চট্টগ্রামে গড়ে তোলা হচ্ছে ‘আইয়ুব বাচ্চু চত্বর’

  • বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

আইয়ুব বাচ্চু ও ‘আইয়ুব বাচ্চু চত্বর’-এর নকশা

আইয়ুব বাচ্চু ও ‘আইয়ুব বাচ্চু চত্বর’-এর নকশা

বাংলাদেশের ব্যান্ড সংগীতের কিংবদন্তি আইয়ুব বাচ্চু জন্মেছিলেন চট্টগ্রামে। প্রয়াত শিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বন্দরনগরীর গুরুত্বপূর্ণ প্রবর্তক মোড়টিকে ‘আইয়ুব বাচ্চু চত্বর’ ঘোষণা করবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। এতে থাকবে একটি কৃত্রিম রুপালি গিটার।

আইয়ুব বাচ্চুর জানাজায় অংশ নিয়ে তার স্মৃতি সংরক্ষণে উদ্যোগ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। এর অংশ হিসেবেই প্রবর্তক মোড়টিকে ‘আইয়ুব বাচ্চু চত্বর’ হিসেবে গড়ে তোলা হবে।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, গত বছরের ১৮ আগস্ট চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের গোলপাহাড় মোড় থেকে প্রবর্তক মোড় পর্যন্ত চার লেন বিশিষ্ট সড়কটির সৌন্দর্যবর্ধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর আওতায় প্রবর্তক মোড়ে বসানো হচ্ছে আইয়ুব বাচ্চুর রুপালি গিটারের আদলে একটি গিটার।

গত বছরের ১৮ অক্টোবর সাংস্কৃতিক অঙ্গনের শিল্পী, ভক্ত-শ্রোতাদের কাঁদিয়ে চিরবিদায় নেন আইয়ুব বাচ্চু। তার বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। ২০ অক্টোবর বিকালে চট্টগ্রাম নগরীর চৈতন্য গলির কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।

বিজ্ঞাপন

দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যান্ড এলআরবির দলনেতা আইয়ুব বাচ্চু ছিলেন একাধারে গায়ক, গিটারিস্ট, গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক। গিটারের জাদুকর হিসেবে আলাদা সুনাম ছিল তার। ভক্তদের কাছে তিনি ‘এবি’ নামেও পরিচিত ছিলেন।

১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আইয়ুব বাচ্চু। ১৯৭৮ সালে ফিলিংস ব্যান্ডের মাধ্যমে সংগীত জগতে তার পথচলা শুরু হয়। ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সোলস ব্যান্ডে লিড গিটারিস্ট হিসেবে যুক্ত ছিলেন তিনি। ১৯৯১ সালে এলআরবি ব্যান্ড গঠন করেন আইয়ুব বাচ্চু। এর প্রথম অ্যালবাম ‘এলআরবি’ বাজারে আসে ১৯৯২ সালে। এটাই দেশের প্রথম ডাবল অ্যালবাম। এলআরবি’র অন্য অ্যালবামগুলো হলো ‘সুখ’ (১৯৯৩), ‘তবুও’ (১৯৯৪), ‘ঘুমন্ত শহরে’ (১৯৯৫), ‘ফেরারি মন’ (১৯৯৬), ‘স্বপ্ন’ (১৯৯৬), ‘আমাদের বিস্ময়’ (১৯৯৮), ‘স্পর্শ’ (২০০৮), ‘যুদ্ধ’ (২০১২), ‘রাখে আল্লা মারে কে’ (২০১৬)।

১৯৮৬ সালে প্রকাশিত ‘রক্তগোলাপ’ হলো আইয়ুব বাচ্চুর প্রথম প্রকাশিত একক অ্যালবাম। তার সাফল্যের শুরুটা হয় দ্বিতীয় একক অ্যালবাম ‘ময়না’র (১৯৮৮) মাধ্যমে। ১৯৯৫ সালে বাজারে আসে তার তৃতীয় একক অ্যালবাম ‘কষ্ট’। এর প্রায় সবক’টি গান জনপ্রিয়তা পায়। বিশেষ করে ‘কষ্ট কাকে বলে’, ‘কষ্ট পেতে ভালোবাসি’, ‘অবাক হৃদয়’, ‘আমিও মানুষ’ গানগুলো এখনও শ্রোতাদের মুখে মুখে। তার অন্য একক অ্যালবামগুলো হলো ‘সময়’ (১৯৯৮), ‘একা’ (১৯৯৯), ‘প্রেম তুমি কী?’ (২০০২), ‘দুটি মন’ (২০০২), ‘কাফেলা’ (২০০২), ‘রিমঝিম বৃষ্টি’ (২০০৮), ‘বলিনি কখনো’ (২০০৯), ‘জীবনের গল্প’ (২০১৫)।

আইয়ুব বাচ্চুর গাওয়া গানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ‘চলো বদলে যাই’। এর কথা ও সুর তারই। শ্রোতাপ্রিয় গানের তালিকায় আরও রয়েছে ‘শেষ চিঠি কেমন এমন চিঠি’, ‘ঘুম ভাঙা শহরে’, ‘হকার’, ‘সুখ’, ‘রুপালি গিটার’, ‘গতকাল রাতে’, ‘তারা ভরা রাতে’, ‘এখন অনেক রাত’ ইত্যাদি।

রক ঘরানার গানের এই শিল্পী আধুনিক আর লোকগীতিতেও শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছেন। বেশকিছু ছবিতে প্লেব্যাক করেছেন তিনি। চলচ্চিত্রে তার গাওয়া প্রথম গান ‘লুটতরাজ’ ছবির ‘অনন্ত প্রেম’। এছাড়া ‘আম্মাজান’ ছবির টাইটেল গানটি বেশ জনপ্রিয়। দুটিতেই পর্দায় ঠোঁট মিলিয়েছেন প্রয়াত মান্না।