আগামী বছরই বাংলাদেশে তৃতীয় সাবমেরিন কেবল

  • ইশতিয়াক হুসাইন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট 
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সাবমেরিন কেবল

সাবমেরিন কেবল

আগামী বছরেই বাংলাদেশ যুক্ত হতে যাচ্ছে তৃতীয় সাবমেরিন কেবলে। আর লক্ষ্য অর্জনে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে সরকার। মূলত ব্যান্ডউইথের চাহিদার কারণেই তৃতীয় সাবমেরিন কেবল নিয়ে তড়িঘড়ি করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এরই মধ্যে বাংলাদেশ এ সংক্রান্ত প্রস্তাবনা তৈরির কাজ শুরু করেছে। তৃতীয় সাবমেরিন কেবলে ঢুকতে নতুন কোনো কনসোর্টিয়ামে ঢোকার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। যদি তা না হয়, তাই বেসরকারি খাতের মাধ্যমেও যাতে তৃতীয় সাবমেরিন কেবলে যুক্ত হওয়া যায় সেই বিকল্পও রাখা হচ্ছে। 

বিজ্ঞাপন

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বার্তা২৪.কমকে বলেন, দেশে যে হারে ব্যান্ডউইথের ব্যবহার বাড়ছে, তাতে বর্তমানে যে পরিমান ব্যান্ডউইথ রয়েছে তা দ্রুতই শেষ হয়ে যাবে। তাই আমরা আগামী বছরের মধ্যেই তৃতীয় সাবমেরিন কেবলে যুক্ত হওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছি। শুধু পরিকল্পনা নয়, ২০১৯ সালের মধ্যেই বাস্তবিকভাবেই তৃতীয় সাবমেরিন কেবলে যুক্ত হতে কাজ চলছে। 

তিনি বলেন, এখনই পরিকল্পনা করে দ্রুত তা বাস্তবায়ন না করতে পারলে আগামী বছরের মধ্যে তৃতীয় সাবমেরিন কেবলে যুক্ত হওয়া সম্ভব হবে না। তাই সরকার এরই মধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বেসরকারি খাতকে যুক্ত করতে পারলে রাষ্ট্রীয় বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) এর সঙ্গে একটি প্রতিযোগিতা তৈরি হবে। এ ধরনের প্রতিযোগিতা এ খাতের জন্য হবে ইতিবাচক। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ প্রথম সি-মি-ইউ-৪ সাবমেরিন কেবলের সঙ্গে যুক্ত হয় ২০০৬ সালে। আগামী ৬ বছরের মধ্যে এর জীবনকাল শেষ হয়ে যাবে। এই সাবমেরিন কেবল থেকে ব্যান্ডউইথ পাওয়া যায় ৩০০ জিবিপিএস। এরপর গেল বছর দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবল সি-মি-ইউ-৫ এর সঙ্গে যুক্ত হয়। এ থেকে পাওয়া যাবে ১৫০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ।

গেল বছরের ডিসেম্বরে দেশে ব্যান্ডউইথের ব্যবহার ৫০০ জিবিপিএস অতিক্রম করে। এরপর চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে এই ব্যান্ডউইথের ব্যবহার ছিল ৮২০ জিবিপিএস। অল্প সময়ের মধ্যেই ব্যান্ডউইথের ব্যবহার অত্যন্ত দ্রুততার সাথে বাড়ছে। মূলত ৪জি চালু হওয়া, ফাইবার অপটিক সংযোগের প্রসারসহ ডিজিটালাইজেশনের প্রক্রিয়া তরান্বিত হওয়ায় ব্যান্ডউইথের ব্যবহার বাড়ছে।

২০০৮ সালে ব্যান্ডউইথের ব্যবহার ছিল মাত্র ৮জিবিপিএস। আর আজ এর ব্যবহার ৮০০ জিবিপিএস ছাড়িয়ে গিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তরুণ প্রজন্মের অনেক বেশি ডাটা কেন্দ্রিক হওয়াতেই ব্যান্ডউইথের ব্যবহার দ্রুততার সাথে বাড়ছে। বিশেষ করে এই প্রজন্মের তরুণেরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ইউটিউব প্রচুর পরিমানের ব্যবহার করছে। এর ফলশ্রুতিতে ব্যান্ডউইথের ব্যবহার বাড়ছে। তাছাড়া সরকারও ডিজিটালাইজেশনের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। আগের থেকে অনেক বেশি সরকারি সেবা এখন মিলছে অনলাইনে। এসবই ব্যান্ডউইথের ব্যবহার বাড়ার অন্যতম কারণ।

এক সময় বাংলাদেশ ভারত, ভুটান, মিয়ানমারসহ বিভিন্ন দেশে ব্যান্ডউইথ রপ্তানির পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অভ্যন্তরীণ চাহিদা বেড়ে যাওয়ায়, আগামীতে ব্যান্ডউইথ রপ্তানি করা সম্ভব হবে কিনা সে বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।