৫ টনের স্থানে ব্রিজ দিয়ে চলছে ৪০ টন বোঝাই ট্রাক

  • কান্ট্রি ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

মেহেরপুর: মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের আলমপুর ব্রিজ দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় চলছে যানবাহন। ব্রিজটির বিভিন্ন স্থানে ফাটলের কারণে বেইলি ব্রিজ স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে ৫ টন ওজন নিয়ে যানবাহন চলাচলের অনুমতি থাকলেও ৪০ টনের বেশি মালামাল নিয়ে চলছে ১০ চাকার ট্রাক। ফলে যেকোনো সময় ব্রিজটি ভেঙে নদীগর্ভে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, গেল ৩১ জুলাই মেহেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) আলমপুর ব্রিজের উপরে বেইলি ব্রিজ স্থাপন করে। ব্রিজের গার্ডারসহ বিভিন্ন স্থানে ফাটলের কারণে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। বেইলি ব্রিজ স্থাপন করে সড়কটিতে ছোট ছোট যানবাহন চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সওজ। তবে ওই ব্রিজের উপর দিয়ে কোনো অবস্থায় ৫ টনের অধিক ওজনের যানবাহন যেন চলাচল করতে না পারে সে ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। কিন্তু সওজের নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করে প্রতিদিনই ব্রিজের উপর দিয়ে অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই যানবাহন চলাচল করছে। বিশেষ করে পাথর বোঝাই ১০ চাকার ট্রাক চলাচলের কারণে যেকোনো সময় ব্রিজটি ভেঙে নদীতে পড়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।

বিজ্ঞাপন

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/13/1534137702985.jpg
সওজ সূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কে ৬ চাকা বিশিষ্ট যানবাহনে ২২ মেট্রিক টন, ১০ চাকায় ৩০ মেট্রিক টন এবং ১৪ চাকার পরিবহনে ৪০ মেট্রিক টন মালামাল বহন করা যাবে। তবে অনুমোদিত এই মাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত পরিমাণ পণ্য পরিবহনের ফলে ব্রিজের পাশাপাশি সড়কেরও মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।

জানা গেছে, নির্মাণ খাতের চাহিদা মেটাতে প্রতিদিনই উত্তরবঙ্গ থেকে মেহেরপুর জেলায় আনা হচ্ছে পাথর। ১০ চাকার একটি ট্রাকে অন্তত ৩৮-৪০ মেট্রিক টন পাথর বোঝাই করে চলাচল করে। অথচ ওই সড়কের আলমপুর ব্রিজের উপর দিয়ে অনুমোদিত ওজন মাত্রা ৫ মেট্রিক টন। এ বিষয়ে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড টাঙিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ট্রাক ছাড়াও এ সড়ক দিয়ে মেহেরপুর-রাজশাহী, মেহেরপুর-কুষ্টিয়া, মেহেরপুর-ঢাকাসহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বাস ট্রাক, মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন প্রকার যানবাহন চলাচল করে।

বিজ্ঞাপন

১০ চাকার ট্রাক চালক রংপুরের সাহেব আলী বলেন, ‘লালমনিরহাট ও পঞ্চগড় থেকে পাথর নিয়ে মেহেরপুর জেলায় আসা-যাওয়া করছি কয়েক মাস থেকে। ব্রিজের উপর থেকে পণ্য পরিবহনে ঝুঁকি জেনেও আমরা এ পথে আসা-যাওয়া করছি। কারণ মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক দিয়ে উত্তরবঙ্গ থেকে সহজেই মেহেরপুর প্রবেশ করা যায়। এছাড়া কুষ্টিয়া থেকে ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গা ঘুরে মেহেরপুর আসতে হলে অনেক বেশি পথ পাড়ি দিতে হবে। সময় ও খরচ বাঁচাতে আমরা ঝুঁকিপূর্ণ পথেই চলাচল করছি।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/13/1534137723449.jpg

মেহেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৪-১৯৬৫ সালে পাকিস্তান আমলে ব্রিজটি তৈরি হয়। এর দৈর্ঘ্য ২১ মিটার। মাঝে দুটি গার্ডার। এতে পূর্ণাঙ্গ ব্রিজের সুবিধা নেই। কিন্তু রডের পরিমাণ বেশি থাকায় ব্রিজটি এতদিন ধরে ব্যবহার করা যাচ্ছে।

মেহেরপুর সওজ উপ সহকারী প্রকৌশলী সাধন কুমার জানান, ব্রিজটির ফাটল থাকায় বেইলি ব্রিজ স্থাপন করা হয়। এতে শুধুমাত্র কম ওজন নিয়ে চলাচলকারী যানবাহন চলতে পারবে। কিন্তু অতিরিক্ত পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করায় ব্রিজটি ভেঙে পড়তে পারে। নতুন ব্রিজ নির্মাণের জন্য ব্রিজ স্থলের মাটি পরীক্ষাসহ আনুষঙ্গিক কাজ সেরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য পাঠানো হয়েছে। ব্রিজটি নির্মাণের জন্য দুই বছর সময় লাগতে পারে। ৫ টনের বেশি ওজনের যানবাহন চলাচল না করতে সকলে প্রতি আহ্বান জানান তিনি।