প্রাণীর আকৃতিতে শবে বরাতের খাবার বানানো নাজায়েজ
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দেখা যায়, শবে বরাত উপলক্ষে মিষ্টান্ন দ্বারা বিভিন্ন প্রকার প্রাণীর (মাছ, গুইসাপ, কুমির, ভোদর) আকৃতির পাউরুটি, কেক, সন্দেশ ইত্যাদি বানাতে। এগুলোকে আবার শবে বরাতের বিশেষ খাবার বলে গণ্য করা হয়।
মনে রাখতে হবে, শবে বরাত উপলক্ষে খাবারের এমন আয়োজন এবং প্রাণীর আকৃতিতে তা তৈরির প্রচলন সম্পূর্ণ নাজায়েজ।
এমন আয়োজনে ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে দু’টি আপত্তিকর বিষয় রয়েছে। এক. কোনো প্রাণীর প্রতিকৃতি তৈরি করা হারাম ও কবিরা গোনাহ। হাদিস শরিফে এ ব্যাপারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা এসেছে এবং প্রতিকৃতি প্রস্তুতকারীর জন্য আখেরাতে কঠিন শাস্তির কথা ঘোষণা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, আমি হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, প্রতিকৃতি প্রস্তুতকারীরা আল্লাহতায়ালার কাছে সবচেয়ে কঠিন আজাবের মুখোমুখি হবে। -সহিহ বোখারি: ২/৮৮০
অন্য আরেক হাদিসে এসেছে, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লানত (অভিশাপ) করেছেন, সুদ ভক্ষণকারী ও সুদ প্রদানকারীর ওপর, উল্কি অঙ্কন কারী নারী ও উল্কি গ্রহণকারী নারীর ওপর এবং প্রতিকৃতি প্রস্তুতকারীর ওপর। -সহিহ বোখারি: ২/৮৮১
আরেক হাদিসে আরও বর্ণিত হয়েছে, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ফেরেশতারা ওই ঘরে প্রবেশ করে না যাতে মূর্তি বা ছবি রয়েছে। -সহিহ মুসলিম: ২/২১১২
দুই. শবে বরাতকে উপলক্ষ করে এ ধরনের খাবারের আয়োজন করাকে নেকের কাজ মনে করা হয়, যা সুস্পষ্ট বিদআত ও কুসংস্কার। অতএব শবে বরাত বা অন্য কোনো উপলক্ষে প্রাণীর আকৃতিতে কোনো ধরনের খাবার তৈরি করা হারাম। এ থেকে বিরত থাকা সব মুসলমানের জন্য জরুরি। আর এ ধরনের প্রাণীর আকৃতি সম্বলিত খাবারের ক্রয়-বিক্রয়ও জায়েজ নেই।
কেননা, এর দ্বারা ওই নাজায়েজ কাজে প্রস্তুতকারীদের সহযোগিতা করা হয়। -সহিহ বোখারি: ২/৮৮০-৮৮১