মেঘনার তীরে নৌকার জোয়ার
পদ্মা-মেঘনা-ডাকাতিয়া নদীর মিলনস্থল চাঁদপুর। এই মিলনস্থলের মেঘনা নদীর পাড়ে চাঁদপুরের ৫টি আসনে নৌকার জোয়ার লক্ষ্য করা গেছে। আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
জানা গেছে, চাঁদপুরের ৫টি আসনে আওয়ামী লীগের সুদৃঢ় অবস্থান থাকলেও বেকায়দায় রয়েছে বিএনপি। আওয়ামী লীগ থেকে চাঁদপুরের ৫টি আসনে নৌকা প্রতীকের বিজয় নিশ্চিত করে শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে চান প্রার্থীরা। তবে ভোটের অধিকার নিশ্চিত হলে জয়ী হতে পারেন বলে দাবি বিএনপি প্রার্থীদের।
চাঁদপুর-১ কচুয়া আসনে বিএনপির প্রার্থী মোশারফ হোসেন মাত্র ১ দিন প্রচারণায় ছিলেন। নতুন মুখ হওয়ায় দলের কাছেই পরিচিত নন তিনি। সেই সুযোগে কচুয়া উপজেলার উন্নয়নের রূপকার ড. মহীউদ্দিন খান আলমগীর নৌকা প্রতীকে এবারো জয়ের দ্বারপ্রান্তে। দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে জনসংযোগ অব্যাহত রেখে জয়ের লক্ষ্যে কাজ করছেন তিনি।
চাঁদপুর-২ আসন মতলব উত্তর ও দক্ষিণ উপজেলা নিয়ে গঠিত। সেখানে নিরাপত্তার অজুহাতে বিএনপির প্রার্থী ড. জালাল উদ্দিন নিজ বাড়িতে পুলিশ কর্তৃক অবরুদ্ধ হয়ে আছেন। তিনিও ঠিকমতো জনসংযোগ করতে পারছেন না।
এদিকে ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন মায়া শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থী নুরুল আমিনকে নিয়ে নৌকা প্রতীকে জনসংযোগ করছেন। এ আসনটিতে এবারো নৌকা প্রতীকের জয় দেখছে ভোটাররা।
চাঁদপুর-৩ (চাঁদপুর-হাইমচর) আসনে নৌকা-ধানের শীষের জমজমাট প্রচারণা চলছে। কিন্তু ডা. দীপু মনির ব্যাপক উন্নয়নের কাছে প্রথমবারের মতো বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া শেখ ফরিদ আহম্মেদ মানিক কতটুকু ভোট পাবেন তা দেখার বিষয়। তবে জেলা আওয়ামী লীগ ও দুই উপজেলা আওয়ামী লীগ নৌকার বিজয়ের লক্ষ্যে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। পুরুষ ভোটরদের মাঝে নারী ভোটাররা এবারো ডা. দীপু মনিকে নৌকায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করতে চায়।
চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনে সাংবাদিক শফিকুর রহমান নৌকা প্রতীক নিয়ে মাঠে থাকলেও ধানের শীষ পাওয়া আবদুল হান্নান আছেন কোর্টে। তিনি আইনি গ্যাঁড়াকলে পড়ে নির্বাচন থেকে ছিটকে গেছেন। হাইকোর্টের এক বেঞ্চ সোনালী ব্যাংকের ঋণ খেলাপি জনিত কারণে তার মনোনয়ন স্থগিত করেছে। সেই সুযোগে উঁকি দিচ্ছে সাংবাদিক সফিকুর রহমানের নৌকা প্রতীকের বিজয়। এখানে এম এ হান্নানের নির্বাচনী শোডাউনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় শত শত নেতাকর্মীর নামে মামলা রয়েছে।
চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তি) আসনে সাধারণ জনগণের মাঝে জনপ্রিয় মেজর অব. রফিকুল ইসলাম নৌকা প্রতীকে বিজয় নিশ্চিত করতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জনসংযোগ করে আসছেন। গত দশ বছরে হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি উপজেলায় ব্যাপক উন্নয়নের কান্ডারি মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম এবারো নৌকা প্রতীকের বিজয় উৎসব করতে চান।
এদিকে ধানের শীষের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হক দাবি করেন, পুলিশের ভয়ে নেতাকর্মীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। যতই পুলিশি হয়রানি করা হোক ৩০ ডিসেম্বর ভোটের পরিবেশ চান বিএনপির এই প্রার্থী।
উল্লেখ্য, চাঁদপুর জেলার ৫টি নির্বাচনী আসনে ৮টি উপজেলা, ৭টি পৌরসভা ও ৮৯টি ইউনিয়নে ৬৭৮ কেন্দ্রে ১৮ লাখ ৭ হাজার ৯৮৪ জন ভোটার রয়েছে। প্রতি কেন্দ্রে ১ জন প্রিসাইডিং, প্রতি কক্ষে ১ জন সহকারী প্রিসাইডিং ও ২ জন পোলিং অফিসার ভোট গ্রহণের কাজে নিয়োজিত থাকবে।