মাদক নিয়ন্ত্রণে নাগরিকদের সহায়তা চান চট্টগ্রামের ডিআইজি

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন

আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন

মাদক নিয়ন্ত্রণের যুদ্ধে জয়ী হওয়ার লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ প্রতিটি নাগরিকদের সহায়তা চাইলেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক।

তিনি বলেছেন, ‘আমরা মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করে আইনের সন্মুখীন করেছি, অনেকে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে। এমনকি এর বিস্তার ও প্রভাব রোধে কাজ করেছি। এরপরও পুরোপরিভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি। কারণ মদকের ডিমান্ড থাকায় কোনো না কোনোভাবে মাদকসেবীদের হাতে পৌঁছে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। পরিবার, আত্মীয়স্বজন, শিক্ষার্থী, এলাকার ইমামসহ সবাই সমন্বিতভাবে কাজ করলে এই যুদ্ধে জয়ী হতে পারব।’

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২৬ জুন) দুপুরে নগরীর মোটেল সৈকতে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে এক আলোচনায় সভায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। মাদকদ্রব্যের নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের চট্টগ্রাম অঞ্চল এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

ডিআইজি বলেন, ‘সহনীয় মাত্রায় মাদকদ্রব্যের প্রয়োজন রয়েছে। না হয় চিকিৎসা বিজ্ঞানের মাধ্যমে এটি আরও আগে বন্ধের নির্দেশ আসতো। কিন্তু আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা সাময়িক লাভের আশায় সারারাত জেগে পড়াশোনা করার জন্য ইয়াবা ট্যাবলেট গ্রহণ করছে। অনেক মেয়ে ক্ষুদ্রামন্দা কাটানোর জন্য জিরো ফিগারের আশায় ইয়াবা ট্যাবেলট নিচ্ছে। কিন্তু তারা বুঝতে পারছে না, এটি ভবিষ্যতে কত বড় ক্ষতি বয়ে আনতে পারে। তারা অনেক সময় না চাইলেও সহপাঠীদের প্ররোচণায় মাদকদ্রব্যের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। এ জন্য অভিভাবক ও শিক্ষকদের ভূমিকা রাখতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/26/1561543445569.jpg

মাদক নিয়ন্ত্রণে কৌশলের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমরা বরাবরই বলে এসেছিলাম মাদকে আসক্তদের চিকিৎসা ব্যবস্থা করার জন্য। এ লক্ষ্যে সারাদেশের দুই লাখ পুলিশ সদস্যের একদিনের বেতন কাটা হয়েছিল। দেশের প্রতিটি উপজেলার মাদকসেবীদের তালিকাও সংগ্রহ করি। কিন্তু দেশে পর্যাপ্ত চিকিৎসা কেন্দ্র না থাকায় এ উদ্যোগে সফলতা আসেনি। বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। সেখানে উল্টো মাদক সেবন করানো হয়, না হয় মাদকেসবীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। আমরা সরকারের কাছে পর্যাপ্ত চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপনের অনুরোধ করেছি।’

কক্সবাজারভিত্তিক মাদকের প্রসার নিয়ে ডিআইজি বলেন, ‘মিয়ানমার আমাদের ওপর ১২ লাখ রোহিঙ্গা চাপিয়ে দিয়ে অমানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন। তারা (রোহিঙ্গা) আমাদের বন, পরিবেশ, সার্বভৌমত্বে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এরপরও আমরা মিয়ানমার থেকে ইয়াবা এনে দেশের কোটি কোটি টাকা পাচার করে দিচ্ছি। যুবসমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছি। আমাদের দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে। যদি আমরা মাদকদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ করতে না পারি, যতই উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা হোক না কেন সব মুখ থুবড়ে পড়বে। আপনারা তথ্য দেন আমরা তথ্যদাতার পরিচয় গোপন রাখব।’

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. কামাল উদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন- অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মো. হাবিবুর রহমান, সিভিল সার্জন ড. মো. আজিজুর রহমান সিদ্দকী, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের উপপরিচালক ড. কাজী গোলাম মাওলা, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো, মুজিবুর রহমান পাটওয়ারী, র‌্যাব-৭ এর মেজরমো. মেহেদী হাসন।

পরে দিবসটি উদযাপনের রচনা ও চিত্রাঙ্কন বিজয়ীদের পুরস্কার দেওয়া হয়। আলোচনা অনুষ্ঠানের পূর্বে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ প্রচার নিয়ে র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়।