ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) ক্যাম্পাস ও হোস্টেলে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অপরাধে ছাত্রলীগ নেতাসহ ২৩ শিক্ষার্থী বহিষ্কারসহ বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে।
রবিবার (১০ নভেম্বর) মমেক অধ্যক্ষ ডা. নামজুল আলম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় ওই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের মুচলেকা প্রদান সাপেক্ষে পাঁচ শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস ও হোস্টেলে অবস্থান, ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
তাদের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে চাঁদাবাজি, মাদকসেবন, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ এবং বৈষ্যমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে।
বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের মধ্যে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ডা. অনুপম সাহা ও সাধারণ সম্পাদক ডা. আব্দুল্লাহ আল হাসানসহ কয়েকজন কর্মীও রয়েছেন।
এর আগে একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত মেতাবেক উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. জিম্মা হোসেনকে সভাপতি এবং ডা. মো. বদরউদ্দীনকে সদস্য সচিব করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী অভিযুক্ত ২৮ জনের মধ্যে ২৩ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বহিস্কারসহ ক্যাম্পাস ও হোস্টেলে নিষিদ্ধ করা হয়।
এর মধ্যে ৮ জন প্রাক্তন শিক্ষার্থীকে (বর্তমানে চিকিৎসক) ৫ অক্টোবর থেকে আজীবন কলেজ ক্যাম্পাস ও হোস্টেলে প্রবেশ, অবস্থান ও কোনো প্রকার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়। তারা হলেন- ম-৫২ ব্যাচের ডা. অনুপম সাহা ও ডা. মাশফিক আনোয়ার, ম-৫৩ ব্যাচের ডা. অনুপম দত্ত অর্ঘ্য ও ডা. আবদুল্লাহ আল হাসান, ম-৫৪ ব্যাচের ডা. মাহিদুল হক অয়ন, ম-৫৫ ব্যাচের ডা. জাহিদুল ইসলাম তুষার, বিডিএস-৫ ব্যাচের ডা. সানজীব সরকার বোনাস ও ডা. সাইফুল ইসলাম।
এছাড়াও ১১ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে একাডেমিক কার্যক্রমে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তারা হলেন- ম-৫৩ ব্যাচের মেহেদী হাসান শিমুল, ম-৫৭ ব্যাচের রকিবুল হাসান রুকন, ম-৫৮ ব্যাচের রাইয়ান হাবিব ফাগুন, বিডিএস-১০ ব্যাচের মেরাজ হোসেন বাঁধনকে দুই বছর, ম-৫৮ ব্যাচের অর্ণব সাহা এক বছর এবং ম-৫৭ ব্যাচের আলমগীর হোসেন, ম-৫৮ ব্যাচের শামস আরেফিন, বিডিএস-০৭ ব্যাচের মুনতাসির রাতুল, সানজিদ আহমেদ, বিডিএস-০৮ ব্যাচের শাহরিয়ার ইফতেখার সৌমিক ও বিডিএস-১০ ব্যাচের আসিফ ইকবালকে ছয় মাস।
একই সঙ্গে ৪ জন ছাত্রের হোস্টেলে প্রবেশ আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তারা হলেন- ম-৫৬ ব্যাচের মঞ্জুরুল হক রাজিব, ম-৫৭ ব্যাচের আশিক উদ্দিন, ম-৫৯ ব্যাচের কুবের চক্রবর্তী ও বিডিএস-৮ ব্যাচের আশিক মাহমুদ রিয়াদ।
তবে অভিযুক্ত ৫ জন ছাত্রের অপরাধের মাত্রা কম হওয়ায় হোস্টেল ও ক্যাম্পাসকে শিক্ষাবন্ধব ও নিরাপদ করার লক্ষ্যে তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের মুচলেকা প্রদান সাপেক্ষে তাদেরকে ক্যাম্পাস ও হোস্টেলে অবস্থান, ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশগ্রহনের অনুমতি প্রদান করা হয়। তারা হলেন- ম-৫৭ ব্যচের শিপন হাসান, সৈয়দ রায়হান আল আশরাফ মাহিন, ম-৫৮ ব্যাচের আসিফ রায়হান, ম-৫৯ ব্যচের দিগন্ত সরকার ও সিয়াম জাওয়াদ পুষন।
সভার এই সিদ্ধান্ত অমান্যকারী ছাত্রকে ভবিষ্যতে একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত সাপেক্ষে বর্ধিত শান্তি প্রদান করা হতে পারে বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।