বগুড়ার ৭ আসনে মহাজোটের প্রার্থী অপরিবর্তিত
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়ার ৭টি নির্বাচনী আসনের ৫টিতে বিএনপি নতুন মুখ আনলেও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটে প্রার্থী অপরিবর্তিত রয়েছে। আওয়ামী লীগ দুইটি আসন রেখে অপর ৫টির মধ্যে ৪টি জাতীয় পার্টি এবং ১টি জাসদকে ছেড়ে দিয়েছে। মহাজোটের প্রার্থীরা সকলেই বর্তমান সাংসদ।
আসন্ন সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনে বর্তমান সাংসদ আব্দুল মান্নান এবং বগুড়া-০৫ (ধুনট-শেরপুর) আসনে বর্তমান সাংসদ হাবিবুর রহমানকে মনোনয়ন দেয়। অপর ৫টিতে জাতীয় পার্টি এবং জাসদ তাদের দলের প্রার্থী অপরিবর্তিত রেখে মনোনয়ন ঘোষণা করে।
মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিনে বগুড়া-১ এবং বগুড়া-৫ আসন ছাড়া, অন্যগুলিতে মনোনয়ন বঞ্চিতদের কেউ স্বতন্ত্র, আবার কেউ দলীয়ভাবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। বাছাই পর্বে বঞ্চিত প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিল হয়ে যায়। কারো দলীয় মনোনয়ন না থাকা, আবার কেউ শতকরা ১ ভাগ ভোটারের স্বাক্ষর দেয়নি, কেউ আবার জনপ্রতিনিধির পদ থেকে পদত্যাগ না করে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন।
বগুড়ার ৭টি আসনের মধ্যে ৫টি আসন শরিক দলকে ছেড়ে দেয়ায় মনোনয়ন প্রত্যাশী ও তাদের কর্মী সমর্থকদের মনে প্রকাশ্যে এবং ভেতরে ক্ষোভ ও অসন্তোষ রয়েছে। ফলে এই ৫টি আসনে নির্বাচনী মাঠে আওয়ামী লীগের তৃণমূল কর্মীরা নিষ্ক্রিয়। তাদের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে তেমন আলোচনা নেই। আর এ কারণে তৃণমূল নেতাকর্মীদের চাঙা করতে গত বৃহস্পতিবার (৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জেলা আওয়ামী লীগ বর্ধিত সভার আয়োজন করে।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিনের সভাপতিত্বে ওই বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। শুরুতেই সভার কারণ ব্যাখ্যা করেন মমতাজ উদ্দিন। সে সময় কয়েকজন নেতা বগুড়ার মাত্র দুটি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দেওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন। কারণ ইতোপূর্বে দলীয় মনোনয়ন পেতে জেলা সভাপতি মমতাজ উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে, জেলা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু ও মঞ্জুরুল আলম মোহন বগুড়া-৬ (সদর) আসনে, সহ-সভাপতি ডা. মোস্তফা আলম নান্নু বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসনে গণসংযোগ ও সভা-সমাবেশ করেন। কিন্তু বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনে বর্তমান সাংসদ আব্দুল মান্নান এবং বগুড়া-৫ (শেরপুর-ধুনট) আসনে বর্তমান সাংসদ হাবিবুর রহমান ছাড়া অন্য ৫টি আসন মহাজোটকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
নেতাদের হতাশার কথা শোনার পর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘কে কোথায় মনোনয়ন পেল অথবা বঞ্চিত হল তা নিয়ে ভাবার কোনো সুযোগ নেই। আওয়ামী লীগে শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। দল করতে হলে দলের সিদ্ধান্ত মানতে হবে।’
এরপর আর কেউ কথা বলেননি। পরে সর্বসম্মতভাবে প্রতিটি আসনে জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সমন্বয়ে মহাজোটের নির্বাচনী টিম গঠন করে কাজ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক টিজামান নিকেতা জানান, ক্ষোভ, হতাশা, অসন্তোষ থাকতেই পারে। সেটা নেতাদের ব্যক্তিগত বিষয়। দলীয়ভাবে ক্ষোভ প্রকাশের কোনো সুযোগ নেই। নেত্রী যাকে প্রয়োজন মনে করেছেন সেই আসনে তাকেই মনোনয়ন দিয়েছেন। মহাজোটের প্রার্থীই এখন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। তাদেরকে জয়লাভ করানোর জন্য নির্বাচনী মাঠে সবাইকে কাজ করতে হবে।