বগুড়ার দুপচাঁচিয়া থানার চামরুল ইউনিয়নের বড়কোল গ্রামের মাঠ থেকে উদ্ধার করা গলাকাটা ও আগুনে পোড়ানো অজ্ঞাত মরদেহের পরিচয় শনাক্ত ও হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। পাশাপাশি এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বাবা ও মেয়েকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
জানা গেছে, পরকীয়ার জের ধরে বাবা ও মেয়ের পরিকল্পনায় সেলিম প্রামাণিককে (৩২) গলাকেটে হত্যার পর আগুনে পোড়ানো হয়। নিহত সেলিম দুপচাঁচিয়া থানার খিদিরপাড়া গ্রামের কফির উদ্দিনের ছেলে। তিনি পেশায় একজন রং মিস্ত্রী। গ্রেফতারকৃতরা হলেন একই গ্রামের আব্দুর রহমান (৫০) ও তার মেয়ে রুপালী বেগম (২৪)।
গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কারণ এবং নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তাদেরকে আরও ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঁঞা তার সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার জানান, রুপালীর স্বামী ইকরামুল দেড় বছর যাবৎ সৌদি আরব থাকে। নিহত সেলিম এবং রুপালীর মধ্যে ছোট বেলায় প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু তাদের দুইজনের বিয়ে অন্যত্র হলেও মোবাইলে যোগাযোগ অব্যাহত ছিল। রুপালীর স্বামী বিদেশ চলে যাওয়ার পর দুইজনের পরকীয়া আরও গভীর হয়। একপর্যায়ে সেলিম রুপালীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু রুপালী প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়। এতে ক্ষুব্ধ হয় সেলিম। এরপর সেলিম ও রুপালীর কিছু গোপন ভিডিও সৌদিতে অবস্থানরত ইকরামুলের কাছে পাঠানো হয়। এছাড়া গোপন ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেবে বলে রুপালীকে হুমকি দেয় সেলিম। পরে রুপালী ও তার বাবা পরিকল্পনা করে আরও কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে ৪ ফেব্রুয়ারি সেলিমকে হত্যা করে। মরদেহ যেন কেউ চিনতে না পারে সেজন্য আগুন দিয়ে মুখ পুড়িয়ে ফেলে।
এ ঘটনায় সেলিমের বাবা কফির উদ্দিন বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে দুপচাঁচিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে অভিযান চালিয়ে হত্যার রহস্য উন্মোচন করে পুলিশ।