‘আমি কোনো এজেন্সিকে দুষ্টু বলবো না’

  • জাহিদুর রহমান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকার আশকোনায় বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক সাইফুল ইসলাম।

ঢাকার আশকোনায় বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক সাইফুল ইসলাম।

মদিনা আল মুনাওয়ারা (সৌদি আরব) থেকে: তার সুপারিশেই সৌদি দূতাবাস ভিসা দেয়। সেই হজ ভিসা নিয়ে বাংলাদেশ থেকে চলতি মওসুমে সৌদি আরবে এসেছেন ব্যবস্থাপনা সদস্যসহ ১ লাখ ২৭ হাজার ২৯৮ জন।

সবাইকে পাঠিয়ে তিনি এসেছেন সবার শেষে। আবার সবাইকে দেশে নিয়ে তিনিও ফিরবেন সবার শেষে।

বিজ্ঞাপন

বার্তা২৪.কম‘র সঙ্গে একান্ত সাক্ষৎকারে কথাগুলো বলছিলেন ঢাকার আশকোনায় বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক সাইফুল ইসলাম। জনপ্রশাসনের ১৮ ব্যাচের উপসচিব পদপর্যদার এই কর্মকর্তা দেশে যেমন ব্যস্ত, মক্কা আর মদিনাতেও তার চাইতে বেশি ব্যস্ত। এরই ফাঁকে চলতি মওসুমের হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে কথা বলেন তিনি।

কেমন ছিলো হজের সার্বিক ব্যবস্থাপনা? জানতে চাইলে তিনি বলেন, আলহামদুলিল্লাহ। আল্লার কাছে শুকরিয়া। এ বছরের হজ আমাদের কাছে নির্বিঘ্ন মনে হয়েছে। সম্পূর্ণ নিঝঞ্ঝাট ভাবে হজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন যথা সময়ে নিরাপত্তার সঙ্গে হাজিদের দেশে ফিরিয়ে নেয়া- বলতে পারেন এটাই মহান আল্লাহর কাছে আমাদের শেষ চাওয়া।

বিজ্ঞাপন

এবার ৫২৮ টি অনুমোদিত হজ এজেন্সির মাধ্যমে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হাজিরা এসেছেন। আমি হজ এজেন্সি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) মহাসচিব শাহাদাত হোসাইন তসলিমের মাধ্যমে সকল অংশীজনদের স্বাগত জানাই। কারণ গত বারের চাইতে এবার অভিযোগ ছিলো কম। ব্যবস্থাপনা অনেক ভালো ছিলো।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ২০১৭ সালের মার্চে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আশকোনা বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক পদে যোগ দেন সাইফুল ইসলাম।

এ নিয়ে তো দুটি হজ পরিচালনার অভিজ্ঞতা হলো। তো সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতের পরিকল্পনা কি?

‘আসলে এসব অভিজ্ঞতা তেমন কাজে লাগে না। একেক বছর একেক ধরনের সমস্যা হয়। যেটা আগে থেকে অনুমান করা যায় না। যেমন ধরেন, গত বছর হঠাৎ করেই সৌদি রাজকীয় সরকার ঘোষণা করলো, বিগত তিন বছরে যারা হজ করেছেন, তাদের বাড়তি ফি হিসেবে ২১শ' সৌদি রিয়াল অর্থাৎ ৪৭ হাজার টাকার মতো দিতে হবে।

সকল লেনদেন শেষে যখন হজযাত্রীরা সৌদি আরব যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন এই বাড়তি ফি অনেকের জন্যে বিড়ম্বনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই বলছি, সমস্যা বলে কয়ে আসে না। হঠাৎ করেই উদ্ভাবন হয়। আবার আমরা সেটার সমাধানও করে ফেলি।"

এবারে চ্যালেঞ্জগুলো কি ছিলো?- এ বিষয়ে "আগেই বলে নিই, ৬০৬ জন সন্মানিত হজ যাত্রী নানা কারণে নিজেরাই ভিসার জন্যে আবেদনই করেন নি। তারা বাদে সকলকে সঠিক সময়ে সৌদি আরবে আনতে পেরেছি।

তবে মূল চ্যালেঞ্জ বলতে ছিলো, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্য নির্দিষ্ট ফ্লাইটে হাজি সাহেবদের এখানে আনা। এর বাইরে এজেন্সিগুলোকে মক্কা ও মদিনায় বাড়ি ভাড়া করতে হয়।

এর সঙ্গে অনেকগুলো বিষয় কিন্তু জড়িত থাকে। মিনা, আরাফাহ, মুজদালিফায় ব্যবস্থাপনাসহ মক্কা, মদিনায় বাড়ি ভাড়া, মোয়াল্লেম ফি পরিশোধ। সময় মতো এগুলো হচ্ছে কি'না সেটার তদারকি করাটাও বড় চ্যালেঞ্জ।"

চলতি মওসুমেও বেসরকারি হজ ব্যবস্থাপনা নিয়েও তো অনেক অভিযোগ- এ প্রসঙ্গে হজ পরিচালক বলেন, "আপনার বা আমার কাছে হজ এজেন্সিদের অনেক কাজই গাফলতি মনে হয়। আসলে তা কিন্তু নয়, এখানকার পদ্ধতিগত জটিলতার কারণে অনেক হাজি সাহেব বিড়ম্বনায় পড়েন"।

তো যারা দুষ্ট এজেন্সি। তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেবেন? তিনি বলেন, "আমি মক্কা,মদিনায় হাজী সাহেবদের অনেক বাড়ি পরিদর্শন করেছি। সেসব বাড়ি পরিদর্শনে এজেন্সির কোনো অনিয়ম পাইনি। মনে হয়েছে ভালো। হাজিরা বলেছে, আমরা ভালো আছি। আমি ঢালাও ভাবে অভিযোগ করবো না, কাউকে দুষ্টুও বলবো না। সবাই ভালো। কারো ক্রুটি বিচ্যুতি হলে ঢালাও ভাবে সেটা বলার অবকাশও নেই। অনেক অভিযোগ আছে, সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, যতটা বলেছে ততটা না।

তবে হ্যাঁ যাদের বিষয়ে অভিযোগ হয়েছে, তদন্তে প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। বর্তমানে হজ অভিযুক্ত হজ এজেন্সিদের শাস্তি দেয়া হয় বিধিমালার অধীনে। শিগগির হজ আইন আসছে। তখন বিশেষ কাঠামোর মধ্যে হজ ব্যবস্থাপনা হবে আরো উন্নত আর শৃঙ্খলার মধ্যে চলে আসবে অনেক কিছুই।