বর্ষা শেষে প্রাণ ফিরে পেয়েছে খেলার মাঠ
বর্ষা শেষ। বৃষ্টিরও দেখা নেই। বর্ষার বৃষ্টির পানিও শুকিয়ে যাওয়ার পথে। নিচু স্থানে এখনো কিছুটা পানি জমে আছে। এই সময়টাতে পাড়ার কিংবা গলির খেলার মাঠগুলো খেলার উপযোগী হতে থাকে। আর এই মাঠকে ঘিরেই আশেপাশের খেলা প্রেমীদেরও থাকে নানা উদ্দীপনা।
লক্ষীপুর সরকারি কলেজের মাঠ, আশেপাশে আর কোনো মাঠ না থাকায় ক্রীড়াপ্রেমীদের কাছে এই মাঠটিই একমাত্র ভরসা। বর্ষা শেষ হলেও মাঠের পানি এখনো পুরোপুরি শুকায়নি। কিন্তু এই হালকা পানি আর সামান্য কাঁদা যেন খেলা থেকে বিরত রাখতে পারছেনা আশেপাশের শিশু কিশোর ও যুবকদের।
এই কাঁদা, পানি উপেক্ষা করে জমে উঠেছে নানা ধরণের খেলা। এই শিশু কিশোরদের আগমনে মাঠটি যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। ক্রিকেট, ফুটবল থেকে শুরু করে নানা ধরনের খেলাই হচ্ছে মাঠটিতে। এই অঞ্চলে খেলার মত আর কোনো বড় মাঠ নেই। তাই এখানেই শিশু থেকে শুরু করে যুবকরা একসাথে খেলাধুলা করে।
শুক্রবার (২ নভেম্বর) বিকালে মাঠের তিন কোণায় প্রায় অর্ধশতাধিক শিশু-কিশোরকে খেলতে দেখা যায়। মাঠের দক্ষিণ ও পশ্চিম পাশের উঁচু জায়গাগুলোতে অনেককেই ফুটবল ও ক্রিকেট খেলতে দেখা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, বর্ষার সময় মাঠটি বৃষ্টির পানিতে ডুবে থাকে। পানি কমলেও কাঁদায় মাঠটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে যায়। মাটি দিয়ে মাঠের নিচু জায়গাগুলো ভরাট করলে আর পানি জমতো না। এতে মাঠটি সবসময় ব্যবহার করা যেত।
পানি নিষ্কাশনের জন্য স্থায়ী ড্রেনেজ ব্যবস্থা প্রয়োজন। নিষ্কাশনের যথার্থ ব্যবস্থা থাকলে সারা বছর এলাকার ছেলেমেয়েরা এখানে অবাধে খেলাধুলা করতে পারত।
মাঠে খেলতে আশা পাশ্ববর্তী লক্ষ্মীপুর কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী আল-আমিন হোসেন বলেন, ‘পুরো মাঠটি এখনো খেলার উপযোগী হয়নি। এখন এক পাশে খেলতে হচ্ছে। পানি জমে থাকায় এই সীমাবদ্ধতা। এতে অনেকেই খেলায় অংশগ্রহণ করতে পারে না।’
কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র আফজাল হোসেন বলেন, ‘কলেজ ছুটি হওয়ার পর ভবনের বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এখনো মাঠে পানি জমে আছে। যে কারণে মাঠে যাওয়া যায় না। বিকেলে খেলতে এসেও দাঁড়িয়ে আছি। খেলার জন্য শুকনো জায়গার তুলনাই খেলোয়াড় অনেক বেশি।’
‘মাটি ভরাট করে পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। এতে এলাকার শিশু-কিশোররা যেমন খেলতে পারবে তেমনি ক্লাসের ফাঁকে আমরাও মাঠে বসে অবসর সময় কাটাতে পারবো।’
জানা গেছে, ১৯৬৪ সালের ১ জুলাই লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের যাত্রা শুরু। কলেজটির প্রতিষ্ঠাতা মরহুম অধ্যাপক আবদুল জব্বার। কলেজটির আয়তন আট একর ৬৩ শতাংশ। এর মধ্যেই বিশাল এই খেলার মাঠ।
কলেজের আশেপাশের এলাকায় প্রচুর আবাসিক ভবন রয়েছে। তবে নেই কোনো খেলার মাঠ। যার কারণে খেলা প্রিয় শিশু-কিশোর-যুবকরা এ মাঠটিতেই খেলতে আসে। বড় মাঠ হওয়ায় এক পাশে একেক রকম খেলায় মগ্ন থাকে তারা।
শুষ্ক মৌসুমে কলেজ মাঠটি একটি পার্কে পরিণত হয়। দূর-দূরান্ত থেকে নিরিবিলি একটু সময় কাটানোর জন্য বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষকে কলেজ আঙিনায় দেখা যায়। তারা মাঠে বসে আড্ডা দিয়ে সময় পার করেন।