সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধা ভিত্তিক নিয়োগের ২০১৮ সালে ঘোষিত পরিপত্র বহালসহ তিন দফা দাবিতে এবার ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ১১টি বিভাগের শিক্ষার্থীরা। আগামী রোববার থেকে এই কর্মসূচি পালন করবে বলে জানান তারা।
শনিবার (৬ জুলাই) 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়' নামক একটি ফেসবুক গ্রুপ ঘেঁটে এসব তথ্য জানা যায়।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগ রয়েছে ১৯টি। এরমধ্যে প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পাওয়া তথ্যমতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনে সংহতি জানায় ১১টি বিভাগ।
রোববার থেকে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করা ১১টি বিভাগ হলো- আইন, বাংলা, নৃবিজ্ঞান, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, লোক প্রশাসন, প্রত্নতত্ত্ব, ব্যবস্থাপনা, মার্কেটিং, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস্, ফার্মেসি এবং গণিত বিভাগ।
এ বিষয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী নিলয় সরকার বলেন, 'বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি জাগরণ সৃষ্টি করেছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলমান ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন এই আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে। আমরা মনে করি, শিক্ষার্থীদের এ সংগ্রাম দেশের শিক্ষাব্যবস্থার মান উন্নয়ন এবং সমতা ও ন্যায়ের দাবিকে তুলে ধরেছে। আমরা শিক্ষার্থীদের এই ন্যায্য দাবির প্রতি সংহতি প্রকাশ করছি এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।'
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী তানভীর মাহিম বলেন, 'একটি দেশ মূলত মেধাবী শিক্ষার্থীদের হাত ধরেই দাঁড়ায়। কোটার ভিত্তিতে বৈষম্য একটি দেশের মেধাবীদের চালিকাশক্তিকে ম্যাসিভলি ধ্বংস করে দেয়ার মতো একটি বিষবৃক্ষ। মেধাবী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময় কোটাধারীদের কারণে ভালো মেরিট নিয়েও কাঙ্ক্ষিত বিষয় পায় না এবং ক্রমান্বয়ে বিভিন্ন চাকুরির পরীক্ষায় কোটা বৈষম্যের শিকার হয়ে স্বীয় মেধাকেই 'অভিশাপ' ঠাহর করতে থাকে। স্বাধীন বাংলাদেশের মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে আমাদের উপর চাপিয়ে দেয়া কোটা বৈষম্যের অভিশাপকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আমরা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ‚ ১৭তম আবর্তনের সকল শিক্ষার্থী‚ সকল ধরনের শ্রেণী কার্যক্রম বর্জন করলাম। আমাদের দাবি আদায় হলে মেধাবী জাতি গড়ার প্রত্যয়ে আমরা পুনরায় শ্রেণী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবো।'
উল্লেখ্য, এর আগে গত ৪ জুলাই ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক প্রায় তিন ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে চারদফা দাবি জানিয়ে অবরোধ তুলে নেয় তারা।