সালাফি ঘনিষ্ঠতার অভিযোগে জার্মানিতে ইসলামি কিন্ডারগার্টেন বন্ধ
সৌদি আরবের মদদপুষ্ট সালাফি মতবাদ নিয়ে মুসলিম সমাজে এক ধরনের অস্বস্তি রয়েছে। চিন্তা-চেতনার দিক থেকে সালাফি মতবাদকে কট্টর ও উগ্রবাদী বলে মনে করা হয়। এমন অভিযোগ বেশ পুরোনো। এবার সেই অভিযোগের পালে হাওয়া দিলো একটি কিন্ডারগার্টেন বন্ধের ঘটনা।
জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলীয় একটি অঙ্গরাজ্যে অবস্থিত মুসলিম শিশুদের জন্য পরিচালিত একমাত্র কিন্ডারগার্টেন স্কুলটি বন্ধ হতে চলেছে। স্থানীয় আদালত এর জন্য কিন্ডারগার্টেনের পরিচালকদের ‘সালাফিস্ট’ ঘনিষ্ঠতাকে দায়ী করা হয়েছে।
জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জার্মানির রাইনল্যান্ড ফালৎস রাজ্যের মাইনৎস শহরে অবস্থিত ওই কিন্ডারগার্টেনটির নাম আল নূর। সম্প্রতি দেশটির আদালত আগামী ৩০ এপ্রিল থেকে ওই কিন্ডারগার্টেন বন্ধ করে দেওয়ার রায় দিয়েছে।
সম্প্রতি আল নূর নামের ওই কিন্ডারগার্টেনটি বন্ধের দাবি জানিয়ে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল। অভিযোগ স্কুলটির পরিচালনাকারী সংস্থা ‘আরব নিল রাইন’ সালাফিস্ট মতাদর্শীদের ঘনিষ্ঠ।
তাছাড়া স্কুলের ভেতর নাকি এমন সব বইপত্র আছে যা শিশুদের জার্মান সমাজে মিশতে সমস্যার জন্ম দেয়। আদালত স্থানীয় কর্তৃপক্ষের এসব অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে সম্প্রতি স্কুলটি বন্ধের রায় দিয়েছে।
তবে আদালতের রায় সত্ত্বেও সালাফি ঘনিষ্ঠ হওয়ার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন ‘আরব নিল রাইন’ সংস্থার মুখপাত্র সামি এল হাগ্রাসি। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন করবেন তারা। তিনি বলেন, ‘আমরা জার্মান সংবিধান মানি, সম্মান করি। কিন্তু মিথ্যা অপবাদ মানতে রাজি নই। আমরা সালাফি নই।’
স্কুল বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হলেও তবে আপাতত স্কুলে অধ্যয়নরত শিশুদের বাবা-মায়েদের সময় দেওয়া হয়েছে যেন তারা বাচ্চাদের জন্য বিকল্প কোনো স্কুলের সন্ধান করতে পারেন।
উল্লেখ্য, জার্মানিতে উগ্রপন্থী সালাফি আদর্শের অনুসারী ইসলামি সংগঠন ‘দ্য ট্রু রিলিজিয়ন’কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে। এই সংগঠনকে সৌদি আরব, কুয়েত ও কাতারের বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের পক্ষ থেকে আর্থিকভাবে সহযোগিতার অভিযোগ উঠেছিল।
২০০৫ সালে গঠিত সংগঠনটিকে জার্মানিতে অনেক আগে থেকে নিষিদ্ধের দাবি উঠলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এত দিন তা আমলে নেয়নি।
অন্যদিকে জার্মানিতে ২০০১ সালে দ্য খিলাফত স্টেট নামের আরেকটি কট্টরপন্থী ইসলামি সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।