সিলেট গ্যাস ফিল্ডের ১০ নম্বর কূপে তেলের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। কূপটি সিলেট জেলার জয়িন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট অঞ্চলে অবস্থিত।
রোববার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ওই কূপে তিনটি গ্যাস স্তরের পাশাপাশি তেলের অবস্থান নিশ্চিত হয়েছি আমরা। ১৩৯৭-১৪৪৫ মিটার গভীরতায় তেলের অবস্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রথম দিন ২ ঘণ্টায় ৭০ ব্যারেল তেল উঠেছে। আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে,মজুতের বিষয়টি নিশ্চিত হতে হবে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে আরও ৪ থেকে ৫ মাস সময় লাগবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত ৮ ডিসেম্বর টেস্ট করার সময় তেলের উপস্থিতি জানা গেছে। প্রাথমিকভাবে এপিআই গ্রাভিটি ২৯.৭ ডিগ্রি পাওয়া গেছে। পরীক্ষা সম্পন্ন হলে তেলের মজুদ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। প্রাথমিকভাবে তেলের মজুদ প্রায় ৮-১০ মিলিয়ন ব্যারেল ধারনা করা হচ্ছে, যার মূল্য ৫৬ টাকা লিটার হিসেবে ধরলে ৭ হাজার কোটি টাকা। উত্তোলিত তেল পরীক্ষার জন্য বুয়েট, ইস্টার্ন রিফাইনারীসহ ৩টি ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। রেজাল্ট পাওয়া গেলে আর বিস্তারিত ধারণা পাওয়া যাবে। দিনে ৫০০ থেকে ৬০০ ব্যারেল তেল পাওয়ার আশা করা হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১৯৮৬ সালে দেশে প্রথম তেলের সন্ধান পাওয়া যায় হরিপুরে। এটি পাঁচ বছর স্থায়ী হয়েছিল। ওই ক্ষেত্রে এপিআই গ্র্যাভিটি ২৭ ডিগ্রি। সেদিক থেকে নতুন ক্ষেত্রের মান উন্নত।
কূপটিতে তেলের পাশাপাশি গ্যাসের ৩টি স্তর পাওয়া গেছে। স্তরগুলোর অবস্থান হচ্ছে ২৪৬০ থেকে ২৪৭৫ মিটার, ২৫৪০ থেকে ২৫৭৬ মিটার ও ৩৩০০ মিটার গভীরতায়। গ্যাসের মজুদ হতে পারে ৪৩.৬ থেকে ১০৬ বিলিয়ন ঘনফুট ও যার গড় মূল্য ৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
গ্যাস উন্নয়ন তহবিল ও সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে সিলেট ১০ নম্বর কূপের খনন কাজ। এ জন্য গ্যাসফিল্ড কোম্পানির সঙ্গে সিনোপ্যাক ইন্টারন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম সার্ভিস করপোরেশন, চায়নার সঙ্গে গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়।
সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব নুরুল আমিন ও পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার।