রোজাদারের চিকিৎসা সংক্রান্ত কিছু মাসয়ালা

  • মুফতি মাহফূযুল হক, অতিথি লেখক, ইসলাম, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

রোজাদারের চিকিৎসা সংক্রান্ত কিছু মাসয়ালা, ছবি: সংগৃহীত

রোজাদারের চিকিৎসা সংক্রান্ত কিছু মাসয়ালা, ছবি: সংগৃহীত

রোজা ভাঙার কারণের সঙ্গে চিকিৎসার কিছু পদ্ধতির সম্পর্ক খুবই স্পষ্ট, যা সবাই বোঝে। কিন্তু চিকিৎসার এমন কিছু পদ্ধতি আছে যার সঙ্গে রোজার সম্পর্ক বেশ জটিল। চিকিৎসার এ জটিল পদ্ধতিগুলো আধুনিককালে উদ্ভাবিত হওয়ায় কোরআন-হাদিসে এমনকি ফিকহ শাস্ত্রের প্রাচীন প্রামাণ্য গ্রন্থাবলীতে এগুলোর হুকুম সরাসরি নেই। কিন্তু মূলনীতি দেওয়া আছে।

সেসব মূলনীতির আলোকে আধুনিক পদ্ধতিগুলোকে বিশ্লেষণ করে সেগুলোর হুকুম নির্ণয় করেছেন নিকটতম সময়ের অনেক প্রথিতযশা ফকিহ ও ফিকহি সংস্থা। তারা এ বিষয়ের ওপর স্বতন্ত্র গ্রন্থও রচনা করেছেন। যেমন ফিকহুন নাওয়াযিল, আলমাওসুআতুত তিব্বিয়্যিা আলফিকিহিয়্যা, আলাতে জাদিদা কে শারয়ি আহকাম ইত্যাদি।

বিজ্ঞাপন

মারকাযুদ দাওয়াহর শিক্ষক মাওলানা মুহাম্মাদ ইয়াহইয়া ‘মাহে রমযানের সওগাত’ নামক পুস্তিকাতে উপরোক্ত উৎসগ্রন্থসমূহ থেকে চিকিৎসার আধুনিক পদ্ধতিগুলোর হুকুম সংকলন করেছেন।

সাধারণ পাঠকদের সুবিধা বিবেচনা করে উক্ত পুস্তিকার আলোকে চিকিৎসা সংক্রান্ত রোজার মাসয়ালাগুলো সংক্ষেপে উল্লেখ করা হলো-

বিজ্ঞাপন

রোজা অবস্থায় কানে তেল, ড্রপ বা যেকোনো ঔষধ ব্যবহার করা যাবে। এর দ্বারা রোজা ভাঙবে না। তদ্রুপ কানে পানি ঢোকলেও রোজা ভাঙবে না।

নাকে ড্রপ, স্প্রে ইত্যাদি যেকোনো কিছু ব্যবহারের পর যদি তা গলায় পৌঁছে বা এগুলোর স্বাদ অনুভূত হয় তাহলে রোজা ভাঙবে। অন্যথায় রোজা ভাঙবে না।

চোখে ড্রপ, সুরমা, মলম ইত্যাদি ব্যবহার করলে রোজা ভাঙবে না। যদিও এগুলোর স্বাদ অনুভূত হয় তবুও রোজা ভাঙবে না।

ইনহেলার ব্যবহার করলে রোজা ভাঙবে। যদি রোজা অবস্থায় এটা ব্যবহারের একান্তই প্রয়োজন পড়ে তাহলে তা ব্যবহার করবে আর পরে এ রোজার কাজা করবে। তবে ব্যবহারের পর সুস্থ থাকলে বাকি দিন অনাহারেই কাটাতে হবে।

পুরুষ বা মহিলার প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে কোনো ঔষধ বা পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্র প্রবেশ করালে রোজা ভাঙবে না। এমনকি উক্ত যন্ত্রে কোনো পিচ্ছিল বা তরল পদার্থ লাগানো থাকলেও রোজা ভাঙবে না।

মলদ্বার দিয়ে কোনো ঔষধ প্রবেশ করালে রোজা ভাঙবে।

রক্ত দিলে বা নিলে কোনোটাতেই রোজা ভাঙবে না। তাই রোজা অবস্থায় ডায়ালাইসিস করা যাবে। তবে রক্ত দেওয়ার কারণে অধিক দুর্বল হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকলে রোজা অবস্থায় রক্ত দেওয়া মাকরুহ।

ইঞ্জেকশন, ইনসুলিন ও স্যালাইন নিলে রোজা ভাঙবে না। তবে গ্লুকোজ স্যালাইন খাদ্য-পানির কাজ দেয়; রোজা অবস্থায় মারাত্মক অসুস্থতা ব্যতীত তা নেওয়া মাকরুহ।