‘দুর্ঘটনাপ্রসূত’ আবিষ্কার এন্টিবায়োটিকের ইতিহাস



সাইফুল মিল্টন, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
পৃথিবীর প্রথম এন্টিবায়োটিক পেনিসিলিন

পৃথিবীর প্রথম এন্টিবায়োটিক পেনিসিলিন

  • Font increase
  • Font Decrease

“আমি পেনিসিলিন উদ্ভাবন করিনি বরং প্রকৃতিই তা করেছে। এটা আমার দুর্ঘটনাপ্রসূত আবিষ্কার মাত্র”—পৃথিবীর প্রথম এন্টিবায়োটিক পেনিসিলিন আবিষ্কার সম্বন্ধে এটা ছিল আবিষ্কারক বিজ্ঞানী অ্যালেকজান্ডার ফ্লেমিংয়ের সরল স্বীকারোক্তি।

সাধারণভাবে এন্টিবায়োটিক বলতে বোঝায় বিভিন্ন অণুজীব থেকে প্রাপ্ত উপাদান যা মানবদেহে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধ করে বা এগুলোকে মেরে ফেলে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের যুগান্তকারী আবিষ্কার এন্টিবায়োটিক আজ রোগ নির্মূলে বহুল ব্যবহৃত ঔষধ। বিজ্ঞানের অন্যান্য আবিষ্কারের মতো এন্টিবায়োটিক আবিষ্কারেরও আছে সুদীর্ঘ ইতিহাস।

এন্টিবায়োটিকের ইতিহাসকে আলোচনার সুবিধার্থে আমরা দুইভাগে ভাগ করতে পারি, প্রাচীন কালের ইতিহাস ও আধুনিক ইতিহাস। প্রাকৃতিক উপাদানের যে রোগ নিরাময়ের ক্ষমতা আছে, তা এন্টিবায়োটিক আবিষ্কারের বহু পূর্বে মানুষের জানা ছিল। প্রাচীনকালে মানুষ ক্ষত নিরাময়ে বিভিন্ন জৈব পদার্থ ব্যবহার করত। যেমন—
➤ গ্রিক ও ভারতীয়রা ক্ষতস্থানের সংক্রমণ রোধে ছত্রাক ও অন্যান্য উদ্ভিদ ব্যবহার করত।
➤ রাশিয়ানরা আঘাতপ্রাপ্ত স্থানের ঘা শুকাতে ঈষৎ উষ্ণ মাটি ব্যবহার করত।
➤ সুমেরীয়ও সভ্যতার সময়ে চিকিৎসকরা কচ্ছপের খোল ও সাপের চামড়া প্রতিষেধক হিসাবে ব্যবহার করত।
➤ ব্যাবিলনীয়রা ব্যাঙের পিত্ত ও টক দই দিয়ে ওষুধ তৈরি করে চোখের সংক্রমণ রোধ করত।
➤ প্রাগৈতিহাসিক আমলে সিংহলী সৈন্যরা ক্ষত নিরাময়ে অয়েল কেক ব্যবহার করত।
➤ বহু বছর আগে চীনে সয়াবিনের ছত্রাক আক্রান্ত বীজ বিভিন্ন ফোঁড়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হতো।

এন্টিবায়োটিকের আবিষ্কারক স্যার আলেকজান্ডার ফ্লেমিং ◢ 


আধুনিক এন্টিবায়োটিক আবিষ্কারে অগ্রগামী ভূমিকা রাখার জন্য চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসে স্যার আলেকজান্ডার ফ্লেমিং (১৮৮১-১৯৫৫) নামটি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি ছিলেন একাধারে চিকিৎসক, উদ্ভিদবিজ্ঞানী, ফার্মাকোলজিস্ট ও অণুজীববিজ্ঞানী (ব্যাকটেরিয়োলজিস্ট)। ১৮৮১ সালে স্কটল্যান্ডের লোচফিল নামক ছোট্ট শহরতলীতে এক কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ফ্লেমিং। সেখানে স্কুল জীবনের পাঠ চুকিয়ে ১৮৯৫ সালে লন্ডনে বড় ভাই থমাস ফ্লেমিংয়ের বাসায় ওঠেন। ভর্তি হন লন্ডন রিজেন্ট পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে যা বর্তমানে ওয়েব মিনিস্টার বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে উচ্চমাধ্যমিক পড়াশোনা শেষ করে যোগ দেন সেনাবাহিনীতে। ফ্লেমিং ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর স্কটিশ রেজিমেন্টের সদস্য ছিলেন। ১৯০১ সালে চাচার পরামর্শ ও অর্থনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের অধীনে সেন্ট মেরি হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন এবং এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন। সেখানে অসাধারণ ফলাফল করায় কলেজ কর্তৃপক্ষ তাকে সোনার মেডেল প্রদান করে। বিজ্ঞানী ফ্লেমিংয়ের ইচ্ছা ছিল সার্জন হবার কিন্তু ঘটনাচক্রে একই মেডিকেল কলেজের ইনকুলেশন ডিপার্টমেন্টে গবেষক হিসাবে যোগ দেন।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে মানুষের মৃত্যুর মিছিল গভীর দাগ কাটে তরুণ গবেষক ফ্লেমিংয়ের মনে


১৯১৪ সালে শুরু হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। আনুমানিক ৬০ মিলিয়ন ইউরোপীয় ও ৭০ মিলিয়ন সেনাসদস্য ইতিহাসের এই ভয়াবহতম সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। অ্যালেকজান্ডার ফ্লেমিং এসময়ে সেনাবাহিনীর রয়্যাল মেডিকেল কোরের সদস্য হিসাবে কর্মরত ছিলেন। নিজের চোখে দেখা মহাযুদ্ধে মানুষের মৃত্যুর মিছিল গভীর দাগ কাটে তরুণ গবেষক ফ্লেমিংয়ের মনে। চারিদিকে মৃত্যু আর মৃত্যু, মানুষ যেন মানুষের শত্রু। তার চেয়েও বড় শত্রু আহতদের মধ্যে ‘জীবাণু সংক্রমণ’ যা থেকে মানুষের জীবন বাঁচাতে চিকিৎসকরা অনেকটা অসহায় ছিল সেসময়। এটাই ফ্লেমিংকে এন্টিবায়োটিক আবিষ্কারের প্রাথমিক অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিল।

১৯১৮ সালে বিশ্বযুদ্ধ শেষে ফ্লেমিং সেন্ট মেরি হাসপাতালে ইনকুলেশন ডিপার্টমেন্টের অ্যাসিস্টেন্ট ডিরেক্টর পদে পুনর্যোগদান করে গবেষণায় মনোনিবেশ করেন। ১৯২৮ সালের এক স্নিগ্ধ বিকেলে ফ্লেমিং একমাসের অবকাশ যাপন শেষে যখন ল্যাবরেটরিতে ফিরে আসেন তখন এক আশ্চর্য জিনিস দেখেন। তিনি দেখেন তার একটি পরীক্ষা পাত্রে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া স্টেফাইলোকক্কাস এক প্রকার ছত্রাকের আবির্ভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। তিনি এই ছত্রাকের নাম দেন পেনিসিলিন। পেনিসিলিনের আবিষ্কার সেসময়ের দুরারোগ্য ব্যাকটেরিয়া বাহিত রোগসমূহ থেকে মানুষকে বাঁচাতে পারবে বুঝেও এর উৎপাদনের স্বল্পতার কারণে বিজ্ঞানী মহল ফ্লেমিংয়ের আবিষ্কার নিয়ে পরবর্তী এক যুগ তেমন একটা গা করেনি।

এন্টিবায়োটিকের আবিষ্কার ও বাজারজাতকরণের স্বীকৃতিস্বরূপ নোবেল পুরস্কার পান এ তিন বিজ্ঞানী

১৯৪০ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ব্রিটিশ বিজ্ঞানী হাওয়ার্ড ফ্লোরি (১৮৯৮-১৯৬৮) ও আর্নেস্ট চেইন (১৯০৬-১৯৭৯) এক পরীক্ষার মাধ্যমে পেনিসিলিন বিশুদ্ধকরণ ও ঘনীভবন প্রক্রিয়া উদ্ভাবন করে পেনিসিলিনের বাণিজ্যিক উৎপাদনের দ্বার উন্মুক্ত করেন। পরবর্তীকালে ১৯৪৫ সালে এই দুই বিজ্ঞানীর সাথে পেনিসিলিনের আবিষ্কারক স্যার অ্যালেকজান্ডার ফ্লেমিং নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। ফ্লোরি ও চেইনের গবেষণার কিছুদিনের মধ্যেই বেজে ওঠে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা। এ মহাযুদ্ধে আহতদের জীবাণু সংক্রমণে মৃত্যু ঠেকাতে পেনিসিলিন বহুল পরিমাণে ব্যবহৃত হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের এই কল্যাণকর আবিষ্কারের ফলে অসংখ্য মানুষ প্রাণে বেঁচে ঘরে ফেরেন। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিপুল ব্যয়ের কারণে ব্রিটেনের জন্য এন্টিবায়োটিক গবেষণা ও উৎপাদনের খরচ বহন করা কঠিন হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় এন্টিবায়োটিকের উৎপাদন ও বিপণনের মাধ্যমের বিশ্ববাসীকে এর সুফল দিতে এগিয়ে আসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। উৎপাদনে ব্রিটিশদের ‘ফ্লাস্ক পদ্ধতির’ পরিবর্তে মার্কিনীরা কারখানায় স্থাপন করে ভারী যন্ত্রপাতি। এতে উৎপাদন বহুগুণে বেড়ে যায়।

এন্টিবায়োটিক উৎপাদন কারখানায় ভারী যন্ত্রপাতি


এরপর এন্টিবায়োটিকের ইতিহাস শুধুই এগিয়ে যাওয়ার ইতিহাস। আমেরিকার পাশাপাশি ডেনমার্ক, জার্মানি, ইংল্যান্ড, ভারত প্রভৃতি দেশে নতুন নতুন এন্টিবায়োটিক গ্রুপ আবিষ্কৃত হয় যা সিফিলিস, গনেরিয়া, অ্যান্থ্রাক্স, গ্যাংগ্রিন, ডিপথেরিয়া, মেনিনজাইটিসসহ অনেক জীবাণুবাহিত রোগের হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করে।

১৯৪৫ সালে নোবেল পুরস্কার হাতে নিয়ে স্যার অ্যালেকজান্ডার ফ্লেমিং বিশ্বকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, এন্টিবায়োটিকের অতিরিক্ত ব্যবহার প্রকৃতিতে এন্টিবায়োটিক সহনীয় (রেজিস্ট্যান্ট) ক্ষতিকারক অণুজীবের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে যা বুমেরাং হতে পারে। ফ্লেমিংয়ের এই সতর্কবার্তা বর্তমান এন্টিবায়োটিক পরিস্থিতিতে ধ্রুব সত্যে পরিণত হয়েছে। তাই তো আজ আমরা দেখি অনেক রোগীদের ওপর এন্টিবায়োটিক চিকিৎসা কোনো প্রভাব রাখতে পারে না। এন্টিবায়োটিকের অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে প্রকৃতিতে এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্ট জীবাণুর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। শরীরের জন্য উপকারী ব্যাকটেরিয়াও এন্টিবায়োটিকের অতি ব্যবহারে ধ্বংস হয়ে যায়, যার কারণে প্রকারান্তরে মানুষের মৃত্যু ঘটতে পারে।

সবশেষে এন্টিবায়োটিক নিয়ে একটা ঘটনা বলি। ভারতের হায়দ্রাবাদে পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ ওষুধ শিল্প এলাকা অবস্থিত। এখানে ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো নাকি প্রয়োজনের অতিরিক্ত পরিমাণ এন্টিবায়োটিকের কাঁচামাল উৎপাদন করে। এই অতিরিক্ত এন্টিবায়োটিক উপাদান সংলগ্ন নদীতে গিয়ে মেশে। এতে হায়দ্রাবাদসহ অনেক দূর অঞ্চল পর্যন্ত এন্টিবায়োটিক সহনীয় জীবাণুর বিস্তার হয়। গবাদিপশু ও পানি বাহিত হয়ে এ জীবাণু অনেক মানুষকে আক্রান্ত করে। বিশেষজ্ঞদের অভিযোগ, নিজেদের তৈরি ওষুধের চাহিদা বাড়াতে ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এরকম করে থাকে। অধিক মুনাফা লাভ করতে এরকম হীন কর্ম পৃথিবীর অনেক জায়গায়ই হয়ে থাকে।

আসুন, আমরা এন্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার রোধ করে একে প্রকৃত অর্থে মানব কল্যাণে কাজে লাগাই। তা না হলে স্যার অ্যালেকজান্ডার ফ্লেমিংয়ের অনন্য আবিষ্কার তার ভাষায় ‘দুর্ঘটনা প্রসূত’ই থেকে যাবে।

   

মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক

মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক

  • Font increase
  • Font Decrease

বর্তমান পৃথিবী প্লাস্টিকময়। ছোট বড় থকে প্রায় সবরকম কাজে প্লাস্টিকের ব্যবহারের আধিক্য। তবে এই প্লাস্টিক অজৈব পদার্থে তৈরি হওয়ার কারণে সহজে পচনশীল নয়। বিভিন্ন স্থানে জমে থাকার কারণে এসব পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।  শুধু পরিবেশ নয়, হার্ট, মগজ, সব জায়গাতেই নাকি ঢুকে রয়েছে প্লাস্টিক। সম্প্রতি এক গবেষণায় এমনটাই জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, হার্টের নানা রোগ, মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার পিছনেও এই প্লাস্টিকগুলির অবদান রয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

সময়ের বিবর্তনে প্লাস্টিক বিভিন্ন আঘাতের কারণে ক্ষয় হয়ে ক্ষুদ্র আকার ধারণ করে। ৫ মিলিমিটারের চেয়ে ছোট আকারের প্লাস্টিককে মাইক্রোপ্লাস্টিক বলে। দিন দিন পরিবেশে মাইক্রোপ্লাস্টিকের পরিমাণ বেড়ে চলেছে। ইতোমধ্যে সমুদ্রে বিপুল পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ সৃষ্টি করেছে। পরিবেশের বিভিন্ন প্রাণী তাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে দিন দিন এই মাইক্রোপ্লাস্টিকের আধিপত্য বেড়েই চলেছে। এমনকি মানব শরীরেও মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে। এক গবেষণায় মস্তিস্কে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে নিউ ম্যাক্সিকোর এনভয়রনমেন্টাল হেলথ পারসপেক্টিভ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয় খাদ্য, পানি এমনকি বায়ুর মাধ্যমেও শরীরে প্রবেশ করে। এসব ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা আমাদের স্নায়ুবিক নানান অনুভূতির উপরেও মাইক্রো প্লাস্টিক প্রভাব ফেলে।

রক্ত প্রবাহের কারণে তা শরীরের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করে বেড়ায়। শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোতে তা জমা থেকে স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা প্রদান করে। বৃক্ক, লিভার, হৃদপিণ্ডের রক্তনালি ছাড়াও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মস্তিষ্ক। মাইক্রোপ্লাস্টিক এসব অঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। 

ডাক্তার ইয়াতিন সাগভেকার বলেন দৈনন্দিন নানা কাজের মধ্যেই শরীরে মাইক্রোপ্লাস্টিক প্রবেশ করে। তবে পারে তা ত্বক, প্রশ্বাসের বায়ু বা ইনজেশনের মাধ্যমে।     

তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র ২০ মাইক্রোমিটারের চেয়ে ছোট মাইক্রোপ্লাস্টিক শরীরে প্রবেশ করতে পারার কথা। এছাড়া ১০ মাইক্রোমিটার আকারের গুলো মস্তিষ্কের সুক্ষ্ম কোষের ঝিল্লির অতিক্রম করতে সক্ষম হওয়া উচিত।

প্লাস্টিক পরিবেশ্ম প্রানি এমনকি মানুষের জন্যও অনেক ক্ষতিকর। তাই সকলের উচিত যতটা সম্ভব প্লাস্টিক বর্জন করা। পাশাপাশি প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি জিনিসের ব্যবহার বাড়ানো।

;

খাবারের পর প্লেট ধোয়া কষ্ট? তাহলে এই কৌশল আপনার জন্য!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খাওয়ার বিষয়ে সবাই পটু। কিন্তু খাওয়ার পর থালা বাসন ধোয়াকে অনেকেই কষ্টকর কাজ মনে করেন। তাই দেখা যায় খাওয়ার পর অপরিষ্কার অবস্থায়ই থেকে যায় থালা বাসনগুলো। এবার এই কষ্ট কমাতে এক অভিনব কৌশল বেছে নিয়েছেন এক ব্যক্তি।

সম্প্রতি এমন এক ভিডিও নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। 

হর্ষ গোয়েনকা নামে ভারতের এক শিল্পপতি তাঁর এক্স হ্যন্ডেলে (সাবেক টুইটার) ভিডিওটি শেয়ার করেন। এতে দেখা যায়, থালাবাসন পরিষ্কারের কাজ এড়াতে এক ব্যক্তি মজার এক কৌশল নিয়েছেন। এতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি খাবার রান্না করছেন। খাবার আগে তিনি প্লাস্টিক দিয়ে প্লেট, চামচ ও পানির গ্লাস মুড়িয়ে নিচ্ছেন।

শেয়ার করে তিনি মজাচ্ছলে লিখেছেন, "যখন আপনার থালা-বাসন ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি থাকে না..."।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি অনেক বিনোদনের জন্ম দিয়েছে। যদিও কেউ কেউ প্লাস্টিকের মোড়ককে হাস্যকর মনে করেন এবং এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, 'পানি সংরক্ষণ ও পুনর্ব্যবহার করা হল মন্ত্র হল এমন কৌশল! তবে প্লাস্টিকের ব্যবহার নতুন করে ভাবাচ্ছে।'

অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি আমার হোস্টেলের দিনগুলিতে এটি করেছি। আমাদের পানি সরবরাহ ছিল না এবং বারবার ধোয়ার কষ্টে এমন কৌশল নিয়েছি।'

আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে বেঙ্গালুরুতে পানি–সংকটের সমাধান হয়ে যাচ্ছে।’

;

জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রহস্যময় জলদানব জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে লক নেস সেন্টার। ২০২৩ সালের এই রহস্যময় প্রাণীর শব্দের উৎস ও একে খুঁজে পেতে হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হয়েছিল।

স্যার এডওয়ার্ড মাউন্টেনের ৯০তম অভিযানের অংশ হিসেবে আগামী ৩০ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত এই ‘লক নেস মনস্টার’কে খুঁজে পেতে অনুসন্ধান চালানো হবে।

রহস্যময় এই ‘লক নেস মনস্টার’কে ১৯৩৪ সালে প্রথম দেখা যায়। এ পর্যন্ত ১ হাজার ১শ ৫৬ বার দেখা গেছে বলে লক নেস সেন্টার সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে লক নেস সেন্টারের এমি টোড বলেছেন, আমরা আশা করছি, এই রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার গবেষকেরা আমাদের সহযোগিতা করবেন। তারা আমাদের জলদানবকে খুঁজে পেতে যথাযথ নির্দেশনা দেবেন এবং এ বিষয়ে সব কিছু জানাতে সাহায্য করবেন।

তিনি বলেন, আমাদের অভিযানের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছি। আমরা আশা করছি, নাসার উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা জলদানব বিষয়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পাবো।

রহস্যময় জলদানব খুঁজে পেতে স্বেচ্ছাসেবকের ভূপৃষ্ঠ থেকে যেমন নজর রাখবেন, তেমনি পানির ভেতরে অভিযান চালানোর বিষয়ে তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে ১৯৭০ দশক ও ১৯৮০ দশকের যে সব তথ্যচিত্র লক নেসের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে, সেগুলো যাচাই করে দেখা হবে।

তারপর জলদানব সম্পর্কে স্বেচ্ছাসেবকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন লক নেসের পরিচালক জন ম্যাকলেভারটি।

এ নিয়ে গবেষকদের নিয়ে একটি অনলাইন বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। যারা রহস্যময় এই জলদানবকে সচক্ষে দেখেছেন, তারাও এ লাইভ বিতর্কে অংশ নেবেন।

নেস হৃদ

যে হ্রদে জলদানব অবস্থান করছে বলে জানা গেছে, অভিযানের অভিযাত্রী দল নৌকায় করে সেখানে যাবেন। এসময় তাদের সঙ্গে থাকবেন গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানকারী দলের ক্যাপ্টেন অ্যালিস্টার মাথিসন। তিনি লক নেস প্রজেক্টে একজন স্কিপার হিসেবে কাজ করছেন। তার সঙ্গে থাকবেন ম্যাকেন্না।

অনুসন্ধান কাজে ১৮ মিটার (৬০ ফুট) হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হবে। এটি দিয়ে রহস্যময় শব্দের প্রতিধ্বনি রেকর্ড করা হবে।

দ্য লক নেস সেন্টার ড্রামনাড্রোচিট হোটেলে অবস্থিত। ৯০ বছর আগে অ্যালডি ম্যাককে প্রথম রিপোর্ট করেছিলেন যে তিনি একটি জলদানব দেখেছেন।

লক নেস সেন্টারের জেনারেল ম্যানেজার পল নিক্সন বলেছেন, ২০২৩ সালে নেসিকে খুঁজে পেতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, জাপানসহ আরো অনেক দেশ অনুসন্ধান কাজে অংশ নিয়েছিল। এটি ছিল বড় ধরনের একটি অভিযান।

তিনি বলেন, অনুসন্ধানের সময় যে অদ্ভুত শব্দ শোনা গিয়েছিল, সে শব্দের কোনো ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যায়নি। তবে আমরা এবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে, জলদানব লক নেসের রহস্য উন্মোচন করতে পারবো।

এ বিষয়ে আমরা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করবো। এ রহস্যময় জলদানব লক নেস সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে, তাদের সহযোগিতা নেওয়া হবে। পল নিক্সন আরো বলেন, এবার আমরা খুবই উচ্ছ্বসিত যে, জলদানবকে খুঁজে পেতে নতুন ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবো।

স্কটল্যান্ডের ইনভার্নেসের কাছে এক বিশাল হ্রদের নাম ‘নেস’। স্কটিশ গেলিক ভাষায় হ্রদকে লক (Loch) বলা হয়। আর উচ্চারণ করা হয় ‘লক’। গ্রেট ব্রিটেনের স্বাদুপানির সবচেয়ে একক বৃহত্তম উৎস এ হ্রদটির আয়তন ২২ বর্গ কিলোমিটার, গভীরতা ৮০০ ফুটেরও বেশি। এই হ্রদেই দেখা মিলেছিল সত্যিকারের জলদানব ‘লক নেসের’।

;

স্টেডিয়ামে খেলা দেখার জন্য অফিসে মিথ্যা বলা, শেষ রক্ষা হয়নি তার!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বহুল প্রত্যাশিত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) শুরু হয়েছে ২২ মার্চ থেকে। বিশ্বের নামিদামী সব খেলোয়াড়ের উপস্থিতি থাকায় বিশ্বজুড়ে এই লীগের চাহিদা তুঙ্গে। তাই এর দর্শক সংখ্যাও কত হতে পারে সেটা সহজেই অনুমেয়। যাদের সুযোগ সামর্থ্য থাকে তারা স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখেন আর যাদের সুযোগ না থাকে তারা টেলভিশনের পর্দায়ই বিনোদন খোঁজেন।

সম্প্রতি, এই লীগের একটি ম্যাচ স্টেডিয়ামে দেখতে গিয়ে অদ্ভুত এক কাণ্ডের জন্ম দিয়েছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরের নেহা নামে এক নারী ভক্ত। ওইদিন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও লখৌন সুপার জায়ান্টসের মধ্যে ম্যাচ চলছিল। সেই খেলা মাঠে বসে দেখতে তিনি পারিবারিক সমস্যার কথা বলে আগেই অফিস থেকে বের হয়ে যান।

তারপর যথারীতি সে মাঠে বসে খেলা উপভোগ করছিল। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে অন্য জায়গায়। খেলা চলার এক পর্যায়ে তাকে টিভি স্ক্রিনে দেখতে পায় তার অফিসের বস।

পরে এই ঘটনাটির একটি ভিডিও তিনি তার ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে শেয়ার করেন। সেখানে তিনি পুরো বিষয়টি নিয়ে খোলাসা করেন।

ওই ভিডিওতে নেহা বলেন, অফিস থেকে পারিবারিক সমস্যার কথা বলে মাঠে এসে খেলা দেখেছি। আমি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর একজন ভক্ত। কিন্তু টিভি স্ক্রিনে আমার বস আমাকে দেখে ফেলে। পরে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন আমি কোন দলের সমর্থক হিসেবে খেলা দেখছি। আমি বলেছি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।

এরপর বস বলেন, তাহলে আপনি নিশ্চয় গতকাল খুব অসন্তুষ্ট ছিলেন। ওরা ফিল্ডিংয়ে একটি ক্যাচ মিস করার সময় আপনাকে খুব উদ্বিগ্ন চেহারায় দেখেছি। ১৬.৩ ওভারে যখন কিপার ক্যাচ মিস করলো, তখন।

হাতেনাতে ধরা পড়ে যাওয়ার পর নেহা স্বীকার করে নেন, ওটা তিনিই ছিলেন। বলেন, হ্যাঁ, অনুজ রাওয়াত ক্যাচ মিস করেছিল।

এরপর নেহার বস বলেন, মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য ক্যামেরায় আপনাকে দেখিয়েছিল। আর তাতেই আমি চিনে ফেলেছি। তাহলে এটাই ছিল গতকাল দ্রুত বেরিয়ে যাওয়ার কারণ।

এরপর তিনি একটি হাসির ইমোজি দিয়ে কথপোকথন শেষ করেন।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর রাতারাতি সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।

পোস্টের নিচে অনেকেই নিজেদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

একজন লিখেছেন, এটা ঠিক আছে। ম্যানেজারের উচিত কর্মচারীকে স্বাধীনতা প্রদান করা। যাতে সে সত্য বলতে পারে বা নিজের জীবনকে স্বাধীনভাবে উপভোগ করতে পারে।

আরেকজন লিখেছেন, আপনাকে এর জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করা উচিত। একে তো আপনি অফিস থেকে মিথ্যা কথা বলে বের হয়েছে আবার নিজেদের ব্যক্তিগত কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন।

;