ফল প্রকাশের দাবিতে রাবি শিক্ষার্থীদের অবস্থান কমূর্সচি



রাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
রাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি/ ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

রাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি/ ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফল প্রকাশের দাবি জানিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বুধবার (৩১ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে বিভাগের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তারা।

এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে দুপুর ১২টায় বিভাগে জরুরি একাডেমিক সভা ডাকা হয়েছে।

এর আগে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিভাগের তৃতীয়, চতুর্থ ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে বিভাগের অফিস কক্ষের সামনে অবস্থান নেন। পরে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা তাদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে আন্দোলনে অংশ নেন।

এ সময় তারা ‘সান্ধ্য কোর্সে এক মাস, আমাদের আর কত মাস, পার হয়েছে সাত মাস, এক দফা এক দাবি রেজাল্ট চাই রেজাল্ট চাই, পরিবারের কান্না, রেজাল্ট কেন দেয় না ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষকদের সঙ্গে সভা করেন। সভা থেকে বের হয়ে বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান সাত দিনের মধ্যে ফলপ্রকাশের আশ্বাস দিলেও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন থেকে সরে আসেননি। তাদের দাবি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফলপ্রকাশ করা হবে- এ মর্মে লিখিত ঘোষণা না দিলে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘এক শিক্ষক খাতা জমা না দেওয়ায় ফল প্রকাশে বিলম্ব হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের সাত দিনের মধ্যে ফল প্রকাশের কথা জানানো হলে শিক্ষার্থীরা মেনে নেননি। এজন্য বিভাগের শিক্ষকদের দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’

উল্লেখ্য, গত বছরের ১৩ নভেম্বর বিভাগের প্রথম বর্ষের (বর্তমানে দ্বিতীয়) লিখিত পরীক্ষা শুরু হয়ে শেষ হয় ১০ ডিসেম্বর। ১১ নভেম্বর থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলে দ্বিতীয় বর্ষের (বর্তমানে তৃতীয়) লিখিত পরীক্ষা। ৮ নভেম্বর শুরু হয়ে ১৭ ডিসেম্বর শেষ হয় তৃতীয় বর্ষের এবং ১৪ নভেম্বর শুরু হয়ে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি শেষ হয় চতুর্থ বর্ষের (বর্তমান মাস্টার্স) লিখিত পরীক্ষা।

১৭ জুলাই প্রথম বর্ষের (বর্তমান দ্বিতীয় বর্ষ) ফল প্রকাশ করা হলেও এখনো অন্যান্য বর্ষের ফল প্রকাশিত হয়নি। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ-১৯৭৩ এ ৬০ দিনের মধ্যে বিভাগগুলোর ফল প্রকাশের নির্দেশনা রয়েছে।

   

বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বিকেলে বুয়েটের ওয়েবসাইটে ভর্তি পরীক্ষার এ ফল প্রকাশ করা হয়।

বুয়েটের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি কমিটির সভাপতি ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জীবন পোদ্দারের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক শ্রেণিতে মূল ভর্তি পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত ও অপেক্ষমাণ প্রার্থীদের তালিকা এবং ভর্তি–সংক্রান্ত পরবর্তী কার্যক্রমের সময়সূচি বুয়েটের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

এবারও বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষা ২ ধাপে অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দুই ধাপে প্রাক্‌-নির্বাচনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওইদিন প্রথম শিফটের প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষা সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় শিফটের পরীক্ষা হবে একই দিন বিকাল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়।

পরে ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রাক্‌-নির্বাচনী পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এই প্রাক্‌-নির্বাচনী পরীক্ষা মনোনীত শিক্ষার্থীরা ৯ মার্চ মূল ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।

;

ইবির লালন শাহ হলে মারামারি: একজনের সিট বাতিল অন্যজনকে শোকজ



ইবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লালন শাহ হলে মধ্যরাতে মারামারির ঘটনায় একজনের আবাসিকতা বাতিল করেছে হল প্রশাসন। এছাড়া ঘটনায় জড়িত থাকা অপর এক শিক্ষার্থীকে হল ত্যাগের পাশাপাশি কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আকতার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভা শেষে হল প্রভোস্ট বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

লালন শাহ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন বলেন, হলের কোড অফ কন্ডাক্ট ৭ (ঙ) ধারা অনুযায়ী ৪০৩ নং কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী এবং লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের জোবায়দুর রহমান জ্যোতির আবাসিকতা বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া অপর অভিযুক্ত একই বর্ষের অর্থনীতি বিভাগের সাকিল খান শোভন লালন শাহ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী না হওয়া সত্ত্বেও হলে অবস্থান এবং বাইরে থেকে কয়েকজনকে ডেকে এনে মারধরের ঘটনায় কেন সংশ্লিষ্ট ছিলেন এ মর্মে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। সে যেহেতু হলের কেউ না তাই এর বাইরে তার বিরুদ্ধে আর ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না। তবে তার জবাব সন্তোষজনক না হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সে সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই চূড়ান্ত হবে। আগামীকাল এ বিষয়ে লিখিত পাওয়া যাবে।

প্রসঙ্গত, গত ১৩ মার্চ রাত তিনটায় রুমমেটদের মধ্যকার দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে এ মারামারি হয়। এতে জোবায়দুর রহমান জ্যোতি ও তার রুমমেট সাকিল খান শোভনসহ অন্য হল থেকে আসা কয়েকজনের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করেন। অভিযোগে শোভন ছাড়াও পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শাহরিয়ার বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের মেহেদীরসহ ২০-২৫ জন মারধর করেছে বলে উল্লেখ করেন।

অন্যদিকে শোভন জ্যোতির বিরুদ্ধে তাকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আক্রমনের চেষ্টা ও উদ্ধার করতে আসা বন্ধুদের উপর আক্রমনের অভিযোগ করে। এ নিয়ে পরদিন ১৩ মার্চ সকালে প্রভোস্ট ও প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে দুই পক্ষ। এতে দুই পক্ষই নিজেদেরকে মারধরের শিকার বলে দাবি করে। এছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জ্যোতির বিরুদ্ধে হলের পরিবেশ নষ্টের অভিযোগ করে আরেকটি অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। পরে প্রভোস্ট কক্ষটিতে তল্লাশী করে ও জ্যোতিকে তার পরিবারের হাতে সোপর্দ করে।

;

সিন্ডিকেট থেকে পদত্যাগ করলেন কুবি শিক্ষক



কুবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
সিন্ডিকেট থেকে পদত্যাগ করলেন কুবি শিক্ষক

সিন্ডিকেট থেকে পদত্যাগ করলেন কুবি শিক্ষক

  • Font increase
  • Font Decrease

অ্যাজেন্ডা বহির্ভূত ও বেআইনিভাবে ডিন নিয়োগ দেওয়াকে কারণ দেখিয়ে সিন্ডিকেট সদস্যের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. শেখ মকছেদুর রহমান।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর এ পদত্যাগপত্রটি পাঠান তিনি।

পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করা হয়, ‘আমার জানামতে গত ১৪ মার্চ অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় অ্যাজেন্ডা বহির্ভূত ও বেআইনিভাবে ডিন নিয়োগ দেয়া হয়েছে। একাধিক সিন্ডিকেট সদস্যের আপত্তি সত্ত্বেও কোনো বিশেষ ব্যক্তিকে সুবিধা প্রদানের জন্য পরিকল্পিতভাবে ডিন মনোনয়ন দেয়া হয়েছে, যা শুধু দুঃখজনকই নয় বিধি-বহির্ভূতও বটে।’

পদত্যাগপত্রে তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘সিন্ডিকেট সভায় মতামত প্রদানের সুযোগ খুবই সীমিত, অধিকাংশ ক্ষেত্রে মতামত প্রদানের কোনো সুযোগ নেই, এখানে সদস্য হিসেবে থাকা বা না-থাকা একই অর্থ বহন করে। মূলত, আমাদেরকে সভার কোরাম পূর্ণ করার জন্য রাখা হয়েছে। সচেতন নাগরিক হিসেবে যেটা অস্বস্তিকর।'

এ ব্যাপারে অধ্যাপক ড. শেখ মকছেদুর রহমান জানান, ‘আমার দায়িত্ব চলমান অবস্থায় আমি পদত্যাগ করেছি। সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে আমাদের কথা বলার সুযোগ খুব কম দেওয়া হয়। আমাদের মতামত গ্রহণ করা হয় না। এতোদিন পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি, এর প্রয়োজনীয়তা নেই। তাই পদত্যাগ করেছি।’

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন এ অভিযোগের ব্যাপারে বলেন, ‘সিন্ডিকেট সভায় প্রায় ২০ জনের মতো সিন্ডিকেট সদস্য থাকে। সবাইকে কথা বলার জন্য সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। সিন্ডিকেট সভায় সবাই স্বাধীন, সবাইকে মত প্রকাশের সুযোগ দেওয়া হয়। উনারও এটাই লাস্ট সিন্ডিকেট সভা ছিল।’

উল্লেখ্য, গত ০৬ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক তোফায়েল হোসেন মজুমদার, ০৭ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণমাধ্যম উপদেষ্টা মাহবুবুল হক ভূঁইয়া, ১৮ ফেব্রুয়ারি সহকারী প্রক্টর মাহমুদুল হাসান এবং ২০ ফেব্রুয়ারি সহকারী প্রক্টর মো. কামরুল হাসান ও শেখ হাসিনা হলের আবাসিক শিক্ষক কুলছুম আক্তার স্বপ্না পদত্যাগ করেন।

;

চবিতে সমাবর্তন করতে না পারার গ্লানি নিয়েই বিদায় নিচ্ছেন ভিসি শিরীণ



রেদ্ওয়ান আহমদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
চবিতে সমাবর্তন করতে না পারার গ্লানি নিয়েই বিদায় নিচ্ছেন ভিসি শিরীণ

চবিতে সমাবর্তন করতে না পারার গ্লানি নিয়েই বিদায় নিচ্ছেন ভিসি শিরীণ

  • Font increase
  • Font Decrease

 

ছয় ছয়বার ঘোষণা দিয়েও একবারও সমাবর্তনের আয়োজন করতে পারেননি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। এরই মধ্যে নতুন ভিসি নিয়োগের মধ্য় দিয়ে পাঁচ বছরের ’শিরীণ শাসন’র ইতে ঘটতে যাচ্ছে। যে কারণে সমাবর্তনের আয়োজন করতে না পারার গ্লানি কাঁধে নিয়েই বিদায় নিতে হচ্ছে তাকে!

চবিতে নতুন ভিসি নিযুক্ত হয়েছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) পূর্ণকালীন সদস্য হিসেবে ডেপুটেশনে কর্মরত চবির ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) শিক্ষা মন্ত্রণালয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৭৩ এর ১২(২) ধারা অনুযায়ী এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সাময়িক সময়ের জন্য তাকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ প্রদান করে। যোগদানের তারিখ থেকে তার এ নিয়োগ কার্যকর হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তনের আয়োজন করতে হলে একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ প্রয়োজন। কিন্তু ড. শিরীণ আখতার প্রশাসন সে পরিবেশ তৈরি করতে পারেনি। যতবারই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, প্রায় প্রতিবারই কোন না কোন অস্থিরতা দেখা গেছে। তাছাড়া, এ প্রশাসনের সময়ে পুরো বছরই কোন না কোন ঝামেলা লেগেই ছিল।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ২৮ বছর পর ১৯৯৪ সালে তৎকালীন ভিসি অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম প্রথম সমাবর্তনের আয়োজন করেন। এরপর ১৯৯৯ সালে দ্বিতীয়, ২০০৮ সালে তৃতীয় এবং সর্বশেষ ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত হয় চতুর্থ সমাবর্তন। এই সমাবর্তনটি আয়োজন করেন সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী। এরপরে বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার ২০১৯ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পরে বিভিন্ন সময়ে ৬ বার সমাবর্তনের ঘোষণা দিলেও তা কোনোভাবেই বাস্তবায়ন করতে পারেননি। সবশেষ তিনি গত বছর শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল উদ্বোধনের সময় ৬ষ্ঠ বারের মতো সমাবর্তনের ঘোষণা দেন। এছাড়া একই বছরের ১ ফেব্রুয়ারি সাংবাদিক সমিতির সঙ্গে মতবিনিময়ে সমাবর্তনের ঘোষণা দেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার।

পরিসংখ্যান বলছে, ৭৩-এর অধ্যাদেশে পরিচালিত অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গড়ে প্রায় দুই বছরে ১ বার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে প্রায় ৬ বছরে ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ১০ বছরে একবার সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। এ হিসেবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে ১৪ বছরে একবার সমাবর্তন হচ্ছে।

চবিতে সর্বশেষ এবং সর্ববৃহৎ সমাবর্তন হয়েছিল ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারি প্রায় ৭ বছর আগে। এতে ২০০৪ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর এবং ২০০৮ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত পিএইচডি -এমফিলসহ বিভিন্ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা অংশ নেয়। মোট ৭ হাজার ১৯৪ জন গ্রাজুয়েট। সর্বশেষ সমাবর্তনটি করেছিলেন চবির সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী।

এদিকে ৮ বছর ধরে পঞ্চম সমাবর্তনের অপেক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউট থেকে তাদের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি শেষ করেছে। প্রতিবছর সমাবর্তনের জন্য বাজেট থাকার পরেও সমাবর্তন আয়োজনের ব্যর্থতায় হতাশা প্রকাশ করেছেন বেশিরভাগ শিক্ষার্থী।

পঞ্চম সমাবর্তনের লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো চবির বর্তমান ভিসি অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার সমাবর্তনের ঘোষণা দেন ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায়। একই বছর ১৬ই নভেম্বর চবির ৫৬তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ২য় বারের মতো ঘোষণা দেন। এরপর ২০২২ সালের ২৩ জুলাই ৩৪তম সিনেট সভার দ্বিতীয় অধিবেশনে ৩য় বারের মতো আবারো পঞ্চম সমাবর্তন আয়োজনের ঘোষণা দেন। সেই বছরই ১৭ই নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় ৫৭ দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে চতুর্থবারের মতো পঞ্চম সমাবর্তন আয়োজনের ঘোষণা দেন। পরপর ছয়বার সমাবর্তনের ঘোষণা দেওয়ার পরেও চূড়ান্ত কোনো তারিখ বেঁধে দিতে পারেননি।

শিক্ষকরা বলছেন, সমাবর্তন আয়োজনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ প্রয়োজন। কিন্তু প্রায় প্রতিবারই কোনো না কোনো ধরনের অস্থিরতা দেখা যায়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আরও দাবি করেছে, বিভিন্ন ব্যাচে সেশন জটের কারণে অনেক শিক্ষার্থী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের স্নাতক শেষ করতে পারছে না। সেশন জটের সম্মুখীন শিক্ষার্থীদের জন্য বার্ষিক সমাবর্তন আয়োজন করা কঠিন হয়ে পড়ে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সমাবর্তনের জন্য বার্ষিক বাজেট বরাদ্দ করলেও সেই অর্থ অন্য খাতে ব্যয় হয়। তবে গত বাজেট অধিবেশনে সমাবর্তন খাতে কোন বরাদ্দ রাখা হয়নি।

ইতিহাস বিভাগের স্নাতকোত্তরের এক শিক্ষার্থী বলেন, অনিয়মিত সমাবর্তন অনুষ্ঠানের কারণে অনুষদ সদস্যদের মধ্যে একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুসরণে উদাসীনতা রয়েছে। ফলে অধিকাংশ বিভাগে শিক্ষকরা সময়মতো ক্লাস নেন না। সেশন গ্যাপ বাড়ছে। নিয়মিত সমাবর্তন হলে শিক্ষকরা আরও দায়িত্বশীল হবেন। দর্শন বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাব এবং রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতাই অনিয়মিত সমাবর্তনের কারণ। তবে প্রশাসনের একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা থাকা উচিত।

এ বিষয়ে চবির সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিরাজ উদ দৌল্লাহ বলেন, যেহেতু সমাবর্তন হওয়ার একটা রেওয়াজ রয়েছে, তাই এটা সময়মত হওয়া উচিত। সমাবর্তন শিক্ষার্থীদের একটা স্বপ্ন। অন্যদিকে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী বলেন, আমি বলব যে, সমাবর্তন নিয়মিত হওয়া উচিত। এটা একটা রুটিন কাজ। এর জন্য প্রশাসনিক উদ্যোগের দরকার হয়। কিন্তু শিরীণ প্রশাসন সমাবর্তনের আয়োজন করতে পারেননি। আমি মনে করি, এই না পারাটা এ প্রশাসনের অনেক বড় একটি ব্যর্থতা।

এ বিষয়ে মন্তব্য জানার জন্য ভিসি অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল কেরলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে, প্রশ্ন থেকেই যায়, চবিতে নতুন উপাচার্য নিয়োগ হওয়া অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের কি পারবেন শিক্ষার্থীদের সমাবর্তনের এই প্রাণের দাবি মেটাতে?

;