শহীদ জিয়ার ৮৩তম জন্মবার্ষিকী পালনে বিএনপির কর্মসূচি
জাতীয়
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ জিয়াউর রহমানের ৮৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনে দুই দিনব্যাপী কর্মসূচি দিয়েছে দলটি।
এ দিনটি পালনে আলোচনা সভা, পোস্টার, ক্রোড়পত্র প্রকাশ, মাজার জিয়ারতসহ বেশকিছু কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তিনি জানান, দিবসটি উপলক্ষে শুক্রবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটায় সুপ্রিম কোর্ট বার অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (১৯ জানুয়ারি) ঢাকাসহ দেশের প্রতিটি বিএনপি কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে, সকাল ১০টায় শেরে বাংলা নগরে শহীদ জিয়ার মাজারে ফাতেহা শরিফ পাঠ ও পুষ্প অর্পণ করা হবে। এবং দিবসটি পালনে ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে।
যে বয়সে খাতা-কলম ও খেলনা নিয়ে আনন্দে খেলাধুলার কথা সে বয়সে হাতে নিয়েছে হাতুড়ি। কোমল হাতে ইট ভেঙে পরিবারকে সহযোগিতা করছে ওরা। দারিদ্র্যের কারণে এদের অনেকে স্কুলের গন্ডিতেও পৌঁছাতে পারেনি। বলছি রংপুর নগরীর আলমনগর বিহারী ক্যাম্পে ঝড়ে পড়া কিছু শিশুর বাস্তবচিত্র।
হাতুড়ির টুস-টাস শব্দে প্রতিনিয়ত চোখে পড়ে তাদের ইট ভাঙার দৃশ্য। দরিদ্র পরিবারে অভাবের তাড়নায় খুব সকালেই মায়ের সঙ্গে বেরিয়ে পড়েন ইট ভাঙতে। ইট ভাঙার আয়ের ওপরই চলে তাদের সংসার।
মায়ের সঙ্গে ইট ভাঙছে শিশু গুড়িয়া। মাল্টিমিডিয়া নিউজ পোর্টাল বার্তা২৪.কমের এই প্রতিবেদনের সঙ্গে আলাপকালে গুড়িয়া বলেন, বাবা ভ্যান চালক। তার প্রতিদিন কাজ থাকে না। মা ইট ভেঙে যে টাকা পায়, তা দিয়ে আমাদের বাজার খরচ চলে। অতিরিক্ত আয় করতে আমিও মায়ের সঙ্গে ইট ভাঙি। আগে ইট ভাঙতে হাতুড়ি চালাইতে ভয় লাগতো কিন্তু এখন অভ্যাস হয়ে গেছে।
স্কুলে যাওয়ার বিষয়ে সে জানায়, মাঝে মধ্যে যায়।
হাতুড়ি চালিয়ে ইট ভাঙতে থাকা শিশু রাফিয়া বলেন, মায়ের সঙ্গে ইট না ভাঙলে আমাদের সংসারের চলে না। বাবা আরেকটা বিয়া করছে আমাদেরকে খরচ দেয় না। মা ইট ভাঙে আমিও সঙ্গে যোগাল দেই।
সে জানায়, বিকেলে স্কুলে যায়। তবে যেদিন খোয়ার অর্ডার বেশি থাকে সেদিন স্কুলে যেতে পারে না।
খোয়া ভাঙতে থাকা একজন অভিভাবক বলেন, সকালে ঘুম থাকি উঠিয়া খোয়া না ভাঙলে প্যাটে ভাত যাবে না। বাচ্চা কাচ্চা নিয়া খুব কষ্ট, জিনিসপাতির দাম বেশি সংসার চলে না। ডাল ভাত খায়া বাঁচতে বাচ্চা কাচ্চা নিয়া খোয়া ভাঙি ৯০-১০০ টাকা করি বিক্রি হয়। দিনে ৩-৪ বস্তা খোয়া ব্যাচা হয়, কখনো হয় না। এভাবেই কোনমতে সংসার চলে। ক্যাম্পে থাকি আমাদের কষ্ট দেখার কেউ নাই।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, শিশুরা কম বয়সে যেন কাজ না করে, এজন্য সরকারি উদ্যোগে কিছু বেসরকারি সংস্থা হতদরিদ্র অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে অভিভাবকদের সচেতন করতে কাজ করছে। এসব পরিবারকে বোঝানো হচ্ছে যে তারা যেন তাদের শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজে না পাঠায়। ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমে শিশুরা শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হবে। শিশুশ্রম বন্ধে প্রতি তিন মাস পরপর জেলা প্রশাসনের সম্মেলনকক্ষে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার লোকজন নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
কর্তৃত্ববাদী শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর প্রশাসন পরিচালনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দক্ষতা ও কর্মপরিকল্পনায় ঘাটতি আছে বলে মনে করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি)।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকালে ধানমন্ডি মাইডাস সেন্টারে নতুন বাংলাদেশ’: কর্তৃত্ববাদী সরকার পতন-পরবর্তী ১০০ দিনের ওপর ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) পর্যবেক্ষণ প্রসঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির তাদের গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করে জানায়, নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার একদিকে রাষ্ট্র সংস্কার ও নতুন রাজনৈতিক ও সামাজিক বন্দোবন্তের মাধ্যমে 'নতুন বাংলাদেশ' গড়ার অভূতপূর্ব সুযোগ তৈরি হয়েছে, যেখানে অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতার বহুমাত্রিক ভিত্তি ও অংশীজনের ভূমিকা রূপান্তরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
সরকারের কৌশল ও রোডম্যাপ নেই উল্লেখ করে সংস্থাটি জানায়, সরকারের চলার পথে বহুমুখী চ্যালেঞ্জ ও ঝুঁকি রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর অর্পিত দায়িত্ব বাস্তবায়নে যথাসময়ে প্রয়োজনীয় কৌশল ও রোডম্যাপ প্রণয়নের সুযোগ নেওয়া হয়নি, যা এখনো অনুপস্থিত।
আন্দোলনে সহিংসতার বিচার ও সরকারের উপদেষ্টা নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক আছে উল্লেখ করে তারা বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংঘটিত সহিংসতার বিচারের উদ্যোগ নেওয়া হলেও এই প্রক্রিয়া ধীরগতিতে চলছে। সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণে অ্যাড- হক প্রবণতা, উপদেষ্টা পরিষদ গঠন ও দায়িত্ব বণ্টনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বিতর্কিত হয়েছে। প্রশাসন পরিচালনায় সরকারের দক্ষতা ও কর্মপরিকল্পনার ঘাটতি লক্ষ করা যায়। সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারে দায়িত্বশীলদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা প্রকাশ পেয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর পরিবর্তন করা হয়েছে।
সরকার পতনের পর বিভিন্ন জায়গায় দখল বাণিজ্য নিয়ে টিআইবির গবেষণায় বলা হয়, প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে দখল ও আধিপত্য বিস্তারের সংস্কৃতি এখনো চলমান। একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী ও দলীয়করণের পরিবর্তে আরেকটি গোষ্ঠীর প্রতিস্থাপন/ হাতবদল হয়েছে বলে লক্ষ করা যায়। কর্তৃত্ববাদ পতনের ক্ষেত্রে আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্বে ইতিবাচক ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকলেও পরবর্তী সময়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রামে কেন্দ্রীয় কর্তৃত্ব সত্ত্বেও শান্তি-শৃঙ্খলা নিশ্চিতে প্রত্যাশিত পর্যায়ে সেনাবাহিনীর ভূমিকার ঘাটতি লক্ষ্য করা যায়।
টিআইবির গবেষণায় আরও দেখা যায়, রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন অংশীজনের পক্ষ থেকে সংস্কারের ক্ষেত্রে সরকারকে প্রয়োজনীয় সময় দেওয়ার প্রশ্নে ধৈর্যের ঘাটতি লক্ষণীয়। গণমাধ্যমের ওপর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আক্রমণ ও হুমকি-হামলাসহ কোনো কোনো গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানকে বন্ধ করার তৎপরতা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর হুমকি হিসেবে দেখা দিচ্ছে। সহিংসতা ও বলপ্রয়োগের কারণে জেন্ডার, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও নৃতাত্ত্বিক বৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে।
গবেষণায় আরও বলা হয়, ভারত কর্তৃক কর্তৃত্ববাদ পতনের বাস্তবতা মেনে নিয়ে নিজেদের ভুল স্বীকারে ব্যর্থতা ও তার কারণে অপতৎপরতার ফলে ভারতের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপোড়েনে সরকার ও দেশের জন্য ঝুঁকি বেড়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি মনোভাব ইতিবাচক হলেও প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক সহায়তা, বিশেষ করে বিশ্বব্যাংক, এডিবি ও আইএমএফ এর মতো সংস্থার ঋণ সহায়তা-সংশ্লিষ্ট শর্তাবলি ও বিশেষ করে ইতোমধ্যে সুদসহ ঋণ পরিশোধের অতিরিক্ত দায় সৃষ্টি করবে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
পাখির চোখে তাকালে মনে হবে সবুজের এক কার্পেট গোটা এলাকায় বিছিয়ে রাখা হয়েছে। চারদিকে উঁচু নিচু পাহাড় আর সবুজের সমারোহ। বান্দরবান জেলার কোন উঁচু স্থান বা ভবন থেকে তাকালে এমন নজরকাড়া দৃশ্য বিমোহিত করবে যে কাউকে। বান্দরবানের লামার মিরিঞ্জা পাহাড় যেন বাংলার ‘ভূ-স্বর্গ’।
মিরিঞ্জা পাহাড় এখন পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনা হয়ে উঠেছে। বর্তমান সময়ে এটি এখন ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র।
বান্দরবান জেলার দক্ষিণে- লামা, আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা, পশ্চিমে- কক্সবাজারের রামু ও চকরিয়া এবং চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলা, উত্তরে-বান্দরবানের সুয়ালক ইউনিয়ন, পূর্বে-বান্দরবানের থানছি ও রুমা উপজেলা। রাত হলে মিটমিট করে জ্বলে উঠে সমগ্র এলাকার দূরের আলো গুলো। আলো আঁধারের এমন দৃশ্য কাছে টানে যে কাউকেই।
বান্দরবানে দিনদিন বিকশিত হচ্ছে পর্যটন শিল্প। তরুণ উদ্যোক্তাের হাতে গড়ে উঠছে নতুন নতুন পর্যটন স্পষ্ট। সঠিক প্রচার প্রচারণায় প্রকৃতির অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে চায় বান্দরবানের তরুণ উদ্যোক্তারা। সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে স্থানীয় তরুণ উদ্যোক্তা এগিয়ে এসে বিনিয়োগ করছে নতুন নতুন পর্যটন স্পটে।
বান্দরবানের পর্যটন শিল্পে নতুনভাবে যোগ হয়েছে বেশ করেকটি পর্যটন স্পট। পর্যটন সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে, লামা উপজেলার মিরিঞ্জা পাহাড়ে গড়ে উঠছে নতুন নতুন রিসোর্ট, কটেজ ও ভিউ পয়েন্ট। মিরিঞ্জা পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে দেখা যায় চারিদিকে সবুজে ঘেরা শুধু পাহাড় আর পর্বত। মেঘ ও কুয়াশাচ্ছন্ন পাহাড়গুলোর সঙ্গে আকাশের মিতালি যেকোনো পর্যটকের নজর কেড়ে নিবে। বসে বসে বিরক্তহীন দিন-রাত কাটিয়ে দেওয়া যাবে এই পাহাড়ের চূড়ায়। দেখা যাবে লামা ও আলীকদম উপজেলাসহ কক্সবাজার জেলার সুদূরের বিস্তীর্ণ এলাকাসমূহ।
চারিদিকে সবুজ, উঁচু-নিচু পাহাড়। পূর্বদিকে তাকালেই লামা উপজেলা শহর। আরেকটু দূরে তাকালে আলীকদম উপজেলা এবং পশ্চিমে চোখ ফেললেই কক্সবাজার জেলা। রাত হলে দূরের বাতির আলোগুলো মিটমিট করে জ্বলে উঠে। সবই যেন শিল্পীর তুলিতে আঁকা ছবি।
মিরিঞ্জা পাহাড়ে দাঁড়িয়ে সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১ হাজার ৮শ ফুট উঁচুতে অবস্থিত লামা উপজেলার পর্যটন স্পটসমূহে বসে সময়ের ব্যবধানে দেখা যাবে পূর্বদিকের সূর্যোদয় এবং পশ্চিম আকাশে সূর্য হেলে পড়ার দৃশ্য। প্রতি মুহূর্তে ভিন্ন ভিন্ন রক্তিম অবয়ব ধারণ করে এখানের পর্যটন স্পটগুলো।
বান্দরবান জেলা শহর থেকে ৮৬ কিলোমিটার ও কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা হতে ২৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত লামা উপজেলায় মিরিঞ্জা পাহাড়। উপজেলা শহর থেকে মাত্র ৭ কিলোমিটার দূরে চকরিয়া-লামা সড়কের পাশে এই মিরিঞ্জা পাহাড় পর্যটন কেন্দ্রের অবস্থান। সেখানে বসবাসরত ম্রো, মারমা, ত্রিপুরাসহ ১১টি ভাষাভাষীর জনগোষ্ঠীর কৃষ্টি, সংস্কৃতি দেখার সুযোগও পাওয়া যায় পাহাড়ের আশেপাশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর পাড়াগুলো থেকে।
সম্প্রতি নান্দনিক ও নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর চোখ জুড়ানো সবুজ প্রকৃতি এবং রোমাঞ্চকর লামার মিরিঞ্জা পাহাড় এলাকা পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। এখানকার প্রাকৃতিক রূপবৈচিত্র্য ও মেঘ-পাহাড়ের লুকোচুরি খেলা উপভোগ করতে প্রতিদিনই হাজার হাজার সৌন্দর্য পিপাসু পর্যটকের আগমন ঘটছে। এসব পর্যটকদের সেবা দিতে ইতিমধ্যে গড়ে উঠেছে মিরিঞ্জা ভ্যালি , মারাইংছা হীল , সানসেট , মেঘবেলা , ডেঞ্জার হীল , টপ পয়েন্ট ভিউ , চুংদার বক, সবুজ দিগন্ত রিসোর্ট, মারাইংচা ওয়াইল্ডসহ বেশ কয়েকটি রিসোর্ট। এসব রিসোর্টের কর্টেজ , জুম ঘর ও তাবুতে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক রাত্রি যাপন করে প্রকৃতির রূপসুধা উপভোগ করছেন।
মিরিঞ্জা ভ্রমণ শেষে চাইলে পর্যটকরা ঘুরে আসতে পারে লামা শহর থেকে। এখানে লামা পৌরসভা কার্যালয় সংলগ্ন এলাকায় প্রকৃতির নিবিড় সান্নিধ্যে গড়ে উঠেছে তং থমাং রিসোর্ট এন্ড রেস্টুরেন্ট। এসি এবং নন এসি রুম সার্ভিসসহ রয়েছে থাই চাইনিজ ও হরেক রকমের বাংলা খাবারের ব্যবস্থা। কলেজ সংলগ্ন নুনারঝিরি এলাকায় রয়েছে অন্যন্য রিসোর্ট। এখানেও একইভাবে থাকা খাওয়ার সু-ব্যবস্থা রয়েছে। লামা বাজারে থাকা-খাওয়ার জন্য রয়েছে ফুড হিল ও কুটুমবাড়ী রেস্টুরেন্ট এবং আবাসিক হোটেল সী-হীলসহ কয়েকটি হোটেল। এছাড়া রয়েছে সুখিয়া ভ্যালি, রিভার ভিউ, রিভার হীলসহ আরো কয়েকটি রিসোর্ট। লামা বাজার ঘেষে বয়ে গেছে পাহাড় কন্যা স্রোতস্বীনি মাতামুহুরী। চাইলে নৌকা যোগে এ নদী ভ্রমণে যেতে পারেন পর্যটকরা। মাতামুহুরীর বাঁকে বাঁকে প্রকৃতির যে অপার সৌন্দর্য, তা প্রত্যেকটি সৌন্দর্য্য পিপাসু মনকে বিমোহিত করবে।
বাংলাদেশের যে কোনো জায়গা থেকে সহজেই এখানে আসা যায়। ঢাকা থেকে সরাসরি শ্যামলী এন.আর ট্রাভেলস্ এবং হানিফ বাস সার্ভিসে লামা-আলীকদমের গাড়িতে রাতে রওয়ানা দিয়ে ভোরে লামা মিরিঞ্জা এলাকায় নামতে হবে। এছাড়া চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের চকরিয়া নেমেও যাত্রীবাহী বাস কিংবা জিপে করে আসা যায়। তবে আসার পূর্বে পছন্দের রিসোর্ট বুকিং দিয়ে আসতে হবে।
তিন পার্বত্য জেলা আঞ্চলিক ও জাতীয় রাজনীতির কারণে প্রায়ই পাহাড় অশান্ত থাকে। তাই অনেক সময় পাহাড়ে পর্যটকদের আগমন বন্ধ রাখেন প্রশাসন। নিরাপত্তা ইস্যুতে গত ১ মাস যখন তিন পার্বত্য জেলায় পর্যটক আসা-যাওয়া নিষেধাজ্ঞা ছিল, তখনও লামা উপজেলা ছিল উন্মুক্ত। বিশেষ করে লামা সীমান্তবর্তী কোন উপজেলা না হওয়ায় এখানের পরিবেশ থাকে সবসময় শান্ত। কখনো সাম্প্রদায়িক বা জাতিগত দাঙ্গা হয়নি। এ যেন সব ধর্ম ও বর্ণের মিল বন্ধনের চমৎকার উদাহরণ।
সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা পেলে আবারও ঘুরে দাঁড়াবে প্রকৃতির অপার সুন্দর পার্বত্য জেলা বান্দরবানের সম্ভাবনাময় পর্যটন শিল্প। তাই আতঙ্ক না ছড়িয়ে, সঠিক প্রচার প্রচারণায় প্রকৃতির অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে চায় বিনিয়োগকারীরা।
লামা উপজেলার সুখীয়া ভ্যালি স্বত্বাধিকারী মো. জাহেদুল হাসান বলেন, বান্দরবানের জেলা ব্রেন্ডিং পর্যটন। এখানে পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে আমরা তরুণ উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ করছি। তাই এ পর্যটন শিল্পকে বাঁচাতে সবারই এগিয়ে আসা উচিত। সবার ইতিবাচক প্রচার প্রচারণা পর্যটন শিল্পের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
মারইংছা হিলের ব্যাবস্থাপক কায়সার আহমেদ টিটু বলেন, লামা উপজেলার মিরিঞ্জা পাহাড়ে পর্যটকদের জন্য কোনো ঝুঁকি নেই। সীমান্তবর্তী উপজেলা না হওয়ায় এখানে কোন আতঙ্কের পরিবেশ নেই। এছাড়া উপজেলা সদর ও থানা খুব কাছে হওয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতা চোখে পারার মতো। যে কেউ চাইলে নির্বিঘ্নে মিরিঞ্জা পাহাড়ে ভ্রমণে আসতে পারেন। কম খরচে বান্দরবানে সবচেয়ে ভালো মানের সেবা দিতে আমরা সর্বদা প্রস্তুত।
লামা উপজেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান চৌধুরী বলেন, মিরিঞ্জা পাহাড় একটি সম্ভাবনাময় পর্যটন এলাকা। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পানি, বিদ্যুৎ ও রাস্তার ব্যবস্থাসহ পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় টুরিস্ট পুলিশের ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে সমন্বয় ও যোগাযোগ করা হয়েছে। শীঘ্রই এসবের সুফল পাওয়া যাবে।
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় মামার কোদালের আঘাতে আহত ভাগিনা হাফিজুর রহমানের (৪০) মৃত্যু হয়েছে। হত্যার অভিযোগে দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকালে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
রোববার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের রমণীগঞ্জ এলাকায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষে তিনিসহ ৬জন আহত হন। মৃত হাফিজার রহমান ওই গ্রামের মৃত আপতার উদ্দিনের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের রমণীগঞ্জ গ্রামের আহাদুলের সাথে তারই আপন ভাগিনা হাফিজার রহমানের জমি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। রোববার তারই জেরে প্রথমে কথা কাটাকাটি পরে তা সংঘর্ষে রুপ নেয়। এতে মামা আহাদুলের কোদালের আঘাতে ভাগিনা হাফিজুরসহ উভয় পক্ষে ৬জন আহত হয়েছেন।
স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। ভাগিনা হাফিজুর রহমানসহ তার পক্ষের আহত চার জনের মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকরা তাদেরকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সকালে ভাগিনা হাফিজুর রহমানের মৃত্যু হয়।
ভাগিনার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে মামার পক্ষে হাতীবান্ধা হাসপাতালে ভর্তি থাকা শহিদুল ইসলাম (৩৮) ও সৌখিন ইসলাম (১৮) নামে দুইজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে নিহতের স্বজনরা।
হাতীবান্ধা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুন্নবী জানান, হাফিজার রহমানকে হত্যার ঘটনায় দুইজনকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।