ডিম ছেড়ে দুর্বল মা মাছ, শিকার রোধে সতর্ক প্রশাসন

  • আবদুস সাত্তার, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম চট্টগ্রাম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

হালদায় মাছ শিকার রোধে টহল দিচ্ছে প্রশাসন / ছবি: বার্তা২৪

হালদায় মাছ শিকার রোধে টহল দিচ্ছে প্রশাসন / ছবি: বার্তা২৪

এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে ডিম ছাড়ার কারণে দুর্বল হয়ে পড়েছে মা মাছ। ফলে মাছগুলো ধরতে জাল বা অন্য কোন ফাঁদের প্রয়োজন পড়ে না, হাত দিয়েই ধরা যায়। অনেক সময় ডিম ধরার জালেও আটকে যায় দুর্বল মা মাছ।

এসব মা মাছকে রক্ষার জন্য রোববার (২৬ মে) সকাল থেকে জরুরি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে প্রশাসন।

বিজ্ঞাপন

এর আগে শনিবার (২৫ মে) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত ডিম সংগ্রহ করা হয়েছে। হালদা নদীতে ২৩০টি নৌকায় ৭ হাজার কেজি মা মাছের ডিম পেয়েছে জেলেরা। রোববার থেকে জেলেরা প্রাপ্ত ডিম থেকে রেণু ফুটানোর কাজে ব্যস্ত।

হালদা পাড়ের ডিম সংগ্রহকারী রেকন মাঝি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘হালদায় ডিম ছাড়ার পর মা মাছগুলো চিত হয়ে ভাসে। প্রায় আধা মরা হয়ে যায় মাছগুলো। স্থানীয় অনেকে তখন এসব মাছ শিকার করার চেষ্টা করেন। তারা জানে এটি বড় অন্যায়। কিন্তু কে শুনে কার কথা।’

বিজ্ঞাপন

হালদা নদীর রামদাশ হাট ঘাটের কামাল সওদাগর বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘মা মাছ শিকারীদের আমরাও বাধা দিই। এখন প্রশাসন সজাগ। এরপরও অনেকে চুরি করার চেষ্টা করে। কুশ, জাল বা ঘেরা দিয়ে মাছ শিকারের চেষ্টা করে।’

এ ব্যাপারে হালদার গবেষক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালেয়র প্রাণী বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া রাতে হালদা পাড়ে বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ডিম ছাড়ার পর মা মাছ অসম্ভব দুর্বল হয়ে পড়ে। অনেক মা মাছ বেহুশ অবস্থায়ও থাকে। কারণ ডিম ছাড়ার জন্য একটি মাছে অনেক শক্তির প্রয়োজন হয়।’

হাটহাজারী উপজেলা ইউএনও রুহুল আমিন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘রাতে হালদা নদীতে পাহারায় ছিল মৎস্য অফিসের লোকজন। সকাল থেকে নদীতে টহল দেওয়া হচ্ছে। দুটি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মোবাইল টিম রাখা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘কেউ যদি কোনো ধরনের অন্যায় কাজ করে সাথে সাথে জেল। মা মাছ ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। মা মাছের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে যে শিকার করবে তার রেহায় হবে না।’

হাটহাজারী মৎস্য কর্মকর্তা আহজার উদ্দিন বার্তা২৪.কমকে জানান, ‘ডিম ছাড়ার পর মা মাছকে রক্ষার জন্য আমরা নদীতে টহলে আছি।’

এর আগে শুক্রবার (২৪ মে) সন্ধ্যার পর থেকে বজ্রসহ প্রবল বর্ষণ শুরু হলে নদীর পাড়ে অবস্থান নেন ডিম আহরণকারীরা। বর্ষণের ফলে হালদার সঙ্গে সংযুক্ত খাল, ছড়া ও নদীতে ঢলের সৃষ্টি হয়। এতে নদীতে ডিম ছাড়ে মা মাছ।

এদিকে, মাছুয়া ঝর্ণা, শাহ মাদারি এবং মদুনা ঘাটসহ তিনটি হ্যাচারির ১০৮টি কংক্রিট ও ১০টি প্লাস্টিকের কুয়ায় হালদার ডিম সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এখানেই ডিম থেকে ফুটানো হচ্ছে রেণু।