হজযাত্রীর কোটা পূরণে আরও ৩৫ হাজার প্রাক নিবন্ধিতকে আহ্বান
বেসরকারি হজযাত্রীদের অবশিষ্ট প্রায় সাড়ে ৩৩ হাজার কোটা পূরণে আরও ৩৫ হাজার প্রাক নিবন্ধিতদের আহ্বান করে নতুন সিরিয়াল উন্মুক্ত করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এর ফলে হজের চূড়ান্ত নিবন্ধনের জন্য প্রথম ধাপে ঘোষিত সিরিয়ালের পর ৪৭৯,৮১৬ থেকে ৫১৪,৮৩২ সিরিয়ালের প্রাক নিবন্ধিতরা হজের চূড়ান্ত নিবন্ধনের সুযোগ পাবেন।
আগামী ৪ এপ্রিলের মধ্যে নিবন্ধন সম্পন্ন করার জন্য সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সরকারি ব্যবস্থাপনায়ও হজ কোটা খালি থাকায় নিবন্ধনের সময় ৪ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
তিন দফায় দেওয়া সময়ের মধ্যে বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) পর্যন্ত বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রথম ধাপে উন্মুক্ত করা নির্ধারিত সিরিয়ালের মধ্য থেকে ৮৩ হাজার ৩৮২ জন হজের চূড়ান্ত নিবন্ধন করেন।
গাইড ও মোনাজ্জেমের কোটা বাদ দিয়ে এবার বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীর কোটা এক লাখ ১৬ হাজার ৭৪৬ জন। ফলে এখনো ৩৩ হাজার ৩৬৪ জনের কোটা খালি রয়েছে, যা হজ কোটার প্রায় ৩০ ভাগ।
এই অবশিষ্ট কোটা পূরণে জাতীয় হজ নীতি অনুযায়ী প্রাক নিবন্ধিতদের দ্বিতীয় ধাপে সিরিয়াল উন্মুক্ত করে সুযোগ দেওয়া হলো। এই সিরিয়ালের অনেকে ২০২০ সালের জন্য প্রাক নিবন্ধিত হয়েছেন বলে জানা গেছে। প্রাক নিবন্ধিত হজযাত্রীদের নিবন্ধনের পর দুই বছরের মধ্যে হজে যাওয়ার সুযোগ থাকে। এ হিসেবে যারা এ বছর নিবন্ধন করার পরও হজে যাবেন না, তাদের প্রাক নিবন্ধন বহাল থাকবে এবং তারা চাইলে পরের বছর যেতে পারবেন। তবে যারা ২০১৮ সালে প্রাক নিবন্ধিত হয়েছিলেন তাদের প্রাক নিবন্ধন ২০২০ সালে আর বহাল থাকবে না। তারা এজেন্সির মাধ্যমে সার্ভিস চার্জের টাকা বাদ দিয়ে প্রাক নিবন্ধনের সময় দেওয়া মোয়াল্লেম ফি ফেরতের আবেদন করতে পারবেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজ হজ এজেন্সির মালিক জানিয়েছেন, এ বছর প্রাক নিবন্ধিত হজযাত্রীদের মধ্যে রেকর্ডসংখ্যক হজযাত্রী হজে যাচ্ছেন না। কারণ, প্রাক নিবন্ধনের ক্ষেত্রে কিছু অনিয়ম করা হয়েছিলো। সেগুলো আর সংশোধন করা যাচ্ছে না। যেমন কোট ধরে রাখার জন্য প্রাক নিবন্ধনের সময় জাতীয় পরিচয়পত্র ও টাকা জমা দিয়ে প্রাক নিবন্ধন করা গেছে। কিন্তু ওই নিবন্ধনের বিপরীতে রিপ্লেস করা যাচ্ছে না কড়াকাড়ির কারণে। এ কারণে তিন দফ সময় বাড়িয়েও চূড়ান্ত নিবন্ধনের কোট পূরণ করা সম্ভব হয়নি। তবে আশা করা হচ্ছে, দ্বিতীয় ধাপে উন্মুক্ত করা সিরিয়ালের মধ্য থেকে এবার কোটা পূরণ হয়ে যাবে। তাতেও সাড়ে ৩৩ হাজারের কোটা পূরণ না হলে তৃতীয় ধাপে আরও সিরিয়াল উন্মুক্ত এবং হজযাত্রী স্থানান্তরের সুযোগ দেওয়ার মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত কোটা পূরণ করতে হবে।
এ দিকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় সাত হাজার ১৯৮ জনের মধ্যে নিবন্ধন করেছেন ছয় হাজার ২২২ জন। সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদেরও আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত নিবন্ধনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
উভয় ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের জন্য আগামী ৩ এপ্রিলের মধ্যে জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। ছুটির দিনেও পাসপোর্ট জমা দেওয়া যাবে।
চলতি বছর বাংলাদেশের জন্য হজযাত্রী পাঠানোর কোটা রয়েছে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। এর মধ্যে এক লাখ ২০ হাজার বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং বাকি সাত হাজার ১৯৮ জন সরকারি ব্যবস্থাপনার জন্য নির্ধারিত। এজেন্সিগুলোর গাইড ও মোনাজ্জেমদের বাদ দিয়ে এক লাখ ১৬ হাজার ৭৪৬ জনের নিবন্ধন করা হবে।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধনের জন্য প্রাক নিবন্ধনের ক্রমিক ২২৭৬৫ থেকে পরে প্রাক নিবন্ধিতদের নিবন্ধনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। একইসঙ্গে আগেরবার আহ্বানকৃত ২২৭৬৪ ক্রমিকের মধ্যে যারা কোনো কারণে নিবন্ধন করতে পারেননি তাদের মধ্যে এ বছর যারা হজ পালন করতে আগ্রহী তাদেরও সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
অন্য দিকে বেসরকারি ব্যবস্থাপনার চার লাখ ৭৯ হাজার ৭১ সিরিয়াল থেকে পাঁচ লাখ ১৪ হাজার ৮৩২ সিরিয়াল পর্যন্ত নতুনভাবে উন্মুক্ত করা হয়েছে। এই সিরিয়ালের মধ্যে প্রাক নিবন্ধিত হজযাত্রীর সংখ্যা ৩৫ হাজার ১৬ জন। বেরসকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক নিবন্ধিত হজযাত্রীদের সর্বশেষ সিরিয়াল ছয় লাখ ২০ হাজারের অধিক রয়েছে।
বিমানভাড়ার টাকাসহ প্যাকেজমূল্যের একটি নির্ধারিত অঙ্ক জমা দিয়ে এজেন্সির মাধ্যমে প্রাক নিবন্ধিত হজযাত্রীদের নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হচ্ছে।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১০ আগস্ট (৯ জিলহজ) পবিত্র হজ পালিত হবে।