একুশে গ্রন্থমেলার শেষ সময়ে বইয়ের কেনাবেচা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন প্রকাশকরা। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, গ্রন্থমেলার শুরুর পর থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বইয়ের কেনাবেচায় সন্তুষ্ট তারা। তবে ২৫ তারিখ থেকে শুরু হওয়া বৈরী আবহাওয়ার কারণে গ্রন্থ মেলার শেষ সময়ের বই কেনাবেচা নিয়ে শঙ্কা দেখছেন তারা।
মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চলা অমর একুশে গ্রন্থমেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে প্রকাশকদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
বই মেলা প্রাঙ্গণে সরেজমিনে দেখা গেছে, দুই দিনের বৃষ্টিপাতের কারণে বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জায়গায় জায়গায় বৃষ্টির পানি জমে রয়েছে। অনেক জায়গায় রাস্তায় বসানো ইট পানি ও কাদার কারণে উঠে যাচ্ছে। ফলে দর্শনার্থীদের চলাফেরা করতে কিছুটা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
এদিকে, বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে বারবার বই মেলা প্রাঙ্গণে মাইকিং করে বলা হচ্ছে, 'যেকোনো সময় বৃষ্টি নামতে পারে। স্টল কর্তৃপক্ষকে বলা হচ্ছে আপনারা পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে যেন বৃষ্টিতে বই না ভিজে যায়'।
বাংলা একাডেমির এমন মাইকিং শুনে অনেক দর্শনার্থীকে মেলা প্রাঙ্গণ ছেড়ে চলে যেতে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে রাজধানীর যাত্রা বাড়ি থেকে আগত দর্শনার্থী মো.পরশ বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘স্ত্রী ও ছেলে মেয়েকে নিয়ে মেলায় এসেছি। কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করি। বৃষ্টি আসার মাইকিং শুনে চলে যাচ্ছি। যদিও আর কিছুক্ষণ থাকার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু আবহাওয়ার কথা শুনে চলে যেতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে স্টল কর্তৃপক্ষদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালের বৃষ্টিপাত ও বিকেলে মেঘলা আকাশের কারণে মেলায় দর্শনার্থী উপস্থিত অন্যদিনগুলোর তুলনায় কিছুটা কম হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) একই আবহাওয়া বিরাজমান থাকায় দর্শনার্থীদের উপস্থিতি কম। ফলে এই দুই দিনে শেষ সময়ের প্রত্যাশা অনুযায়ী বই বিক্রি হচ্ছে না বলেই তারা জানান। এ অবস্থা আগামী দুইদিন চলতে থাকলে গ্রন্থমেলার শেষ দুই দিনের বই বিক্রি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে জানান প্রকাশনার সঙ্গে থাকা সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে 'দিব্য প্রকাশ' প্রকাশনীর মার্কেটিং কর্মকর্তা সাজু বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘প্রথম থেকে মেলায় দর্শনার্থী উপস্থিতি ও বই কেনাবেচা ভালো হয়েছে। কিন্তু এই দুই দিনের বৃষ্টিপাত ও বৈরি আবহাওয়ার কারণে দর্শনার্থী উপস্থিতি কিছুটা কম ও কেনাবেচাও কমেছে। মেলার আর দুই দিন বাকি রয়েছে। এই দুই দিনও এ অবস্থা চলতে থাকলে শেষ সময়ে গ্রন্থমেলায় বই যেভাবে কেনাবেচা তা কিছুটা হলেও বাধাগ্রস্ত হবে।
দিব্য প্রকাশ' প্রকাশনীর কর্মকর্তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে পাঞ্জেরি পাবলিকেশনের কর্মকর্তা পিয়াশ বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলায় সাধারণত মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরতে আসেন এবং বই কিনেন। কিন্তু চলমান বৈরি আবহাওয়ার কারণে মানুষ কিছুটা কম আসছে। এ অবস্থা চলমান থাকলে শেষ দুইদিনের বই কেনাবেচা আশানুরূপ হবে না বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে, বাংলা একাডেমি সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত এবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় ৪ হাজার ২৮৫টি বিভিন্ন বিভাগে নতুন বই প্রকাশ হয়েছে।