চলছে অমর একুশে বইমেলা। শুক্রবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ছুটির দিন হওয়ায় মেলা প্রাঙ্গণে বইপ্রেমীদের উপচে পড়া ভিড় চোখে পড়ার মতো। সবারই উদ্দেশ্য পছন্দের বইটি বেছে নেওয়া।
এক এক ধরনের পাঠকের এক এক রকমের পছন্দ। তবে অন্যান্যবার গবেষণাধর্মী বইয়ের চাহিদা কম থাকলেও এবারের চিত্র ভিন্ন। বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে গবেষণাধর্মী বইয়ের চাহিদা অনেকগুণ বেড়েছে বলে মনে করছেন প্রকাশকরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অন্বেষা প্রকাশনের প্রকাশক মো. শাহাদত হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘এর আগে যে কোনোবারই তরুণদের মধ্যে গল্প ও উপন্যাসধর্মী বইয়ের চাহিদা খুব একটা বেশি দেখা যায়। তবে এবার চিত্র কিছুটা আলাদা। এবারের বইমেলায় তথ্য নির্ভর গবেষণাধর্মী বইয়ের চাহিদা বেশি। বিশেষ করে বিজ্ঞানধর্মী বইয়ের দিকে ঝুঁকছে অনেকেই। এখন মনে হচ্ছে এ ধরনের বইয়ের দিকে আমাদের আরও নজর দেওয়া উচিত ছিল।’
একই কথা জানান বাতিঘর প্রকাশনা থেকেও। জানা যায়, নতুন নতুন বিষয় নিয়ে গবেষণাধর্মী বইয়ের চাহিদা বেড়েছে গত বছরের তুলনায়। তরুণরা এখন যে কোনো তথ্যের বিষয়ে গভীরভাবে জানতে চায়। আর তাদের এই জানার ক্ষুধা থেকেই বেড়েছে গবেষণাধর্মী বইয়ের চাহিদা।
বইমেলার তরুণ দর্শনার্থীরা বলছেন, তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে অনলাইনে নানা তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু সেসব বিষয়ে একটু গভীরভাবে জানতে চাইলে, কখনো কখনো তেমন কিছু আর জানা যাচ্ছে না।
বই সংরক্ষণে রাখলে যে কোনো প্রয়োজনে আবার দেখে নেওয়া যায় বলে জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী নুসরাত আক্তার। এসব কারণেই বেড়েছে গবেষণা ধর্মী বইয়ের চাহিদা।
তবে গবেষণাধর্মী বইয়ের পাশাপাশি তরুণ-তরুণীদের ও কিশোর-কিশোরীদের উপন্যাস ও রহস্য গল্পের বইয়েরও চাহিদা রয়েছে।
ধানমন্ডি প্রিপারেটরি স্কুলের ছাত্রী বইমেলায় এসে কিনেছেন শার্লক হোমসের চার হাতের স্বাক্ষর নামের বইটি। তিনি বলেন, ‘অনেকদিন ধরেই বইটি খুঁজছিলাম। বইমেলায় এসে পেয়ে গেলাম। তাই কিনে নিলাম।’
এদিকে এখনো পাঠকদের চাহিদা রয়েছে হুমায়ূন আহমেদের বইয়ে। প্রকাশক ও দর্শনার্থী উভয়ই বলছেন, হুমায়ুন আহমেদ বই পড়ার অভ্যাস তৈরি করেছিলেন তরুণদের মধ্যে। হিমু, রূপার মতো চরিত্রের ভক্তরা আজও বইমেলায় আসেন হুমায়ন আহমেদের বইয়ের সন্ধানে।
২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে অমর একুশে বইমেলা। বইমেলার শেষের দিকে দর্শনার্থীদের আগমন আরও বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।