চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে দুইটি চামড়া শিল্পনগরী হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।
তিনি বলেন, ‘চামড়া শিল্পের অমিত সম্ভাবনা রয়েছে। আন্তর্জাতিকমান বজায় রেখে চামড়া পণ্য উৎপাদন করে বিদেশি ক্রেতা আকর্ষণ করতে হবে। চামড়া শিল্পের দ্রুত বিকাশে চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে দুইটি চামড়া শিল্পনগরী নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে।’
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) শিল্প মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের একটি প্রতিনিধিদল শিল্পমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসেন। এ সময় শিল্পমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রতিনিধিদল চামড়া শিল্পের বিভিন্ন বিষয়ে শিল্পমন্ত্রীকে অবহিত করেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘সাভার ট্যানারি শিল্পের জন্য অত্যাধুনিক কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ সিইটিপি নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।’
তিনি বলেন, ‘পরিবেশসম্মত টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সরকার অত্যন্ত তৎপর। শিল্প মালিকদের বিষয়ে আন্তরিক হতে হবে।’
প্রতিনিধিদলের সঙ্গে মন্ত্রীর সাক্ষাতের সময় ভারপ্রাপ্ত শিল্প সচিব মোঃ আবদুল হালিম উপস্থিত ছিলেন।
দিনাজপুর-৫ (পার্বতীপুর-ফুলবাড়ী) আসনের টানা আটবারের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাত আটটার দিকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
মোস্তাফিজুর রহমানের বাড়ি দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার জামগ্রামে। বাবা মোবারক আলী ও মা শাহেদা খাতুনের জ্যেষ্ঠ সন্তান ছিলেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। কয়েক মাস ধরে তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। তিনি স্ত্রী, দুই কন্যাসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ৩০ সেপ্টেম্বর সোমবার তার নির্বাচনি এলাকা দিনাজপুরের পার্বতীপুর আদর্শ কলেজ মাঠে সকাল সাড়ে ১০টায়, দিনাজপুরের ফুলবাড়ী সরকারি কলেজ মাঠে বেলা সাড়ে ১১টায় এবং একই উপজেলার রুদ্রানি ঈদগাহ ময়দানে দুপুর সাড়ে ১২টায় জানাজা শেষে বাদ জোহর জামগ্রাম পারিবারিক গোরস্থানে তার দাফন হবে।
১৯৫৩ সালের ২৯ নভেম্বর জন্ম নেওয়া এই রাজনীতিবিদ ১৯৭৭ সালে ফুলবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮০ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হয়ে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯২ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১৩ সাল থেকে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
মোস্তাফিজুর রহমান ১৯৮৬ সালে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০২৪ সাল পর্যন্ত তিনি আটবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালে প্রথমে বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী পরে ভূমি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালে নির্বাচিত হয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রীর দায়িত্ব পালনসহ রাজনৈতিক জীবনে বিভিন্ন সংসদীয় কমিটির সদস্য ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
ঢাকায় ফেরানো হচ্ছে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনীমকে। তিনি লন্ডনে প্রায় ছয় বছর দায়িত্ব পালন করেছেন।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন অনুবিভাগের এক অফিস আদেশে হাইকমিশনার সাইদা মুনাকে অবিলম্বে ঢাকায় ফিরতে বলা হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ নাজমুল হক স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে বলা হয়েছে, আপনাকে (সাইদা মুনা তাসনিম) সদর দফতর, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঢাকায় বদলির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। বাংলাদেশ হাইকমিশন লন্ডনে আপনার বর্তমান দায়িত্ব ত্যাগ করে অনতিবিলম্বে সদর দফতর ঢাকায় প্রত্যাবর্তনের জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর রদবদলের অংশ হিসাবে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ব্যাপক পরিচিতি পাওয়া এই দূতকে ফেরানো হচ্ছে বলে জানা গেছে।
২০১৮ সালের ৩০ নভেম্বর থেকে লন্ডনে বাংলাদেশ হাই কমিশনারের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন সাইদা মুনা।
যুক্তরাজ্যে মিশনে যাওয়ার আগে থাইল্যান্ডে বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব সামলেছেন বিএসএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের একাদশ ব্যাচের এই কর্মকর্তা।
রাষ্ট্রদূত হওয়ার আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতিসংঘ ও বহিঃপ্রচার অনুবিভাগের মহাপরিচালক লন্ডন হাই কমিশন ও নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ মিশনে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন সাইদা মুনা।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে কেমিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে লেখাপড়ার পর তাসনিম ইউনিভার্সিটি অব অব লন্ডন থেকে পাবলিক পলিসি ও ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। তিনি পররাষ্ট্র ক্যাডারে যোগ দেন ১৯৯৩ সালে।
একদিন এই ক্লাসরুম ছিল মো. ওসমান পাটোয়ারীরও। শান্ত-সৌম্য ছেলেটাই টিফিনের ছুঁটিতে হয়ে উঠতেন উচ্ছল। হাসি-গান-আড্ডায় মাতিয়ে রাখতেন বন্ধুদের। আজ সবই স্মৃতির পাতায়। লক্ষ্মীপুর থেকে একবুক স্বপ্ন আর আশা নিয়ে বন্দরনগরীর চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে পড়তে আসা ছেলেটা এখন কেবলই ছবি। কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়া ওসমানের বুক-শরীর ঝাঁজরা হয়েছিল আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের গুলিতে।
প্রায় দুই মাস আগে শহীদ হলেও ফের বন্ধুদের স্মৃতিতে ফিরলেন ওসমান, সেই তারই রেখে যাওয়া চেনা পরীক্ষার হলেই।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ডিপ্লোমা চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। ওসমানও ছিলেন কম্পিউটার বিভাগের এই বর্ষেরই শিক্ষার্থী। কিন্তু দেশকে নতুন ‘স্বাধীনতার স্বাদ’ এনে দিতে প্রাণ দেওয়া ওসমান পাটোয়ারী স্বাভাবিকভাবেই পরীক্ষার হলে থাকতে পারেননি। তবে পরীক্ষার হলে ওসমান আগে যে টেবিলসহ লাগানো চেয়ারটিতে বসতেন সেটিতে বসেননি কেউ। সেই শূন্য চেয়ারের ওপরে শোভা পাচ্ছিল ওসমানের জন্য বন্ধুদের আনা ভালোবাসার ফুলের তোড়া।
পরীক্ষার খাতায় লিখতে লিখতে কখনো কখনো বন্ধুদের চোখ চলে যাচ্ছিল সেই খালি চেয়ারের দিকে। বন্ধুর চলে যাওয়ার পুরনো কথা ভাবতে ভাবতে স্বভাবতই অনেকের চোখের পাতা ভারী হয়ে গিয়েছিল।
ফেসবুকের পাতায় সেই কথা তুলেও ধরেছেন ওসমানের বন্ধুরা। তাদেরই একজন মো. এরফান। তিনি লেখেন, ‘ওসমান, কখনো ভাবিনি তোকে ছাড়া পরীক্ষা দিতে যাবো। ডিপ্লোমা লাইফের শুরু থেকেই আমরা সবাই মিলে একসঙ্গে ক্যাম্পাসে যেতাম। কতই না মজা করতাম। এইগুলা কখনো ভুলবার নয়। আজ সবই আছে শুধু তুই নেইরে বন্ধু!’
আরেক বন্ধু শোকের শব শব্দকে জড়ো করে লিখলেন, ‘প্রিয় ওসমান, পলিটেকনিকের ভর্তি হওয়ার ফার্স্ট সেমিস্টার থেকে তোর সঙ্গে ৩০৬ নম্বর কক্ষে মিডটার্ম পরীক্ষা দিয়ে আসছি। আজ ৪র্থ পর্বের মিডটার্ম পরীক্ষা দিলাম সেই ৩০৬ নম্বর কক্ষে। তোর সিটও একই জায়গায় ছিল। কিন্তু ভাই শুধু ছিলি না তুই।’
একসঙ্গে ক্লাসরুম শেয়ার, শহরের এখানে-ওখানে ঘোরাঘুরি-সাজিদ ইমতিয়াজের মনের উঠোনো ওসমানের সঙ্গে কাটানো সেই সব স্মৃতি যেন এখনো খেলা করছে।
সেই আনন্দের স্মৃতি থেকে কিছুটা ধার নিয়ে সাজিদ বড় দুঃখ করে বললেন, ‘ওসমান ছিল আমার খুব কাছের বন্ধু। আমরা একসঙ্গে চট্টগ্রাম শহরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলাম। কিন্তু ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করা হলে সে গ্রামের বাড়িতে চলে যায়। কিন্তু সেখানে গিয়ে ঘরে বসে থাকেনি, আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল সেখানকার বন্ধুদের সঙ্গে। ৪ আগস্ট বিকেলে লক্ষ্মীপুর শহরে গুলিতে সে শহীদ হয়। দেশের জন্য বন্ধুর এই আত্মত্যাগের স্মৃতিকে আজীবন ধরে রাখতে চাই আমরা।’
ওসমানের বড় ভাই মো. ওমর ফারুক কদিন আগে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আহ্বানে ঘুরে গিয়েছেন ছোটা ভাইয়ের স্মৃতিধন্য চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটউটে।
তারই স্মৃতি ফেসবুকে তুলে ধরেছেন ফারুক। লেখেন, ‘দেখে এসেছি প্রিয় ওসমানের হেঁটে চলা রাস্তাগুলো, ক্লাসরুম, শিক্ষাঙ্গন, পড়ার টেবিল, থাকার স্থান। ওসমানকে ছাড়া সবই আছে। কলেজ ড্রেসটা যেভাবে হাতা গুটিয়ে হ্যাঙ্গারে ঝুঁলিয়ে রেখে এসেছিলো ঠিক সেভাবেই ঝুঁলে ছিল। ওসমান ছাড়া সব যেন থমকে আছে, হাহাকার করছে। প্রিয় চট্টগ্রাম তুমি থাকবে হৃদয়ে, ভাইয়ের স্মৃতি যে রেখে এসেছি তোমার বুকে।’
ওসমানের সেই স্মৃতি বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব এখন তারই বন্ধুদের কাঁধে। বন্ধুবিয়োগে শোকের সাগরে হাবুডুবু খাওয়া বন্ধুরাও অবশ্য ওই স্মৃতি আঁকড়েই বাঁচতে চান, প্রতিদিন, আজীবন!
নওগাঁ জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় করা মামলায় দেওয়ান ছেকার আহমেদ শিষাণকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার শিষাণ নওগাঁ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি।
রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকা থেকে নওগাঁ সদর থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এদিন রাত ৯ টার দিকে শিষাণকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী। তাকে গ্রেফতারে ঢাকা মহানগর পুলিশ সহযোগিতা করে।
ওসি নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, গ্রেফতার শিষাণকে ঢাকা থেকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকা পুলিশের সহযোগিতায় সদর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। শিষাণের বিরুদ্ধে মামলা আছে। সে ওই মামলার পলাতক আসামি।#