অতিথি পাখির কলতানে মুখরিত জাবি ক্যাম্পাস

, ক্যাম্পাস

জাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-12-06 17:18:48

পাখির কিচির-মিচির আওয়াজে ঘুম ভাঙা যেন নিত্যদিনকার ঘটনা আল বেরুনী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী রবিউলের। শুধু সে নয় এখানকার সবার বলা চলে। শীতের সময়ে অতিথি পাখির সাথে বসবাসের দুর্লভ সুযোগ মেলে ক্যাম্পাসবাসীর।

বলছিলাম প্রাণ -প্রকৃতির ক্যাম্পাস নামে খ্যাত সবুজে ঘেরা মোহনীয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ( জাবি) কথা। প্রতিবছরের মতো এবারেও অতিথি পাখির কলতানে মুখরিত ক্যাম্পাস।

সাদা শাপলার মাঝে সেই সুদূর সাইবেরিয়া থেকে আসা নানা রকম অতিথি পাখির আনাগোনা দেখে মনে পড়ে যেতে পারে গ্রাম বাংলার চিরচেনা সেই প্রাচীন রূপসি গ্রামীণ এক মনোরম পরিবেশের কথা।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সবুজ এই ক্যাম্পাসে শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে বরাবরের মতোই কাঙ্ক্ষিত সেই অতিথি পাখির জলকেলিতে মুখর হয়ে উঠতে শুরু করেছে লেক ও জলাশয়গুলো। প্রতিদিনই দেখা মিলছে ঝাঁকে ঝাঁকে হাজারো রং বাহারি অতিথি পাখির। অতিথি পাখিতে দেখতে এবং শহরের ব্যস্তময় যান্ত্রিক জীবন আর ইট পাথরে ঘেরা ধুলাবালি থেকে হাফ ছেড়ে বাচঁতে ইতিমধ্যে অসংখ্য দর্শণার্থী ভিড় করছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের তথ্যমতে, ১৯৮৬ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম অতিথি পাখি আগমন শুরু করে। সাধারণত শীতে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে পাখিরা জাবির জলাশয়গুলোতে আসে। হিমালয়ের উত্তরের দেশ সাইবেরিয়া, চীন, মঙ্গোলিয়া ও নেপালে এভারেস্ট পর্বতের কাছাকাছি হওয়ায় বছরের এই সময়ে প্রচুর তুষারপাত ঘটে। অতিরিক্ত শীত থেকে জীবন বাঁচাতে খাদ্যের খোঁজে নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে আসে পাখিগুলো। জাবি ক্যাম্পাস নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল, জলাশয়গুলো খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ ও নিরাপদ আশ্রয়স্থল হওয়ায় অতিথি পাখিরা এখানে অবস্থান করে।


শীতকালে যে-সব অতিথি পাখি দেখা যায় তাদের মধ্যে ছোট সরালি, গার্গিনি, চিতা টুপি, বামুনিয়া, মুরহেন, খঞ্জনা, পিনটেইল, কোম্বডাক, পচার্ড, লাল গুড়গুটি, জলপিপি, শামুকভাঙা, নাকতা, মানিকজোড়, খোঁপাডুবুরি, ছোট পানকৌড়ি প্রভৃতি। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছোট-বড়

১২টি লেক থাকলেও সাধারণত চারটি লেকে পাখিরা আসে।

বাংলাদেশ সরকার ২০১৪ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে অতিথি পাখিদের অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করে। তবে সম্প্রতি ক্যাম্পাসের জলাশয়গুলো পরিষ্কার না করায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানগুলোতে আতশবাজি ও উচ্চ শব্দে গান বাজানোর কারণে অতিথি পাখি আসার পরিমাণ কমে গেছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর