বইমেলার সব তথ্য জানতে ‘বইমেলা কম্পাস’ অ্যাপ

, শিল্প-সাহিত্য

কানজুল কারাম কৌষিক | 2024-02-08 21:16:37

প্রতি বছরের মতো এবারও অমর একুশে বইমেলায় প্রতিদিনই যুক্ত হচ্ছে কবি-লেখকদের বই। গল্প, উপন্যাস, কাব্য, সায়েন্স ফিকশন, শিশুতোষ বইসহ নানান রকম বই নিয়ে লেখকেরা বিভিন্ন প্রকাশনীর মাধ্যমে হাজির হচ্ছেন পাঠকদের কাছে। মেলায় আসা পাঠকেরা তাদের প্রিয় লেখকের বইটি খুঁজে পেতে হচ্ছেন দিশেহারা।

যদিও বাংলা একাডেমির তথ্য কেন্দ্র রয়েছে পাঠকদের দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য। তবে অনেকেই জানেন না এই সুবিধাটির খবর। আবার অনেকেই তথ্য কেন্দ্র থেকে দিকনির্দেশনা নিয়েও যাওয়ার পথে পথ হারাচ্ছেন। এসব সমস্যার সমাধান এক নিমিষেই পেয়ে যাচ্ছেন ‘বইমেলা কম্পাস’- অ্যাপের সাহায্যে।

‘বইমেলা কম্পাস’ অ্যাপের মাধ্যমে গুগল ম্যাপের সাহায্যে গন্তব্যের স্টল ছাড়াও বিভিন্ন জনপ্রিয় বই, শৌচাগারের স্থান, নামাজ ঘরের অবস্থান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নম্বরসহ বিভিন্ন তথ্য জানাচ্ছে এই অ্যাপটি।

অ্যাপে জানানো হয়েছে, সফটওয়্যার কোম্পানি ‘স্পিডল্যাব’-এর সিইও রাকিবুল ইসলামের উদ্যোগে এ অ্যাপটি তৈরি করা হয়েছে। অ্যাপটি তৈরিতে আরো কাজ করেন নাফিস ফুয়াদ, সৈকত সেন, জাহিদ হাসান শামীমসহ তিনজন।

এতে আরো জানানো হয়, মেলার দোকান, শৌচাগার, নামাজের জায়গাসহ বিভিন্ন জায়গার অবস্থান সঠিকভাবে এই অ্যাপে জানানোর জন্য ১০ সদস্যের একটি টিমও কাজ করেছে এই অ্যাপ তৈরিতে।

অ্যাপটির প্রতিষ্ঠাতা স্পিডল্যাবের সিইও রাকিবুল ইসলাম এর ভাষ্যে, অ্যাপটি তৈরির সাথে সংশ্লিষ্ট আমরা সবাই ঢাকা বিশ্বদ্যালয়ের IIT বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলাম। আমাদের ক্লাস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুকাররম ভবনে হওয়ার সুবাদে বইমেলা ছিল একেবারে কাছেই। প্রায় প্রতিদিন বিকেলে ক্লাস শেষ করে বন্ধুরা মিলে ছুটতাম বইমেলায়। কিন্তু বিড়ম্বনায় পড়তাম স্টল খুঁজতে গিয়ে।

প্রায় ৮০০ স্টলের মধ্যে নির্দিষ্ট একটা স্টল খুঁজে পেতে পুরো বইমেলা চক্কর দেওয়া হয়ে যেতো। এই ঝামেলাটা হতো বইমেলা ঘুরতে আসা প্রায় সবারই। তাছাড়া র‍্যাব-পুলিশের সাথে কিংবা ফায়ার সার্ভিসের সাথে দ্রুত যোগাযোগ করা, সহজে নামাজের জায়গা, খাবারের জায়গা, ওয়াশরুম খুঁজে পাওয়ার একটা উপায় দরকার ছিল।

মনে হলো, এই সমস্যাগুলো সমাধান করার জন্য কিছু একটা করা দরকার।

যেহেতু, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের স্টুডেন্ট ছিলাম আমরা, একটা অ্যাপ বানিয়ে ফেলার কথাই প্রথমে মাথায় এসেছিল এবং পরীক্ষামূলকভাবে বানিয়েও ফেলি। কিন্তু সেবার দেরি হয়ে যায় এবং পরে আর আপডেট করা হয়ে ওঠেনি।

তিনি বলেন, ভার্সিটি শেষে কিছুদিন চাকরি করে যখন নিজের সফটওয়্যার কোম্পানি XpeedLab শুরু করি, তখন মনে হয়, এবার মেলার শুরু থেকেই এই স্টল না পাওয়ার সমস্যাতে সমাধান হিসেবে অ্যাপটা নিয়ে আসি।

সহজে স্টল খুঁজে পাওয়া, ম্যাপের সেই স্টলে যাওয়ার সবচেয়ে সোজা রাস্তা দেখানো, নামাজের জায়গা, ফুডকোর্ট, ওয়াশরুম খুঁজে পাওয়া, পুলিশ-র‍্যাব-ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ করা, বের হওয়ার ও ঢুকবার গেট খুঁজে পাওয়া, যেকোনো দিনের অনুষ্ঠানসূচি খুঁজে পাওয়া, বেস্টসেলার বইয়ের লিস্ট সবই পাওয়া যাবে এই অ্যাপে।

অ্যাপটির ব্যবহার করে মেলায় গন্তব্য স্টলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন মেলায় আসা দর্শনার্থী জোবায়ের আহমেদ। তিনি বার্তা ২৪.কমকে বলেন, ‘আমি মিরপুর থেকে এসেছি। এদিকে তেমন একটা আসা হয় না। সব জায়গা চিনিও না। তাই, প্লে স্টোরে এই অ্যাপটি দেখে ডাউনলোড করলাম। অনেক উপকৃত হচ্ছি’।

উল্লেখ্য, প্লে স্টোর থেকে বিনামূল্যে ডাউনলোড করা যাচ্ছে, এই 'বইমেলা কম্পাস' অ্যাপটি।

প্রসঙ্গত, বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ১১ লাখ বর্গফুট জায়গায় চলছে অমর একুশে বইমেলা-২০২৪।

এবার বইমেলায় মোট ৬৩৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৯৩৭টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১২০টি প্রতিষ্ঠানকে ১৭৩টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৫১৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৬৪টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে একটি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৩৬টিসহ মোট ৩৭টি প্যাভিলিয়ন রয়েছে এবারের বইমেলায়।

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর