নফল হজের চেয়ে ঋণ পরিশোধ গুরুত্বপূর্ণ

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

মক্কা শরীফ, ছবি: সংগৃহীত

মক্কা শরীফ, ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বের মুসলমানদের মাঝে ইসলামি চেতনা, ঈমানি জযবা, ঐক্য ও সংহতি স্থাপনের লক্ষ্যে প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলিম নর-নারী মুমিন ব্যক্তির ওপর হজ জীবনে একবার ফরজ করা হয়েছে।

হজ শব্দটি আরবি। শাব্দিক অর্থ ইচ্ছা ও অভিপ্রায় করা, সাক্ষাত করা ও পবিত্র বস্তুর প্রতি ইচ্ছাপোষণ করা।

বিজ্ঞাপন

ইসলামি পরিভাষায়, ইসলামের একটি মহান বিধান আদায় করার নিমিত্তে আল্লাহতায়ালার নৈকট্য লাভের আশায় কোরআন-সুন্নাহ অনুসারে নির্দিষ্ট কিছু কাজ নির্দিষ্ট সময়ে বায়তুল্লাহিল হারামে সম্পাদন করাকে হজ বলা হয়।

আগেই বলেছি, হজ অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ ইবাদত। হজের ফজিলত অনেক। তার সওয়াব ও প্রতিদান অনেক। আল্লাহতায়ালা হজ ফরজ করেছেন জীবনে একবার। যদি কোনো ব্যক্তি একবার হজপালন করে এই ফরজ আদায় করে থাকেন তাহলে পরবর্তীতে নফল হজ আদায়ের সময় দেখতে হবে যে, নফল হজ আদায়ের জন্য কোনো ফরজ বা ফরজ পর্যায়ের কর্তব্য বিসর্জন দিয়ে যেতে হচ্ছে কি না। যেমন, নফল হজ করতে চাচ্ছেন এমন কেউ ঋণগ্রস্ত আছেন। এদিকে ঋণ পরিশোধের মেয়াদ পেরিয়ে গেছে কিংবা ঋণদাতা ঋণ চাচ্ছে। তাহলে তার প্রথম দায়িত্ব হচ্ছে ঋণ আদায় করা। তা না করে তিনি নফল হজে চলে যাওয়ায় ঋণদাতার যে কষ্ট ও ভোগান্তি হবে তাতে সওয়াবের পরিবর্তে অন্যদিক থেকে গোনাহর পাল্লা ভারি হবে।

বিজ্ঞাপন

একইভাবে ঋণের মতো অন্যান্য বহু পাওনাদির বিষয়েও মনোযোগ দিতে হবে। অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক ও বিত্তবানকে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের বেতন-বোনাস বকেয়া রেখে এবং তাদের কষ্টের মধ্যে ফেলে রেখে তারা নফল হজ কিংবা উমরায় চলে যান। এটাও কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

তদ্রূপ মিথ্যা বলে হজ করার বিষয়টিও এমন। ধরুন, আপনি ফরজ হজ পালন করেছেন। এখন নফল হজ করতে চান। নফল হজ তো নফলই, ফরজ-ওয়াজিব নয়। অপরদিকে মিথ্যা বলা হারাম। মিথ্যা বলে নফল হজ আদায় করা জায়েয নেই। অথচ দেখা যায়, কেউ কেউ নফল হজ আদায়ের জন্য নানা পথ ও পদ্ধতি অবলম্বন করেন, যার সঙ্গে বাস্তবতার মিল থাকে না। অনেকে কিছু টাকা বাঁচানোর জন্য নতুন পাসপোর্ট বানিয়ে হজের সুযোগ নেন। এভাবে মিথ্যা বলে নফল হজ করলে এতে বরং গোনাহ হবে, পরকালে তাকে এ জন্য শাস্তি পেতে হবে।

সুতরাং অবধারিত গোনাহের কাজ করে কেউ হজ করতে গেলে তার কী পরিমাণ সওয়াব হবে, তা সহজেই অনুমেয়। আমাদের সমাজে এসব ক্ষেত্রে সীমাহীন বাড়াবাড়ি আচরণ চালু আছে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।