এবার সরকারি খরচে হজে যাচ্ছেন ১৭৪ জন

  • মুফতি এনায়েতুল্লাহ, বিভাগীয় সম্পাদক, ইসলাম, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র মক্কা শরিফ, ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র মক্কা শরিফ, ছবি: সংগৃহীত

প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে সরকারি খরচে বেশকিছু ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে হজপালনের জন্য সৌদি আরব পাঠানো হয়। সে ধারাবাহিকতায় এবারও ১৭৪ জনকে হজে পাঠানো হচ্ছে। ধর্মপ্রাণ বিবেচনায় তাদের রাষ্ট্রীয় খরচে হজ করতে পাঠাচ্ছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

সোমবার (১ জুলাই) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব (হজ) এস এম মনিরুজ্জামান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে সরকারি খরচে হজপালনের জন্য নির্বাচিত ১৭৪ ব্যক্তির নাম জানা গেছে। হজ প্যাকেজ-২ এর আওতায় নির্বাচিতরা আগামী ২৯ জুলাই (ফ্লাইটপ্রাপ্তি সাপেক্ষে) সৌদি আরব যাবেন ও ১০ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরবেন।

বিজ্ঞাপন

হজ প্যাকেজ-২-এর অধীনে খরচ পড়বে সব মিলিয়ে ৩ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। সে হিসেবে ১৭৪ জনের হজপালন বাবদ এ বছর সরকারের খরচ হবে ৫ কোটি ৯৬ লাখ ৫৬ হাজার টাকা।

তালিকায় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, গণভবন, সুধাসদন ও সংসদ সচিবালয়ে কর্মরত বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীর পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, জাসদ নেতা, শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, পীর, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও প্রশাসনের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের নাম রয়েছে। তালিকায় ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নির্বাচনী এলাকার লোকজন ছাড়াও বিভিন্ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের নাম রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, তাদের ভ্রমণ ব্যয় চলতি অর্থবছরে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ‘বাংলাদেশের বাইরে হজ বাবদ ব্যয়’ খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে বহন করা হবে। খাবার খরচ ৩০ হাজার টাকা ছাড়া অন্য কোনো ব্যয় অথবা ভাতা প্রাপ্য হবেন না। খাবার খরচের ৩০ হাজার টাকার মধ্যে মক্কার খাবার খরচ বাবদ ৯ হাজার ৪৫০ টাকা কেটে রেখে অন্য ২০ হাজার ৫৫০ টাকা ঢাকার আশকোনা হজ অফিস থেকে নগদ প্রদান করা হবে।

তালিকা দেখতে ক্লিক করুন

তালিকায় থাকা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সৌদি আরবে অবস্থানকালে নিজ নিজ কর্মস্থল থেকে বাংলাদেশের স্থানীয় মুদ্রায় বেতনভাতা প্রাপ্য হবেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, রাষ্ট্রীয় খরচে হজপালনের জন্য অনুমোদিতদের পাসপোর্টের মেয়াদ ২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত থাকতে হবে। তালিকায় থাকা কেউ বিগত বছরে রাষ্ট্রীয় খরচে হজপালন করে থাকলে তার নাম স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল বলে গণ্য হবে। যে সব ব্যক্তি বিগত ২০১৬, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে হজপালন করেছেন অথবা ভিসা প্রাপ্ত হয়েছিলেন কিন্তু হজে যাননি এমন কেউ সরকারি খরচে হজপালনের জন্য মনোনীত হয়ে থাকলে, তাদের জন্য সৌদি সরকার কর্তৃক আরোপিত ভ্যাটসহ অতিরিক্ত চার্জ ২ হাজার ১০০ সৌদি রিয়াল সমপরিমাণ অর্থ পরিশোধ করতে হবে।

২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত সরকারি খরচে কোনো হজযাত্রী পাঠানো হয়নি। মন্ত্রিসভার অনুমোদন নিয়ে জাতীয় হজ ও ওমরা নীতি অনুযায়ী ২০১৪ সাল থেকে সরকারি খরচে হজে পাঠানো হচ্ছে।

গত চার বছরে রাষ্ট্রীয় খরচে হজে গেছেন ৯৯৯ জন। সংসদীয় কমিটিতে উপস্থাপিত এক প্রতিবেদনের তথ্য মতে, রাষ্ট্রীয় খরচে ২০১৭ সালে হজে গেছেন ৩২০ জন, ২০১৬ সালে ২৮৩, ২০১৫ সালে ২৬৮ ও ২০১৪ সালে ১২৮ জন।

সরকারি খরচে হজপালনে মনোনীতদের কীভাবে নির্বাচন করা হয় এ বিষয়ে আলাদা কোনো নীতিমালা নেই। অভিযোগ রয়েছে, নীতিমালা না থাকায় বরাবরই তালিকাগুলো হয় অনেকটা তদবিরের জোরে।

তবে রাষ্ট্রীয় খরচে হজ পালন প্রসঙ্গে জাতীয় হজ ও ওমরা নীতিমালায় বলা হয়েছে, ‘জাতীয় হজ ও ওমরাহ নীতিতে যা কিছুই উল্লেখ থাকুক না কেন, মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী অথবা সরকার কর্তৃক মনোনীত একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে সরকার ঘোষিত সর্বনিম্ন প্যাকেজমূল্যে সরকারি অর্থে পবিত্র হজপালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরব প্রেরণ করা যাবে। এ দলের সদস্যগণ সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রী হিসেবে সরকারের সর্বনিম্ন প্যাকেজমূল্যে উল্লেখিত সেবাসমূহ প্রাপ্য হবেন। তারা দৈনিক ভাতা বা অন্যান্য আর্থিক সুবিধাদি প্রাপ্য হবেন না।’