দানশীলদের জন্য রয়েছে গৌরবময় পুরস্কার

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

দানশীলদের জন্য রয়েছে গৌরবময় পুরস্কার, ছবি: সংগৃহীত

দানশীলদের জন্য রয়েছে গৌরবময় পুরস্কার, ছবি: সংগৃহীত

দান কেবল আর্থিক বা বস্তুগত নয়। দান জ্ঞানগত ও আধ্যাত্মিকও হতে পারে। ইসলামি স্কলাররা ইসলামের প্রচার-প্রসার, মুসলিম উম্মাহর ঐক্য রক্ষা, মানুষের দরিদ্রতা দূর করা ও সমাজের উন্নয়নের জন্য দানশীলতাকে জরুরি বলে মনে করেন। কোরআনে কারিমে আল্লাহর একত্ববাদ ও রাসূলের প্রতি ঈমান আনার পাশাপাশি আল্লাহ মানুষকে যা দিয়েছেন তা থেকে দান করতে বলা হয়েছে।

সূরা হাদিদের ১০ নম্বর আয়াতে এ প্রসঙ্গে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদেরকে আল্লাহর পথে ব্যয় করতে কিসে বাধা দেয়…, তোমরা যা করো- আল্লাহ সে সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত।’

বিজ্ঞাপন

স্বাভাবিক নিয়মে মানুষ যা অর্জন করে তা ফেলে রেখে দুনিয়া থেকে বিদায় নেয়। এটাই দুনিয়ার রীতি। তাই মানুষের উচিত দান-খয়রাত করার সুযোগকে কাজে লাগানো। অবশ্য নানা পরিবেশ ও প্রেক্ষাপটে দানের গুরুত্ব সমান নয়। সংকটপূর্ণ ও কঠিন অবস্থায় দানের মূল্য বেশি স্বাভাবিক দানের তুলনায়। অবশ্য শান্তি ও সুখ-সমৃদ্ধির সময়ে করা দান এবং ইসলামি তৎপরতার জন্য দানেরও আলাদা মূল্য রয়েছে। আল্লাহতায়ালা প্রত্যেক প্রকারের দানের জন্য প্রতিদান দেবেন বলে ওয়াদা দিয়েছেন। তবে এটা স্পষ্ট যে, সংকটপূর্ণ সময়ের দান ও জিহাদ বেশি পুরস্কার পাবার যোগ্য।

দানের সওয়াব বর্ণনার পাশাপাশি সূরা হাদিদের ১১ নম্বর আয়াতে মানুষকে দানশীলতার প্রতি উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ইরশাদ হয়েছে, ‘কে সেই ব্যক্তি, যে আল্লাহকে উত্তম ধার দেবে, এরপর তিনি তার জন্যে তা বহুগুণে বাড়িয়ে দেবেন এবং তার জন্যে রয়েছে গৌরবময় পুরস্কার?’

বিজ্ঞাপন

বর্ণিত আয়াতে আল্লাহতায়ালাকে উত্তম ধার দেওয়া বলতে আল্লাহর পথে যে কোনো ধরনের খরচকে বোঝানো হয়েছে। দানশীল মানুষকে কিয়ামতের দিনে গৌরবময় পুরস্কার দেওয়া হবে বলে আল্লাহ ওয়াদা দিয়েছেন। সেদিন ঈমানদার নারী ও পুরুষের নুর তাদের সামনে এবং ডানদিকে দ্রুতগতিতে অগ্রসর হবে। কিয়ামতের দিন মানুষের বিশ্বাস ও তৎপরতা উজ্জ্বল নূর হয়ে প্রকাশ পাবে এবং কুফরি তৎপরতা চরম অন্ধকার হয়ে দেখা দেবে। এ সময় মুমিনদের বেহেশতি বাগানের অধিকারি হওয়ার সুসংবাদ দেবেন ফেরেশতারা। এসব বাগানে প্রবাহমান থাকবে ঝর্ণা। আর এটা খুবই বড় সাফল্য।

কিয়ামতের দিন অজ্ঞতা ও কপটতার মধ্যে ডুবে থাকা মুনাফিকরা একটু আলো পাওয়ার জন্য মুমিনদের কাছে আকুল আবেদন জানাতে থাকবে। জবাবে তাদের বলা হবে, নিজের অতীতের দিকে ফিরে তাকাও এবং সেখান থেকে তথা দুনিয়া থেকে আলো অন্বেষণ করা উচিত ছিল তোমাদের। অর্থাৎ পরকাল নুর অর্জনের জায়গা নয়। নুর দুনিয়াতেই অর্জন করতে হয় ঈমান ও সৎকাজের মাধ্যমে। কিন্তু এখন অনেক দেরি হয়ে গেছে।

এ সময় মুমিন ও মুনাফিকদের মধ্যে দেয়াল তোলা হবে। দেয়ালে থাকবে এমন এক দরজা, যার ভেতর দিকে রহমত আর বাইরে থাকবে শাস্তি। মুনাফিকরা মুমিনদের চিৎকার করে বলবে, আমরা কি তোমাদের সঙ্গে ছিলাম না? আমরা তোমাদের সঙ্গে এক জায়গাতেই তো পাশাপাশি থাকতাম। আজ কেন আমাদের থেকে আলাদা হয়ে গেলে? তোমরা আলাদা হয়ে যাওয়ায় খোদায়ি রহমত তোমাদের ঘিরে ফেলেছে অজস্র ধারায়। অথচ আমাদেরকে শাস্তির মধ্যে ছেড়ে দিলে? তখন বেহেশতি মুমিনরা বলবেন, হ্যাঁ, আমরা একসঙ্গেই ছিলাম। কিন্তু ধর্মবিশ্বাস ও আমলের দিক থেকে আমাদের মধ্যে ছিল বহুযোজন ব্যবধান। তোমাদের কাছে সত্যের কোনো মূল্যই ছিলো না।

ইতিহাসে দেখা গেছে, একটি সমাজ বিশ্বাস ও নৈতিকতার দিক থেকে উন্নত হওয়া সত্ত্বেও সে সমাজে এমন অনেককে দেখা যায় আল্লাহর আদেশ মানে না এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বাধা দেয়। এমন লোককে আল্লাহতায়ালা খুব অপছন্দ করেন। তাদের জন্য পরকালে রয়েছে কঠিনতম শাস্তি।