সংখ্যালঘুর সমানাধিকার ও সম্মানের শিক্ষা দেয় ইসলাম



ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ধর্মীয়, জাতিগত, ভাষাগত সংখ্যালঘুর মানবাধিকারের দাবিতে সোচ্চার বিশ্ব সম্প্রদায় আইনগত ও সামরিক-বেসামরিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেও বিশ্বব্যাপী নিপীড়িত মানবতার আহাজারি থামাতে পারছে না। বরং ইসলামে সংখ্যালঘুর অধিকার সংরক্ষণের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত থাকার পরেও মুসলিমরাই হচ্ছে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত। ‘ইসলামে সংখ্যালঘুর অধিকার’ সম্পর্কে ঐতিহাসিক পর্যালোচনা: পর্ব- ২

সামান্যতম সংখ্যালঘু উৎপীড়নের আশঙ্কাকা এড়ানোর জন্য মুসলমানের পক্ষে জিম্মির জমি ক্রয় করা নিষিদ্ধ করা হয়েছিল এবং এমন ব্যবস্থা করা হয়েছিল যে- ইমাম, খলিফা, সুলতান বা সাধারণ মুসলমান, কেউই জিম্মিকে তার সম্পত্তি থেকে বেদখল করতে পারবে না। আইনের চোখে মুসলমান আর জিম্মি ছিল সম্পূর্ণ সমান।

খলিফা হজরত আলী (রা.) বলেছেন, ‘তাদের রক্ত আর আমাদের রক্ত একই রকম।’ সমস্ত আধুনিক সরকার, এমন কি সবচেয়ে সভ্য সরকারগুলোও সমানাধিকার ও সংখ্যালঘু নীতির রক্ষার্থে ইসলাম ও এর ভিত্তিতে পরিচালিত শাসনকে তাদের আদর্শ করতে পারে। কারণ, তখন অপরাধের শাস্তির ব্যাপারে শাসক ও শাসিতের মধ্যে কোনো পার্থক্য করা হত না। ইসলামের আইন এই যে, কোনো মুসলমান একজন জিম্মিকে হত্যা করলে তার যা শাস্তি, জিম্মি কোনো মুসলমানকে হত্যা করলে তারও সেই একই শাস্তি।

প্রসঙ্গত খলিফা হজরত ওমর (রা.)-এর আমলের একটি ঘটনার উল্লেখ করা যেতে পারে। বকর ইবনে ওয়াইল নামে জনৈক মুসলমান হাইরূত নামে একজন খ্রিস্টানকে হত্যা করে। বিচার শেষে খলিফা আদেশ দেন, ‘হত্যাকারীকে নিহত ব্যক্তির উত্তরাধিকারীদের হাতে সমর্পণ করা হোক।’ অপরাধীকে হাইরূতের উত্তরাধিকারী হোনাইনের হাতে সমর্পণ করা হলে বদলা হিসাবে হোনাইন তাকে হত্যা করে।

পরবর্তীতে প্রসিদ্ধ হজরত ওমর ইবনে আবদুল আজীজ (রহ.)-এর সময়েও অনুরূপ একটি ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। নবী করিম (সা.), তার সাহাবি (রা.) এবং পরবর্তী উত্তরাধিকারীদের (রহ.) কর্ম ও আচরণের মধ্যে অমুসলমান ও সংখ্যালঘুদের প্রতি সমানাধিকার ও সম্মানজনক বিধানের শিক্ষাই লক্ষ্য করা যায়।

অমুসলমান ও সংখ্যলঘুদের প্রতি সহনশীল ও উদার ব্যবহারের উজ্জ্বল আরেক প্রমাণ হল, অমুসলমান ও সংখ্যলঘু জিম্মিগণ মুসলমানদের অসিয়তনামার নির্বাহক নিযুক্ত হতে পারতেন। তারা মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ কর্তা বা রেক্টর নিযুক্ত হতে পারতেন। আর ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের প্রয়োজন না থাকলে ধর্মস্বত্বে তত্ত্বাবধায়কের পদ পূরণ করতে পারতেন এবং কোনো সুযোগ্য বা গুণবাণ অমুসলমান মারা গেলে মুসলমানরা দলেবলে তার শেষকৃত্যে উপস্থিত থেকে অংশগ্রহণ করতেন। ইসলামের অধীনে প্রতিষ্ঠিত এমন অধিকার, মর্যাদা ও সম্মানের উদার উদাহরণ পৃথিবীর অন্য ধর্ম ও আদর্শের শাসনে শুধু বিরলই নয়; অকল্পনীয়ও বটে।

যদিও ইসলামের প্রাথমিক পর্যায়ে সুস্পষ্ট কারণবশতঃ অমুসলমানদেরকে সামরিক নেতৃত্বে দেওয়া হয়নি; তথাপি অন্যান্য উচ্চবেতনযুক্ত ও দায়িত্বপূর্ণ পদে তারা মুসলমানদের সঙ্গে সম-অধিকারের ভিত্তিতে নিয়োগ লাভ করতেন। এই সমতা কেবল নীতিরই ব্যাপার থাকেনি; বাস্তবায়িতও হয়েছিল। কারণ ইসলামের সূচনাকালেই হিজরি প্রথম শতকে দেখতে পাওয়া যায় যে, খ্রিস্টান-ইহুদি-ম্যাজিয়ানরা গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় পদে নিযুক্ত হয়েছেন। প্রাথমিক শাসকগণ প্রজাদের মধ্যে কোনোরূপ ধর্মভিত্তিক পার্থক্য স্বীকার করেননি। আর পরবর্তী শাসকগণও অতি যত্ন সহকারে অগ্রণীদের উদাহরণ অনুসরণ করেছেন।

মোদ্দা কথায়, ইসলামী দেশগুলোতে যদি অমুসলমান-সংখ্যালঘুদের আচরণের সঙ্গে ইউরোপীয় সরকারগুলোর অধীনে অখ্রিস্টানদের প্রতি ব্যবহারের তুলনা করা হয়, তবে সকল বিবেচনায় সমানাধিকার, মানবতা আর মহত্ত্বের পাল্লা ইসলামের দিকেই ঝুঁকবে। আরবের বাইরেও ইসলামী শাসন বা মুসলিম প্রশাসনে অভিন্ন সমানাধিকারের বিবরণ দেখা যায় অমুসলমানদের প্রতি আচরণের ক্ষেত্রে।

দিল্লি¬র মুঘল সম্রাটদের অধীনে অমুসলিম হিন্দুরা সেনাবাহিনীর অধিনায়ক হতেন; প্রাদেশিক শাসনকর্তা নিযুক্ত হতেন; সম্রাটের মন্ত্রী পরিষদ ও পরামর্শ সভায় সদস্যরূপে অন্তর্ভূক্ত হতেন। সুলতানী আমলের বাংলায় অমুসলমান হিন্দুরা ভাষা-শিল্প-সাহিত্য-ধর্ম প্রসারে রাষ্ট্রীয় পূর্ণ সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতা পেয়ে নবজন্ম লাভ করেন। রাষ্ট্রীয় উচ্চপদে তাদের অবাধ বিচরণ বর্তমানকালের তথাকথিক সমানাধিকারের প্রবক্তাদের কাছেও ভাবনাতীত বিষয় বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।

আজকে, এই একবিংশ শতাব্দীতেও কেউই জোর গলায় বলতে পারবে না যে, ইউরোপ-আমেরিকার পশ্চিমা আদর্শের অধীনস্থ মিশ্র জাতি ও ধর্ম বিশিষ্ট দেশগুলোতে বিশ্বাস, ধর্ম, বর্ণ, অঞ্চল, সংস্কৃতি ও বংশের ভিত্তিতে কোনো পার্থক্য নেই!

প্রসঙ্গত ইসলামে রাষ্ট্র ব্যবস্থার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে, স্রষ্টা মানুষের মধ্যে যেসব গুণাবলী দেখতে চান সেগুলোর প্রচলন, প্রতিপালন ও বিকাশ এবং তিনি যেগুলোকে ত্রুটিপূর্ণ মনে করেন সেগুলোতে বাধা দেওয়া ও দূর করা। ফলে ইসলামী রাষ্ট্র কোনো রাজনৈতিক প্রশাসনের হাতিয়ারে পরিণত হবে না এবং কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর ইচ্ছাপূরণের মাধ্যম হবে না। ইসলামে রাষ্ট্র কাঠামোয় ব্যক্তি ও রাষ্ট্র সম্মিলিতভাবে ঐশী বিধান অনুযায়ী ধার্মিকতা, নৈতিক উৎকর্ষতা, সৌন্দর্য, সচ্চরিত্রতা, সফলতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্মৃদ্ধির আদর্শ-স্থানীয় গুণসমূহ অর্জনের প্রয়াস চালাবে এবং একইসঙ্গে সকল ধরনের অন্যায়, অসভ্যতা, দুর্নীতি, ভ্রান্তি, অসহিষ্ণুতা ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে লড়াই করবে। মানবতা ও মানব কল্যাণের জন্য হঠকারিতামুক্ত টেকসই আর স্থায়ী পরিকল্পনা ও কার্যক্রম ইসলামী ব্যবস্থার প্রধান অবলম্বন।

প্রকৃতিগতভাবে মানুষ স্বাধীনরূপে জন্মগ্রহণ করে এবং নিজের খুশি অনুযায়ী বেপরোয়াভাবে যা কিছু ইচ্ছা করতে চায়। দার্শনিক নিৎসরে মতে- ‘একটি শিশুকে জন্মের পর পরই যদি মানুষের তত্ত্বাবধান ছাড়া জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং সে যদি জীবজন্তুর মাধ্যমে লালিত-পালিত হয়, তাহলে সে তার বাকী জীবন জন্তুর মতোই আচরণ করবে। তাকে দেখতে অন্যান্য মানুষের মতো মনে হলেও সে কখনোই মানবিক আচরণ, গুণাবলী ও মর্যাদাবোধ পাবে না। সে কেবলমাত্র একটি সামাজিক ব্যবস্থায় অন্য মানুষের সঙ্গে মিশেই তার মানবিক সম্ভাবনা ও সুযোগকে বিকশিত ও বাস্তবায়িত করতে পারবে।’

নিৎসের বক্তব্যের সঙ্গে বর্তমান কালের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হলে দেখা যাবে, এখনও চরম শাস্তি বলতে কাউকে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন ও নিঃসঙ্গ করা উল্লেখযোগ্য। এটাই ভয়ঙ্কর শাস্তি হিসাবে যথেষ্ট, যদি কাউকে কারারুদ্ধ করা হয়, নিঃসঙ্গভাবে আটকে রাখা হয়, এমনকি বিলাস বহুল অবস্থাতে। নিঃসঙ্গভাবে থাকার আরেকটি প্রতিফলন হচ্ছে কবরের ভীতি।

ইসলাম সম্মিলিত সামাজিক জীবন ও মূল্যবোধে বিশ্বাস করে। যে জীবন ও সমাজে থাকবে সম্প্রীতি, শান্তি ও ন্যায়বিচার। এ সব শর্ত মানুষকে তার শারীরিক অস্তিত্বের ঊর্ধ্বে উঠে চিন্তা করতে এবং পরকালের পরবর্তী জীবন সম্পর্কে প্রস্তুতি নিতে উদ্বুদ্ধ করে। ফলে হজ, নামাজ, জাকাত, জিহাদ, সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ ইত্যাদি ইবাদত বা প্রার্থণা ব্যক্তিগত হলেও চূড়ান্ত বিচারে সুন্দর মানুষের বিকাশের মাধ্যমে সমাজ ও রাষ্ট্রকে সুন্দর করার কাজ হিসাবেই চিহ্নিত এবং সমাজ ও রাষ্ট্রকে সহায়তা করারই নামান্তর। ব্যক্তিবর্গের মন ও মানসিকতা এমন হলে পারস্পরিক সহমর্মিতা ও সমানাধিকারের দায়িত্ববোধ জাগ্রত ও প্রতিষ্ঠিত হতে বাধ্য। এভাবেই নিজের, অন্য মানুষের ও সমাজের প্রতি কর্তব্যের ভিত্তিতে ইসলাম মানুষের জন্য সার্বজনীন মানবাধিকারের রূপরেখা প্রণয়ন করেছে এবং তা সকল পরিস্থিতিতে অনুসরণ করতে হবে। এ সকল অধিকার ও দায়িত্ববোধ মুসলমান ও অমুসলমান; সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘু সকলের জন্যই সমভাবে প্রযোজ্য।

আরও পড়ুন: পর্ব-১: ইসলামে বর্ণবাদ ও বর্ণবৈষম্য বলে কিছু নেই

   

রিজিক বৃদ্ধির ৪ আমল



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
কোরআন-হাদিসে রিজিক বৃদ্ধির বিভিন্ন আমলের কথা বর্ণিত হয়েছে, ছবি : সংগৃহীত

কোরআন-হাদিসে রিজিক বৃদ্ধির বিভিন্ন আমলের কথা বর্ণিত হয়েছে, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মুমিন মাত্রই বিশ্বাস করেন যে, তার আয়-উপার্জন, জীবন-মৃত্যু এবং সৌভাগ্য-দুর্ভাগ্য ইত্যাদি র্নিধারণ হয়ে যায়; যখন তিনি মায়ের উদরে থাকেন। আর এসব তিনি লাভ করেন তার জন্য বরাদ্দ উপায়-উপকরণগুলোর মাধ্যমে। তাই আমাদের কর্তব্য হলো- হাত গুটিয়ে বসে না থেকে এর জন্য র্নিধারিত উপায়-উপকরণ সংগ্রহে চেষ্টা করা। যেমন চাষাবাদ, ব্যবসায়-বাণিজ্য, শিল্প-চারু, চাকরি-বাকরি বা অন্য কিছু।

আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তিনিই তো তোমাদের জন্য জমিনকে সুগম করে দিয়েছেন, কাজেই তোমরা এর পথে প্রান্তরে বিচরণ করো এবং তার রিজিক থেকে তোমরা আহার করো। আর তার নিকটই পুনরুত্থান।’ -সুরা আল মুলক : ১৫

কোরআন-হাদিসে রিজিক বৃদ্ধির বিভিন্ন আমল ও উপায়ের কথা বর্ণিত হয়েছে। সেখান থেকে ৪টি আমলের কথা উল্লেখ করা হলো-

তওবা-ইস্তেগফার : তওবা-ইস্তিগফার করার মাধ্যমে বান্দার রিজিক বাড়ে। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘আমি তাদের বলেছি, নিজ প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তিনি অতিশয় ক্ষমাশীল। তিনি আকাশ থেকে তোমাদের ওপর প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন এবং তোমাদের ধনসম্পদ ও সন্তানসন্ততিতে উন্নতি দান করবেন এবং তোমাদের বাগবাগিচা এবং নদীনালা দান করবেন।’ -সুরা নুহ : ১০-১২

হাদিসে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি লাগাতার তওবা-ইস্তেগফার করবে; আল্লাহতায়ালা সংকট থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন; সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন।’ -সুনানে আবু দাউদ : ১৫১৮

পরহেজগারি অবলম্বন এবং আল্লার ওপর ভরসা : যেসব আমলে রিজিকে প্রবৃদ্ধি ঘটে, তার মধ্যে তাকওয়া-পরহেজগারি অবলম্বন এবং তাওয়াক্কুল বা আল্লাহর প্রতি ভরসা রাখা অন্যতম। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যে আল্লাহর তাকওয়া অর্জন করবে, আল্লাহ তার জন্য উত্তরণের পথ বের করে দেবেন এবং তিনি তাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দান করবেন, যার কল্পনাও সে করতে পারবে না।’ -সুরা সাদ : ৩৫

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি যথার্থভাবে ভরসা রাখো। তিনি তোমাদের সেভাবে রিজিক দান করবেন, যেভাবে তিনি পাখিদের দান করে থাকেন। পাখিরা সকালে ক্ষুধার্ত অবস্থায় (খালি পেটে) বাসা থেকে বের হয় এবং সন্ধ্যায় উদর পূর্ণ করে বাসায় ফেরে।’ -জামে তিরমিজি : ২৩৪৪

সময়মতো নামাজ আদায় এবং ইবাদতের জন্য নিজেকে মুক্ত করা : সময়মতো দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করলে রিজিক বাড়ে। নামাজ আদায় করার ফাঁকে ফাঁকে কাজ ও ব্যবসা–বাণিজ্য করতে হবে; কাজ ও ব্যবসা–বাণিজ্য করার ফাঁকে ফাঁকে নামাজ নয়। একই সঙ্গে আল্লাহর ইবাদত পালনে নিজেকে ঝামেলামুক্ত করতে হবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আপনি পরিবার-পরিজনকে নামাজ আদায়ের আদেশ দিন এবং নিজেও তার ওপর অটল থাকুন। আমি আপনার কাছে কোনো রিজিক চাই না। আমিই আপনাকে রিজিক দিই। আর মুত্তাকিদের জন্যই শুভ পরিণাম।’ -সুরা ত্বহা : ১৩২

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে আদম সন্তান! আমার ইবাদতের জন্য তুমি তোমার অন্তরকে খালি করো। আমি তোমার অন্তরকে অভাবমুক্ত হিসেবে পরিপূর্ণ করে দেব এবং তোমার দরিদ্র্যের পথ দূর করে দেব। আর যদি তা না করো, আমি তোমার হাত (দুনিয়ার) ব্যস্ততায় পূর্ণ করে দেবো এবং তোমার অভাব মেটাব না।’ -জামে তিরমিজি : ২৪৬৬

রিজিক অর্জনের চেষ্টায় থাকা : পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘অতঃপর নামাজ সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে (জমিনে) ছড়িয়ে পড়ো আর আল্লাহর অনুগ্রহ (রিজিক) সন্ধান করো এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করো; যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ -সুরা জুমা : ১০

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যদি রশি নিয়ে সকালবেলা পাহাড়ের দিকে বের হয়। এরপর লাকড়ি সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে এবং দানও করে। মানুষের কাছে হাত পাতার চেয়ে তার জন্য এটা উত্তম।’ -সহিহ বোখারি : ১৪৮০

;

গরমে মুমিনের আমল



মুফতি উমর ফারুক আশিকী
গরমে পশুপাখির প্রতি সদয় আচরণ কাম্য, ছবি : সংগৃহীত

গরমে পশুপাখির প্রতি সদয় আচরণ কাম্য, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘জাহান্নাম তার রবের কাছে অভিযোগ করে বলে, হে রব! আমার এক অংশ অন্য অংশকে খেয়ে ফেলছে। আল্লাহতায়ালা তখন তাকে দুইটি নিশ্বাস ফেলার অনুমতি দেন। একটি নিশ্বাস শীতকালে আরেকটি গ্রীষ্মকালে। কাজেই তোমরা গরমের তীব্রতা এবং শীতের তীব্রতা পেয়ে থাকো।’ -সহিহ বোখারি : ৩২৬০

মুমিন বান্দারা দয়াময় আল্লাহর রহমতের প্রত্যাশী হয়ে গ্রীষ্মের এই গরম সময়ে অফুরন্ত সওয়াব লাভের জন্য বেশ কিছু আমল করতে পারেন। আশা করা যায়, মহান আল্লাহর দয়ায় পরিস্থিতি অনুকূলে আসবে- ইনশাআল্লাহ।

তওবা করা : মানুষের পাপের কারণে মানুষের ওপর নানা ধরনের বিপদাপদ আসে, তাই প্রতিকূল অবস্থাকে অনুকূলে আনতে মহান আল্লাহর কাছে তওবা করার কোনো বিকল্প নেই।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ নিজেই বলেছেন, ‘আর বলেছি, তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও; নিশ্চয়ই তিনি পরম ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের ওপর মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, আর তোমাদেরকে ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দিয়ে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের জন্য বাগ-বাগিচা দেবেন আর দেবেন নদী-নালা।’ -সুরা নুহ : ১০-১২

ইবাদতে গাফিলতি না করা : গরমের কারণে ইবাদত-বন্দেগিতে গাফিলতি না করা। কারণ জাহান্নামের আগুন দুনিয়ার গরমের চেয়ে বহুগুণে উত্তপ্ত। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘পেছনে থাকা লোকগুলো আল্লাহর রাসুলের বিপক্ষে বসে থাকতে পেরে খুশি হলো। আর তারা অপছন্দ করল তাদের মাল ও জান নিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ করতে এবং তারা বলল, ‘তোমরা গরমের মধ্যে বের হয়ো না।’ বলো, জাহান্নামের আগুন অধিকতর গরম, যদি তারা বুঝত।’ -সুরা তওবা : ৮১

পিপাসার্তকে পানি পান করানো : হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত সাদ ইবনে উবাদা (রা.) বলেন, (এক দিন) আমি (নবীজিকে) বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! কোন সদকা উত্তম? তিনি বলেন, পানি পান করানো। -সুনানে নাসায়ি : ৩৬৬৫

চলমান গরমের সময় শহরেরে বিভিন্ন স্থানে পথচারীদের জন্য ঠাণ্ডা পানির ব্যবস্থা রাখা হয় বিভিন্ন অফিস, দাতব্য সংগঠন কিংবা ব্যক্তি উদ্যোগে। এটা অত্যন্ত ভালো কাজ, সওয়াবের কাজ।

কেউ পানি চাইলে তা দিতে অস্বীকৃতি জানাতে নিষেধ করেছেন নবী কারিম (সা.)। ইরশাদ হয়েছে, হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এমন কী জিনিস আছে, যা কেউ চাইলে না দিয়ে তাকে বিদায় দেওয়াটা ঠিক নয়?

তিনি বলেন, পানি, লবণ ও আগুন। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এই পানি সম্পর্কে তো আমরা জানি, কিন্তু লবণ ও আগুনের ব্যাপারে কেন বাধা দেওয়া যাবে না? তিনি বলেন, হে হুমায়রা! যে ব্যক্তি আগুন দান করল, সে যেন ওই আগুন দিয়ে রান্না করা যাবতীয় খাদ্যই দান করল।
যে ব্যক্তি লবণ দান করল, ওই লবণে খাদ্য যতটা সুস্বাদু হলো তা সবই যেন সে দান করল। যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানকে এমন স্থানে পানি পান করালো, যেখানে তা সহজলভ্য, সে যেন একটি গোলামকে দাসত্বমুক্ত করল এবং যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানকে এমন স্থানে পানি পান করালো, যেখানে তা দুষ্প্রাপ্য, সে যেন তাকে জীবন দান করল। -সুনানে ইবনে মাজাহ : ২৪৭৪

অন্যের দিকে সাহায্যের হাত বাড়ানো : তীব্র গরমে অনেক সময় মানুষ দুর্বল হয়ে পড়ে। বয়োবৃদ্ধরা তাদের প্রয়োজনীয় কাজের জন্য বাইরে যেতে পারেন না, তখন তাদের সাহায্য করার মাধ্যমে সদকার সওয়াব মেলে।

হজরত আবু জার (রা.) বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমার হাস্যোজ্জ্বল মুখ নিয়ে তোমার ভাইয়ের সামনে উপস্থিত হওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। তোমার সৎকাজের আদেশ এবং তোমার অসৎ কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। পথহারা লোককে পথের সন্ধান দেওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ, স্বল্প দৃষ্টিসম্পন্ন লোককে সঠিক দৃষ্টি দেওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। পথ থেকে পাথর, কাঁটা ও হাড় সরানো তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। তোমার বালতি দিয়ে পানি তুলে তোমার ভাইয়ের বালতিতে ঢেলে দেওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। -জামে তিরমিজি : ১৯৫৬

পশুপাখির প্রতি সদয় হওয়া : গরমে মানুষের পাশাপাশি পশুপাখিও কষ্টে পড়ে। তাই মানুষের উচিত তাদের পশুপাখির প্রতি সদয় হওয়া।

হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, এক ব্যভিচারিণীকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়; সে একটি কুকুরের কাছ দিয়ে যাচ্ছিল। তখন সে দেখতে পেল, কুকুরটি একটি কূপের পাশে বসে হাঁপাচ্ছে। বর্ণনাকারী বলেন, পানির পিপাসা কুকুরটাকে মুমূর্ষ করে দিয়েছিল। তখন সেই নারী তার মোজা খুলে ওড়নার সঙ্গে বাঁধল। অতঃপর সে কূপ হতে পানি তুলল (এবং কুকুরটিকে পানি পান করালো), এ কারণে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হলো। -সহিহ বোখারি : ৩৩২১

গরমের কারণে দুনিয়ার এই হাহাকার পরিস্থিতি অনুকূলে আনতে, মহান রবের সন্তুষ্টি পেতে বর্ণিত আমলগুলো বেশি বেশি করা জরুরি।

 

;

আগামীতে হজ ব্যবস্থাপনা হবে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম স্মার্ট: ধর্মমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত রূপকল্প-২০২১ ও ২০৪১ অনুসারে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অংশ হিসেবে হজ ব্যবস্থাপনায় আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির সন্নিবেশ ঘটানো হয়েছে।

তিনি বলেন, হজ ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটালাইজড করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত যে পোর্টালটি রয়েছে সেখানে আমরা নতুন নতুন ফিচার যুক্ত করছি। আগামী দিনে বাংলাদেশের হজ ব্যবস্থাপনা হবে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম স্মার্ট হজ ব্যবস্থাপনা।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে ঢাকা হজ অফিসের সম্মেলন কক্ষে হজযাত্রী প্রশিক্ষণ ২০২৪ ’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্মমন্ত্রী এ কথা বলেন।

ফরিদুল হক খান বলেন, আপনারা সকলেই যাতে সহী-শুদ্ধভাবে হজব্রত পালন করতে পারেন সেজন্যই মূলত আজকের এই প্রশিক্ষণ। আমরা প্রশিক্ষণের জন্য অত্যন্ত দক্ষ প্রশিক্ষক নির্বাচন করেছি। আপনারা যদি প্রশিক্ষণের প্রতি মনযোগী হতে পারেন তাহলে আপনারা হজের নিয়ম-কানুন, হুকুম-আহকাম, ধারাবাহিক আনুষ্ঠানিকতা- সবকিছু আয়ত্তে আনতে পারবেন।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষেরই প্রবণতা হলো জীবনের শেষ প্রান্তে এসে হজ পালন করা। হজ অনেক পরিশ্রমসাধ্য ইবাদত, এর জন্য শারীরিক সামর্থ্য থাকা বাঞ্চনীয়। অনেকেরই সেই শারীরিক সামর্থ্য থাকে না। যার কারণে তাদের পক্ষে হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পাদন করা অনেক কষ্টকর হয়ে যায়।

তিনি বলেন, অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে জমানো সঞ্চয় দিয়েই হজব্রত পালন করতে যান। এদেশের অধিকাংশ মানুষেরই দ্বিতীয় বার হজ করার মতো আর্থিক সঙ্গতি থাকে না। সে কারণে আপনার পরিশ্রম ও অর্থ যেন বিফলে না যায় সেজন্য অবশ্য মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.)’র নির্দেশিত পথ অনুসরণ করে হজ সম্পাদন করতে হবে। সহী ও শুদ্ধভাবে হজব্রত পালন করতে হবে।

ফরিদুল হক খান বলেন, সৌদি আরবে আপনার পরিচয় শুধু একজন হজযাত্রী নয়, আপনার পরিচয়-আপনি একজন বাংলাদেশি। আপনার আচার-আচরণ, কথাবার্তা ও চালচলনের মাধ্যমেই বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি প্রকাশ পাবে।

তিনি সৌদি আরবের আইন-কানুন, নিয়ম-শৃঙ্খলা প্রতিপালনে কোনরূপ বিচ্যুতি না ঘটে সেদিকে যত্নবান থাকার আহ্বান জানান।

এছাড়া, কারো জন্য দেশের ভাবমূর্তি ও সম্মান যেন ক্ষুন্ন না হয় সেদিকে বিশেষভাবে সর্তক থাকার জন্য হজযাত্রীদেরকে অনুরোধ জানান তিনি।

ধর্মসচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যদের মধ্যে হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলাম, যুগ্মসচিব ড. মো. মঞ্জরুল হক ও ঢাকা হজ অফিসের পরিচালক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বক্তব্য রাখেন।

প্রশিক্ষণে সরকারি মাধ্যমে নিবন্ধিত ঢাকার হজযাত্রীরা অংশগ্রহণ করছেন।

;

সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে আশঙ্কা এজেন্সি মালিকদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন হজ এজেন্সির মালিকেরা। তাই সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে দ্রুত সকল প্রতিবন্ধকতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন এজেন্সি মালিকেরা।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান অপারেটিং হজ এজেন্সির মালিকরা।

সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনায় জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে বলে হাবিবুল্লাহ মুহাম্মদ কুতুবুদ্দীন লিখিত বক্তব্যে বলেন, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কিছু ঊর্ধতন কর্মকর্তা এবং মক্কা হজ মিশনের কিছু কর্মকর্তাদের অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার কারণে হজ ব্যবস্থাপনায় জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা করছেন তারা।

তিনি আরও বলেন, গত ১৮ এপ্রিল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ ১ শাখা থেকে সৌদি সরকারের একটি চিঠির বরাতে জানানো হয়- আগামী ২৯ এপ্রিল হজ যাত্রীদের ভিসা ইস্যু বন্ধ হয়ে যাবে।

চিঠিতে আরও জানানো হয়, ২৯ এপ্রিলের মধ্যে আবশ্যিকভাবে হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন করতে হবে। এজেন্সীর অবহেলার কারণে হজযাত্রীদের হজে গমন অনিশ্চিত হলে সে এজেন্সীর বিরুদ্ধে হজ ও উমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন ২০২১ অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এর আগে, গত ১০ ফ্রেব্রুয়ারি ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে জানানো হয়, সৌদি সরকারের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের আবাসন, ক্যাটারিং সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সকল প্রকার অনলাইন চুক্তি (সার্ভিস কোম্পানি, পরিবহান, ইত্যাদি) সম্পন্ন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অথচ এখনো অনেক এজেন্সির ৮০ শতাংশ কার্যক্রম বাকি।

এমন অবস্থায় সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে এবং সকল প্রতিবন্ধকতা নিরসনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে হজ এজেন্সি মালিকেরা অনুরোধ করেন।

এছাড়াও কিছু সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করেন তারা। সেগুলো হলো- দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল হাজির মিনার জোন নির্ধারণ করে ই হজ সিস্টেম আপডেট করতে হবে। ফাইনাল ফ্লাইট শিডিউল ঘোষণা ও সকল এজেন্সির হজযাত্রী অনুপাতে টিকেট নিশ্চিত করতে হবে। মোয়াজ্জেমদের জন্য বারকোড ভিসার বিষয়টি নিশ্চিত করা। যাদের সৌদি একাউন্টে এখনো রিয়াল জমা হয়নি তাদের একাউন্টে দ্রুত রিয়াল জমার ব্যবস্থা করা।

তারা বলেন, বর্তমানে সৌদি একাউন্টে টাকা ঢুকতে দেড় মাস সময় লাগে। যদি কারো একাউন্টে ১ পয়সাও কম থাকে তাহলে তার হজে যাওয়া সম্ভব হবে না। এবং বর্তমানে সরকারের বিভিন্ন চার্জ একবারে হিসাব করে পাঠানো অনেকটা অসম্ভব। এছাড়া যাদের এখনো মেননজাইটিস ও ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকা হয়নি তাদের জন্য দ্রুত টিকার ব্যবস্থা করতে হবে।

এছাড়াও ভিসা ইস্যু কার্যক্রম অন্যান্য বছরের মতো সর্বশেষ ফ্লাইটের এক সপ্তাহ পূর্ব পর্যন্ত চালু রাখার দাবি জানান তারা। আরও বলেন, অতীতে দেখা গেছে অনেকে হজ করতে যাওয়ার ইচ্ছে করলেও সকল প্রস্তুতির পর মারা গেছেন। আবার কেউ মারাত্মক রোগাক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়াও দুর্ঘটনা ইত্যাদি কারণে যেতে পারেন না। তাই সেই হজযাত্রীর পরিবর্তে তার পরিবারের অন্য কোন সদস্যদের যাওয়ার ব্যবস্থা করা যেতো তাহলে জমাকৃত টাকা গচ্চা যেতো না। বর্তমানে যে অবস্থা আছে তাতে ভিসা ইস্যু এতো আগে বন্ধ হয়ে গেলে অহেতুক প্রচুর টাকা সৌদি আরবে চলে যাবে। এতে দেশের ক্ষতি হবে। যদি বিষয়টি সৌদি সরকারকে বুঝাতে আমরা সক্ষম হই তাহলে আমাদের বিশ্বাস সৌদি সরকার বাস্তবতা বুঝে অবশ্যই বিবেচনা করবেন।

;