চাহিদা থাকা সত্ত্বেও বাড়ছে না তুলা চাষ

  • ফয়সাল আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, গাজীপুর, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

চাহিদা থাকা সত্ত্বেও বাড়ছে না তুলা চাষ। ছবি: বার্তা২৪.কম

চাহিদা থাকা সত্ত্বেও বাড়ছে না তুলা চাষ। ছবি: বার্তা২৪.কম

বর্তমানে আমাদের দেশের রফতানি আয়ের অন্যতম উৎস তৈরি পোশাক খাত। আর এই খাতের প্রধান কাঁচামাল হচ্ছে তুলা। স্বাধীনতাত্তোর দেশে প্রতিনিয়ত তুলার চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ার পরও দেশে বাড়ছে না তুলা চাষ কার্যক্রম। অথচ নানা ধরনের সীমাবদ্ধতা থাকার পরও তুলা গবেষণায় আলো ছড়াচ্ছে দেশীয় বিজ্ঞানীরা।

কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, এই খাতের ভোক্তা দেশের তালিকায় এখন বাংলাদেশ বিশ্বের চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। ২০১৬ সালে আমাদের দেশে তুলার চাহিদা ছিল ৬৮ লাখ ১০ হাজার বেল। যা ২০১৭ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৫ লাখ ১০ হাজার বেলে। আর ২০১৮ সালে আরও বেড়ে হয়েছে ৮০ লাখ বেলের উপরে। প্রতিনিয়ত এভাবে তুলার চাহিদা বাড়লেও আমাদের দেশে বাড়েনি এর উৎপাদন।

বিজ্ঞাপন

২০১০ সালে দেশে তুলা উৎপাদন হয়েছিল মাত্র ৫০ হাজার টন। ৮ বছর ব্যবধানে ২০১৮ সালে দেশে তুলা উৎপাদন হয়েছে মাত্র দেড় লাখ বেল। দেশীয় চাহিদার মাত্র ৫ ভাগ তুলা দেশে উৎপাদন হলেও ৯৫ ভাগ আমদানি করতে হচ্ছে বিদেশ থেকে।

দেশে তুলার চাষ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৯৮৪ সালে সরকার গাজীপুরের শ্রীপুরে প্রায় ১৫০ একর জমির উপর তুলা গবেষণা, প্রশিক্ষণ ও বীজ বর্ধন খামার গড়ে তুলে।

বিজ্ঞাপন

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/07/1546858209103.jpg

এই খামারের তথ্য অনুযায়ী, তুলা একটি লাভজনক চাষ। তুলা চাষ করে অন্যান্য ফসলের চেয়ে দ্বিগুণ আয় করা যায়। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি সময় ব্যয়ের কারণে তুলা চাষ থেকে প্রতিনিয়ত মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে কৃষকরা। যদিও কৃষকদের নানা ধরনের প্রণোদনা ও দেশের বরেন্দ্র, চর, পাহাড়ি এলাকায় তুলা চাষ ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে কাজ শুরু করছে সরকার।

জানা গেছে, বর্তমানে দেশের ৩৫টি জেলায় প্রায় দেড় লাখ হেক্টর জমিতে তুলা চাষ হচ্ছে। আর দেশীয় বিজ্ঞানীরা নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা থাকার পরও এ পর্যন্ত প্রায় ১৭টি উন্নতমানের তুলার জাত চাষের জন্য কৃষকদের মধ্যে উন্মুক্ত করেছেন। তবে তুলা চাষের বিষয়ে কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয়হীনতা কাটিয়ে উঠতে হবে। আর সবাই উদ্যোগী হয়ে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সারা দেশের কৃষকদের মধ্যে তুলা চাষের বিষয়ে আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে। এতে আমাদের দেশীয় অর্থনৈতিক অগ্রগতি আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে।

গাজীপুরের শ্রীপুরের তুলা গবেষণা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ খালেকুজ্জামানের অভিমত, তুলা গবেষণার মূল প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে বিজ্ঞানী সংকট। তারপরও গবেষণায় তুলা চাষ উন্নয়ন আলোর মুখ দেখছে। এখন কৃষকদের মধ্যে লাভজনক এই চাষ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। এতে প্রতিনিয়ত তুলা চাষ বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।