মেহেরপুরে পশুর দরদামে সন্তুষ্ট ক্রেতা-বিক্রেতারা
মেহেরপুর: মেহেরপুর জেলার পশুর হাটে এবার আমদানি হচ্ছে বিপুল পরিমাণ গরু ও ছাগল। স্থানীয়দের লালন-পালনকৃত গরু-ছাগলগুলোই বিক্রির জন্য হাটে তোলা হচ্ছে। দরদামে ক্রেতা-বিক্রেতারা সন্তুষ্ট থাকলেও পশু আমদানির চেয়ে ক্রেতার সংখ্যা কম বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
হাট ঘুরে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুর জেলার সবচেয়ে বড় পশুর হাট বসে বামন্দী-নিশিপুরে। এবার বামন্দী-নিশিপুর হাটে ব্যাপক গরু-ছাগল উঠেছে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের ব্যবসায়ীরা গরু-ছাগল কিনে নিয়ে যাচ্ছে। প্রতি কেজি মাংস ৪০০-৫০০ টাকা আনুমানিক দর নির্ধারণ করে গরু ক্রয় করছে ব্যাপারীরা। তিন থেকে সাড়ে তিন মণ ওজনের গরু ক্রেতাদের বেশি পছন্দ। তবে ব্যক্তি পর্যায়ে বড় আকারের গরু ক্রয় করা না হলেও বাইরের জেলার ব্যাপারীরা বড় গরু ক্রয় করছে। গরুর বাজার দরে সন্তোষ প্রকাশ করেছে ক্রেতা-বিক্রেতারা।
গাংনী উপজেলার ছাতিয়ান গ্রামের ইকরামুল হোসেন বলেন, ‘এক বছর ধরে একটি এঁড়ে গরু পালন করে আজ বামন্দীর হাটে তুলেছি। ৬ মণ মাংস হতে পারে। আমি এক লাখ ৩০ হাজার টাকা দাম চাচ্ছি। ব্যাপারীরা ১ লাখ ১০ হাজার টাকা দর বলছে।’
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির গরু ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘১০-১৫ বছর ধরে এই হাট থেকে গরু কিনছি। এবার সর্বোচ্চ গরু আমদানি দেখা যাচ্ছে। ন্যায্যমূল্যেই আমরা পর্যাপ্ত সংখ্যক গরু ক্রয় করছি।’
এদিকে একই চিত্র ছাগল বাজারেও। প্রতি কেজি মাংস ৬৫০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা আনুমানিক মূল্য ধরেই কেনাবেচা হচ্ছে। তবে গরুর চেয়ে ছাগল আমদানি কম বলে জানান ক্রেতারা।
বামন্দী-নিশিপুর গো-হাটে মেহেরপুর জেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জেলার গরু কেনাবেচা হয়। হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতারা দরদামে সন্তোষ প্রকাশ করলেও ঢাকার হাটে গরু বিক্রিতে ইচ্ছুক ব্যাপারীরা দুশ্চিন্তায় রয়েছে।
গোয়াল গ্রামের গরু ব্যাপারী আকরাম হোসেন বলেন, ‘ঋণ নিয়ে ১৬টি গরু ক্রয় করেছি। কয়েক দিনের মধ্যে ঢাকার পশুহাটে বিক্রির জন্য নিয়ে যাব। শেষ মুর্হূতে ভারতীয় গরু আনা হলে আমাদের পথে বসতে হবে।’
মেহেরপুর জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার কোরবানি উপযোগী পশুর সংখ্যা ৯৯ হাজার ২৯৬টি। জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা ৭৭ হাজার ৫৯টি।
বামন্দী-নিশিপুর হাট ইজারাদার কামাল হোসেন জানান, গত শুক্রবার থেকে গরু-ছাগল আমদানি বেশি হচ্ছে। কিন্তু হাটে আসা পশুর তুলনায় ক্রেতা কম। তবে অন্য বছরের তুলনায় এবার বেচাকেনা বেশি। গরুর বাজার দরে সন্তুষ্ট ক্রেতা-বিক্রেতারাও। আগামী শুক্রবার আরও বেশি সংখ্যক গরু-ছাগলের আমদানি হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।