দুবলার চরে নানা সমস্যার পরও উৎসবমুখর জেলেপল্লী



আবু হোসাইন সুমন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
দুবলার চরে শুটকি নিয়ে ব্যস্ত জেলেরা

দুবলার চরে শুটকি নিয়ে ব্যস্ত জেলেরা

  • Font increase
  • Font Decrease

বঙ্গোপসাগর পাড়ে সুন্দরবনের দুবলার চরে চলছে শুটকি মৌসুম। চলতি এ মৌসুমকে ঘিরে সাগর থেকে মাছ আহরণ ও শুটকি তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটছে জেলে পল্লীগুলোর হাজারো জেলে-মহাজনের। গত বছরের তুলনায় এ বছর জেলেদের জালে অনেক বেশি মাছ ধরা পড়ায় জেলেদের মধ্যে আনন্দ থাকলেও রয়েছে সমস্যাও। এ খাত থেকে প্রতি মৌসুমে সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় হলেও জেলেদের সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেই সংশ্লিষ্টদের।

বনবিভাগ ও জেলে-মহাজন সূত্রে জানা যায়, শুটকি মৌসুমকে ঘিরে দুবলার চরের আলোরকোল, অফিসকিল্লার, মেহেরআলীর চর, নারকেলবাড়িয়া, শেলা ও ছাপড়াখালীসহ বিভিন্ন চরে প্রায় ৫০ হাজার জেলে ৫/৬ মাসের জন্য অস্থায়ীভাবে বসতি গড়ে তোলেন। প্রতি বছর অক্টোবর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত সাগর থেকে মাছ আহরণ করে চরগুলোতে শুটকি তৈরির কাজ করে থাকে জেলেরা। কিন্তু এ বছর সাগর ও সুন্দরবন থেকে ইলিশসহ সকল ধরণের মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা থাকায় প্রায় একমাস পরেই শুরু হয়েছে শুটকি মৌসুম।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Nov/24/1543041415041.jpg

এই একমাসের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চরগুলোতে এখন জেলেদের মধ্যে মাছ আহরণ ও শুকানোর প্রতিযোগিতা চলছে। জেল-মহাজন ও শুটকি শ্রমিকেরা সাগর পাড়ে বালুর চরে লইট্যা, রুপচাঁদা, খলিসা, ছুরি, ভেদা, পোয়া, দাইতনা, মেদ, জাবা, কাইন, ভোলা, ঢ্যালা, চিংড়ি ও বিভিন্ন প্রজাতির সাদা মাছসহ অন্তত একশ প্রজাতির কাঁচা মাছ শুটকি প্রক্রিয়াকরণ করছেন।  জেলেরা সারারাত সাগরে মাছ ধরার পর ভোরের সূর্য উঠার আগেই তা চরে নিয়ে আসেন। তারপর তা প্রজাতি ভেদে আলাদা আলাদা শুকিয়ে সংরক্ষণ ও বাজারজাত করে থাকেন। এভাবেই শুটকি হয় সাগর পাড়ের দুবলা, মেহেরআলী, আলোরকোল, অফিস কিল্লা, মাঝির কিল্লা, শেলার চর, নারকেলবাড়িয়া, ছোট আমবাড়িয়া, বড় আমবাড়িয়া, মানিকখালী, কবরখালী ও চাপড়া খালী, কোকিলমনিসহ ছোট-বড় অনন্ত ১৩টি চরাঞ্চালে।

সাগর ও সুন্দরবন উপকূলীয় মোংলা, রামপাল, বাগেরহাট. সাতক্ষীরা, খুলানা, পাইকগাছা, পিরোজপুর, বরগুনা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে শুটকি তৈরিতে দুবলার জেলে পল্লীর অধিনস্থ এসব চরে এসে অস্থায়ী বসতি গড়েন। আগামী আরো পাঁচ তারা চরগুলোতে শুটকি তৈরি করবেন। তেরিকৃত শুটকি খুলনা, ঢাকা, চট্টগ্রাম ছাড়াও বিদেশে রফতানি হয়ে আসছে।

বনবিভাগ শুধু প্রতি শুটকি মৌসুমে জেলেদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করলেও জেলেদের জন্য চরগুলোতে নেই পর্যাপ্ত সাইক্লোন শেল্টার ও চিকিৎসা ব্যবস্থা। এছাড়া সেখানে রয়েছে সুপেয় পানির তীব্র সংকট। বিশুদ্ধ পানির অভাবে চরগুলোতে ছড়িয়ে পড়ছে পানি বাহিত রোগ।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Nov/24/1543041448722.jpg

দুবলা ফিসারম্যান গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মো: কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, পুরো চরে রয়েছে মাত্র ৫টি সাইক্লোন শেল্টার। ঝড়-জলোচ্ছাসে সেগুলোতে আশ্রয় নিতে পারে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার লোক। বাকী ৩০/৩৫ হাজার লোকের নিরুপায় হয়ে আশ্রয় নিতে হয় বনের ভিতরের বিভিন্ন ছোট ছোট খালে ও বড় গাছে। পর্যাপ্ত সাইক্লোন শেল্টারের অভাবে দুবলার চরে সিডর ও আইলার আঘাতে  ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির পাশাপাশি মারা যায় প্রায় সহস্রাধিক জেলে ও বহদ্দার। সাগর পাড়ের জেলেপল্লীগুলোতে দুর্যোগে নিরাপত্তা ও সুপেয় পানির চাহিদা মেটাতে ৪০টি সাইক্লোন শেল্টার ও ৪০টি দিঘি খননের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবী জানিয়ে আসছেন দুবলা ফিসারম্যান গ্রুপ। 

এছাড়া গভীর সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেদের কাছে দুর্যোগের কোন বার্তা না পৌছানো ও দিক নির্ণয়ের জন্য কোন বয়া বাতি না থাকায় অনেক জেলেই সাগর থেকে দ্রুত ফিরতে পারে না। দিক ভুল করে চলে যায় ভারতের জলসীমায়। আইনি জটিলতায় সেখানেই তাদের জেল-জরিমানার শিকার হতে হয়।

জেলে পল্লীগুলোতে পর্যাপ্ত সাইক্লোন শেল্টার ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রয়োজনীয়তার কথাও স্বীকার করে পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো: মাহমুদুল হাসান বলেন, এবার চরগুলোতে সেবা দেয়ার জন্য ৫টি ভাসমান মেডিকেল টিমকে কাজ করার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এছাড়া সুন্দরবনের দুবলা, মেহেরআলী, আলোরকোলসহ বিভিন্ন ফরেস্ট স্টেশন ও ক্যাম্প এলাকায় দুর্যোগ মোকাবেলায় আধুনিক বহুতল (তিনতলা) ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শীঘ্রই সেগুলোর অনুমোদন মিলবে এবং কাজ শুরু হবে। ইতিমধ্যে হরিণটানা এলাকায় সাইক্লোন শেল্টারের আদলে আধুনিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। তাতে ওখানকার সকলে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে পারবেন।

তিনি আরো বলেন, এ বছর অন্যান্যবারের তুলনায় মাছ অনেক বেশি পড়ছে। তাই গত বছর এখান থেকে প্রায় ২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হলেও এবার কোন ধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এরচেয়ে অনেক বেশি আয় হবে বলে আশাবাদী তিনি।

   

বন্ধ বিমানবন্দর চালুর উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে: বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বন্ধ বিমানবন্দর চালর উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে: বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী

বন্ধ বিমানবন্দর চালর উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে: বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী

  • Font increase
  • Font Decrease

বর্তমানে দেশে অভ্যন্তরীণ, আন্তর্জাতিক ও স্টল বিমানবন্দরের সংখ্যা ১৫টি। এর মধ্য চালু রয়েছে আটটি চালু রয়েছে। বাকি সাতটি বিমানবন্দর এয়ারলাইন্সের আগ্রহ ও সরকারের সিদ্ধান্ত সাপেক্ষে চালুর সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে সংসদে জানিয়েছে বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে ভোলা-২ আসনের আলী আজমের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ তথ্য জানান। এ সময় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

প্রশ্নের জবাবে বেসরকারি পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান, বর্তমানে দেশে ৩টি আন্তর্জাতিক, ৭টি অভ্যন্তরীণ ও ৫টি স্টল বিমানবন্দর রয়েছে। তারমধ্য আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ৩টি এবং ৫টি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর চালু রয়েছে। এ সকল বিমানবন্দর দিয়ে আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালিত হচ্ছে। বাকি সাতটি বিমানবন্ধর বন্ধ রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বন্ধ থাকা বিমানবন্দরসমূহ চালু করার পরিকল্পনা সরকার তথা বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের আপাতত নেই। তবে, বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন, যাত্রী চাহিদা এবং এয়ারলাইন্সসমূহের আগ্রহের প্রেক্ষিতে সরকারের সিদ্ধান্ত সাপেক্ষে বন্ধ বিমানবন্দরসমূহ চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে।

;

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব ঢাকায় আসছেন ৯ মে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা আগামী ৯ মে (বৃহস্প‌তিবার) ঢাকায় আসছেন। এই সফরে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে দিল্লি সফরের আমন্ত্রণ পৌঁছে দেওয়ার কথা রয়েছে।

ঢাকার এক‌টি কূটনৈ‌তিক সূত্র কোয়াত্রার ঢাকা সফ‌রের তথ্য নি‌শ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, আগামী ৯ মে ভারতীয় পররাষ্ট্রস‌চিবের ঢাকায় আসার তা‌রিখ চূড়ান্ত হয়েছে। ঢাকা সফরে তার মূল বৈঠক হবে পররাষ্ট্রস‌চিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে।

এর আগে, গত ২০ এ‌প্রিল ঢাকায় আসার কথা ছিল ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রার। তবে অনিবার্য কারণে ভারতের পররাষ্ট্রসচিবের পূর্বনির্ধারিত সেই সফর স্থগিত হয়।

জানা গেছে, এক‌দিনের আসন্ন ঢাকা সফরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রস‌চিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন কোয়াত্রা। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর দি‌ল্লি সফরসহ দুই দে‌শের স্বার্থ সং‌শ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনার কথা রয়েছে।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হা‌সিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন কোয়াত্রা। আশা করা হচ্ছে, সরকার প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দিল্লি সফরের আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেবেন তি‌নি।

;

গ্রামের ৭২ শতাংশ রাস্তা পাকা: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
গ্রামের ৭২ শতাংশ রাস্তা পাকা: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী

গ্রামের ৭২ শতাংশ রাস্তা পাকা: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের গ্রামাঞ্চলে পাকা সড়ক ১২ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে এখন ৭২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো.তাজুল ইসলাম। 

রোববার (৫ মে) বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজার সংলগ্ন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (বিএফডিসি) ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত গণতন্ত্র সুসংহত করতে 'নির্দলীয় স্থানীয় সরকার নির্বাচন' নিয়ে অনুষ্ঠিত ছায়া সংসদে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

মো. তাজুল ইসলাম বলেন, দেশে গ্রামীণ অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। আগে যেখানে গ্রামীন সড়ক ১২ শতাংশ ছিল এখন তা বেড়ে হয়েছে ৭২ শতাংশ।

মন্ত্রী সরকারের প্রশংসা করে বলেন, দেশে একসময় ৭২ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্য সীমার নীচে ছিল। এখন মাত্র ১৮ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্য সীমার নীচে।

নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বিষয়ে তিনি বলেন, বিরোধী দলকে নির্বাচনে অংশ নিতে হবে। ব্রিটেনের লেবার পার্টি ৩০-৪০ বছর ধরে ক্ষমতায় নেই। তারপরও নির্বাচন করছে। পাকিস্তানে ইমরান খানের দলকে বাতিল করে দিয়েছে, তার সাথে সম্পৃক্তদের গ্রেফতার করেছে। জাতির জনক শেখ মুজিব ৭০ সালের নির্বাচন করেছে। আমার দল আওয়ামীলীগ ১৯৮৬ সালে নির্বাচন করে নাই, আর সবসময় নির্বাচনে অংশ নিয়েছে।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদ বা বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ঘর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। ছায়া সংসদে প্রস্তাবের পক্ষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ এবং বিপক্ষে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকরা অংশগ্রহণ করে।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি'র আয়োজনে 'নির্দলীয় স্থানীয় সরকার নির্বাচন তৃণমুল পর্যায়ে গণতন্ত্রকে সুসংহত করবে' শীর্ষক ছায়া সংসদে বিপক্ষে অংশ নেওয়া মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকদের পরাজিত করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়।

প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, সাংবাদিক মাঈনুল আলম, সাংবাদিক মশিউর রহমান খান, সাংবাদিক মো. হুমায়ুন কবীর ও সাংবাদিক সাদিয়া আফরোজ।

প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।

;

খরায় ঝরে পড়ছে লিচু, লোকসানের শঙ্কায় চাষিরা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি মৌসুমে অনাবৃষ্টি ও তীব্র খরায় বিপাকে পড়েছেন বরেন্দ্র অঞ্চলের লিচু চাষিরা। পরিপক্ব হওয়ার আগেই লিচু ঝরে পড়ায় লোকসানের শঙ্কায় চাষিদের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ।

জানা যায়, তীব্র তাপদাহে লিচু পাকার মাত্র এক সপ্তাহ আগে ফলগুলো কালো হয়ে ফেটে ঝরে পড়ছে।

এক সময় লিচু উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত দিনাজপুরের পাশাপাশি ঈশ্বরদী ও রাজশাহী এখন লিচু চাষে অগ্রগামী। অত্যধিক গরম ও বৃষ্টির অভাবে লিচুর গুণগত মান এবং উৎপাদনে বড় ধরনের প্রভাব পড়ছে। চাষিদের মধ্যে হতাশা ও উদ্বেগ বিরাজ করছে, কেননা লিচু বিক্রি থেকে প্রাপ্ত আয় তাদের বছরের অনেক খরচ মেটায়। এই অঞ্চলের অনেক চাষি লিচু বিক্রি করে সংসারের খরচ চালানোর পাশাপাশি শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ করে থাকেন।

চাষিদের এই বিপর্যয় মোকাবিলায় কৃষি বিভাগ ও সরকারি সহায়তা অত্যন্ত প্রয়োজন। কৃষি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পরিবর্তনশীল আবহাওয়া পরিস্থিতি ও বাজারের চাহিদা বুঝে চাষাবাদের পদ্ধতি উন্নত করতে হবে। চাষিদের ওপর এই বোঝাপড়া ও অবহেলা দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা তৈরি করতে পারে, তাই অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানিয়েছে, রাজশাহীতে এবার ৫৩০ হেক্টর জমিতে ৩ হাজার ৮৬৫ মেট্রিক টন লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে চাষিরা বলছেন, আমের মতো এবার লিচুতেও ব্যাপক লোকসান হবে।

মহানগরীর কাশিয়াডাঙ্গা এলাকার লিচু চাষি সাব্বির হোসেন বলেন, গাছের গোড়ায় সকাল-বিকেল পানি ঢালছি। তবুও লিচু রক্ষা করা যাচ্ছে না। গাছের চেয়ে মনে হচ্ছে মাটিতেই বেশি লিচু পড়ে আছে। লিচু দেখতে কালচে হয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও আকারে অনেক ছোট হচ্ছে।

রাজশাহী নগরীর মেহেরচণ্ডির এলাকার লিচুচাষি মুক্তার ভাণ্ডারি বলেন, তীব্র খরার কারণে গাছে ফেটে নষ্ট হচ্ছে লিচু। এমন ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য আগাম গাছ থেকে লিচু নামিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। লিচুগুলো পরিপূর্ণভাবে পাকতে এখনও পাঁচ থেকে ছয়দিন সময় লাগবে। কিন্তু খরার কারণে গাছের গোড়ায় পানি দিয়েও কাজ হচ্ছে না।

রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা উম্মে ছালমা বলেন, তীব্র খরায় খাল-বিল শুকিয়ে গেছে। এমতাবস্থায় লিচু রক্ষা করার জন্য সকাল-বিকেল গাছের গোড়ায় পানি দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে চাষিদের। বিকেলের পানিটা গোড়ার পাশাপাশি গাছের ওপরেও স্প্রে করে দিতে হবে। তাহলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।

রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, আম-লিচু প্রতিকূল আবহাওয়ারই ফল। খরা হবে, ঝড়-বৃষ্টি, শিলা হবে, এর মধ্যে দিয়ে এগুলো বড় হবে। তবে এখন বৃষ্টি প্রয়োজন। বৃষ্টি হলে পরিবেশটা ঠাণ্ডা হবে। তখন আর ঝরে পড়বে না।

;