লক্ষ্মীপুর-৪: ঐক্যফ্রন্ট নয়, বিএনপি থেকে প্রার্থী চায় নেতাকর্মীরা
লক্ষ্মীপুর জেলাটি বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। নবম সংসদ নির্বাচনেও লক্ষ্মীপুরের চারটি আসন বিএনপির দখলে ছিল। দশম সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ না করায় এ আসনগুলো আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও তরিকত ফেডারেশনের দখলে ছিল। এবারো চারটি আসন ধরে রাখতে চায় বিএনপি।
জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর ও সদরের একাংশ) আসন থেকে ৯৬ ও ২০০১ সালে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নির্বাচিত হয়েছেন। পরে দুবারই উপ-নির্বাচন দিয়ে তিনি আসনটি ছেড়ে দিয়েছেন। খালেদা জিয়া বৃহত্তর নোয়াখালীর ফেনী জেলার মেয়ে হওয়ায় এই অঞ্চলটি বিএনপি অধ্যুষিত।
এদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে মনোনয়ন দিতে গিয়ে লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি ও কমলনগর) আসনটি বিএনপিকে ছেড়ে দিতে হতে পারে। তবে এ আসনটি ধরে রাখতে চায় বিএনপি। শরিক কিংবা ঐক্যফ্রন্ট নয়, আসন্ন নির্বাচনে স্থানীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকরা বিএনপি থেকেই প্রার্থী চাইছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০১ ও ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির আশরাফ উদ্দিন নিজান জয় লাভ করেন। এর আগেও এখানে একাধিকবার বিএনপি বিজয়ী হয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্যও দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক এই সংসদ সদস্য। দলীয় মনোনয়নপত্র নিয়ে মঙ্গলবার (২৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় তিনি রামগতি ও কমলনগরে আসলে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ঢল নামে।
এ আসন থেকে ঐক্যফ্রন্টের নেতা হিসেবে নির্বাচনের লক্ষ্যে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব। জাসদ থেকে তিনি এ আসনে ১৯৮৬, ১৯৮৮ ও ১৯৯৬ সালে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত কে হবেন চূড়ান্ত প্রার্থী তা এখনো নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না। তবে জেএসডির নেতাকর্মীরা ঐক্যফ্রন্টের নেতা হিসেবে আ স ম আবদুর রবকে প্রত্যাশা করছেন।
স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, তারা বিগত ১০ বছর সরকারের নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। বহু মামলা-হামলারও শিকার হতে হয়েছে। ঘর-বাড়িতে থাকতে পারেনি তারা। ভয় ও আতঙ্কে পার হচ্ছে তাদের দিনগুলো। এ সময় আশরাফ উদ্দিন নিজান তাদের পাশে ছিলেন। সাহস দিয়েছেন, সহযোগিতা করেছেন। এছাড়াও বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে রামগতি ও কমলনগরে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। এ আসনে বিএনপির বিকল্প অন্য কেউ হতে পারে না।
আশরাফ উদ্দিন নিজান বলেন, ‘রামগতি-কমলনগরের জনগণ আমাকে ভালোবেসে দুইবার এমপি নির্বাচিত করেছেন। আমি যতদিন বাঁচব, তাদের ভালোবাসা পেতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘যখন আমার হাজার হাজার নেতাকর্মী গ্রেফতার হবে, সেদিন কে তাদের দায়িত্ব নেবে? আমি আমার নেতাকর্মী ও সুহৃদদের আহ্বান জানাচ্ছি ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষ করুন। ১০ তারিখ মার্কা দেওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেব।’
প্রসঙ্গত, লক্ষ্মীপুর-৪ আসন রামগতি ও কমলনগর উপজেলা নিয়ে গঠিত। দুই উপজেলায় ১৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা রয়েছে। এখানে ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ১০ হাজার ৮৪৭ জন। এর মধ্যে নারী ১ লাখ ৫৩ হাজার ২৮১, পুরুষ ১ লাখ ৫৭ হাজার ৫৬৬ জন।