সড়ক-নৌপথে পশুবাহী যানবাহনে চাঁদাবাজি!
লক্ষ্মীপুর: আগামী ২২ আগস্ট কোরবানির ঈদ। এ দিন আল্লাহের সন্তুষ্টির জন্য কোরবানি দেয়া হবে উট-গরু-ছাগল-ভেড়া। আর এ লক্ষেই এখন সারাদেশে কেনাবেচা হচ্ছে এসব পশু। কিন্তু এখনো লক্ষ্মীপুরে জমে ওঠেনি কোরবানির পশুর হাট। তবে আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে গরুর হাটগুলো জমে উঠবে বলে আশা করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীদের ধারণা, জেলার বাইরে যারা ব্যবসা ও চাকরি করছে তারা এখনো এলাকায় আসেনি। যার কারণে গরুর হাট এখনো জমে ওঠেনি।
এছাড়া পশুবাহী যানবাহন থেকে সড়ক ও নৌপথে নীরবে চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।
সদর উপজেলার চাঁদখালী, জমিদারহাট, রহমতখালী, ভবানীগঞ্জ, বসুরহাট, পোদ্দার বাজার, মোল্লারহাট, পুকুর দিয়া, টুমচর, জকসিন ও লক্ষ্মীপুর পৌর গরুর হাটে ক্রেতাদের আনাগোনা দেখা যাচ্ছে না। জেলার রায়পুর, রামগঞ্জ, কমলনগর ও রামগতিতেও একই চিত্র দেখা যাচ্ছে।
এদিকে খাবার সংকটের কারণে ব্যবসায়ীরা আগে গরু কিনে ঝুঁকি নিতে চাননি। যার কারণে এখনো জেলার বাইরে থেকে গরু আসেনি। ফলে হাটে গরু কম দেখা যাচ্ছে। দুই-একদিনের মধ্যে গরু আসবে বলে জানিয়েছেন কয়েকজন ব্যবসায়ী। বাজারে গরুর দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতারা কিনতে চাচ্ছে না।
অন্যদিকে, সদরের শাকচর, টুমচর ও চররমনী মোহন এলাকাসহ জেলার প্রায় ২৫০ খামারি প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত সময় পার করছে। ওই সব খামারে গরুকে খাওয়ানো হয় চালের গুড়া, কুয়া, চাল-ডাল খিচুড়ি, ভাতের মাড় ও আলুসহ বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক খাবার।
এসব খামারিরা প্রায় ৪ মাস আগে বিভিন্ন বাজার থেকে গরু কিনে আনেন কোরবানির হাটে বিক্রি করার আশায়। এসব গরু সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে কোরবানির হাটে ভালো দাম পাওয়া যায়। তবে এলাকায় এবার গো-খাদ্যের অভাব রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যবসায়ী অভিযোগ করে জানান, লক্ষ্মীপুরে প্রবেশ করলেই পশুবাহী যানবাহন থেকে নীরবে চাঁদাবাজি চলছে। যার কারণে গন্তব্য পর্যন্ত পৌঁছাতে পশুর দাম বেশি পড়ে যাচ্ছে। এছাড়াও খাবার সংকটের কারণে আগে কোনো ব্যবসায়ী গরু কিনছে না। যার কারণে হাটের বাইরে এখনো গরু দেখা যাচ্ছে না।
পৌর গরু হাটের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, বাজারে ক্রেতা কম থাকায় এখন পর্যন্ত গরু বিক্রি করতে পারেননি তারা।
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ মুকবুল হোসেন জানান, এ জেলায় প্রায় ২৫০টি গরুর খামার রয়েছে। এসব খামারে ১৮ হাজার ৮১৩ টি গরু প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে মোটাতাজাকরণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি দুই হাজার মহিষ, ছাগল ও ভেড়াও কোরবানির হাটে বিক্রির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া বাইরের গরু আসলে জেলার চাহিদা মেটানো যাবে।
লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপার আ স ম মাহাতাব উদ্দিন জানান, চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। জেলার বিভিন্ন স্থানে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কোনো ভাবেই চাঁদাবাজদের প্রশ্রয় দেয়া হবে না।