর্মকর্তাদের ঘিরে ‘ফিলিস্তিনের মুক্তি চাই’ বলেও স্লোগান দেন তারা।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে প্রবেশ করে অতর্কিত হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এতে এক হাজার ২০০ জন নিহত হন। এর জেরে সেদিন থেকেই গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। ছয় মাসের বেশি সময় ধরে চলা এ হামলায় গাজা উপত্যকায় ৩৪ হাজার ৩০৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া খাদ্য, পানি ও চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাবে তীব্র মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে সেখানে।

;

যুদ্ধবিধ্বস্ত হাইতির ক্ষমতায় ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার’



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হাইতির প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করেছেন। এর ফলে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে নতুন অস্থায়ী সরকার শপথ গ্রহণ করেছে।

বৃহস্পতিবার ( ২৫ এপ্রিল) রাষ্ট্রপতি প্রাসাদে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হয়।

বিদায়ী মন্ত্রিসভা জানিয়েছে, নতুন সরকার গঠনের অপেক্ষায় অর্থনীতিমন্ত্রী মিশেল প্যাট্রিক বোইসভার্টকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, হাইতিররাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের জাতীয় প্রাসাদে নয়জনের ‘অন্তবর্তীকালীন পরিষদ’ আনুষ্ঠানিকভাবে গঠন করা হয়। সহিংসতা এড়াতে গোপনে শপথ নেন অন্তবর্তীকালীন পরিষদের সদস্যরা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা এক চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি বলেন, তার প্রশাসন কঠিন সময়ে জাতির সেবা করেছে। চিঠিটিতে বুধবারের তারিখ উল্লেখ ছিল।

নিউরোসার্জন থেকে রাজনীতিতে আসা হেনরি ২০২১ সালে প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মোয়েসের হত্যার পর ক্ষমতায় এসেছিলেন। তাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে গত কয়েক মাস থেকে হাইতির গ্যাং সদস্যরা কাজ করে আসছিল।

গত মার্চে দেশে হেনরির অনুপস্থিতির সুযোগে হাইতির প্রধান দুই কারাগারে হামলাসহ একের পর এক সহিংসতা চালিয়ে রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি করে গ্যাং সদস্যরা। তারা রাজধানী পোর্ট -অ-প্রিন্সের ৮০ ভাগ নিয়ন্ত্রণ করত।

দেশটির চলমান সংকটের মধ্যে হেনরি গত মাসে ঘোষণা করেছিলেন যে তিনি পদত্যাগ করছেন।

;