জলবিদ্যুৎ নিয়ে ত্রি-দেশীয় চুক্তি

, অর্থনীতি

সেন্ট্রাল ডেস্ক ২ | 2023-08-23 21:49:07

জলবিদ্যুৎ নিয়ে অচিরেই বাংলাদেশ-ভারত-ভুটান সমঝোতা চুক্তি হচ্ছে। এক হাজার ২২৫ মেগাওয়াটের জলবিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপিত হবে ভুটানে। কেন্দ্র স্থাপনে আর্থিক সহযোগিতা দেবে ভারত। সম-বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশ হবে এর সুফলভোগী। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ‘পাওয়ার সেল’র মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন। গতকাল রোববার তিনি গণমাধ্যমকে জানান, বাংলাদেশ, ভারত ও ভুটানের মধ্যে জলবিদ্যুৎ নিয়ে খুব শিগগিরই সমঝোতা চুক্তি হতে পারে। ভারতের সহযোগিতায় ভুটানে এক হাজার ২২৫ মেগাওয়াটের একটি জলবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। সমবিনিয়োগের এই প্রকল্পে অংশীদার হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তিনি আরো জানান, প্রথমত, তিন দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবে। এরপর দিন দেশ নির্ধারণ করবে তাদের কোন কোন কোম্পানি এখানে কাজ করবে। সেই তিনটি কোম্পানি মিলে যৌথ মূলধনি কোম্পানি গঠন করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। মোহাম্মদ হোসাইন আরো জানান, ভারতের আইন নিয়ে কিছু জটিলতা আছে। এ বিষয়ে ভারতকে তাদের গাইডলাইন পরিবর্তনের আহ্বান জানানো হয়েছে। সেই পরিবর্তন আসবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ। এতে নতুন বিনিয়োগের নতুন পথ উন্মোচিত হবে। এদিকে বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, ভুটানে ২৫ হাজার মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের সুযোগ রয়েছে। এই বিদ্যুৎ বাংলাদেশে আনা সম্ভব। কারণ ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের ঋতুতে পার্থক্য রয়েছে। গ্রীষ্মে বাংলাদেশে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদার সময় ভুটানে শীতকাল থাকায় সেখানে চাহিদা কম থাকে। আবার বাংলাদেশে শীতকালে যখন চাহিদা কমে যায়, ভুটানে তখন বিদ্যুতের চাহিদা সর্বোচ্চ। তাই গ্রীষ্মে বাংলাদেশের চাহিদা বেশি থাকার সময় উৎপাদিত বিদ্যুতের পুরোটাই ভুটান থেকে আনা যাবে। আবার শীতকালে আমাদের চাহিদা কম থাকলে তখন এই বিদ্যুৎ ভুটানই ব্যবহার করতে পারবে। এই সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখেই ভুটানের জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে বিনিয়োগে আগ্রহী বাংলাদেশ। এ সংক্রান্ত চুক্তি আগামী বছরের শুরুর দিকেই হতে পারে বলে আশা করছেন বিদ্যুৎ বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও। তিনি বলেন, ‘খুব শিগগিরিই এই চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। ২০১৮ সালের প্রথম দিকেই এই চুক্তি হতে পারে।’ বিদ্যুৎ উৎপাদন সংশ্লিষ্ট আরেকটি সূত্র জানায়, ভুটান বর্তমানে দেড় হাজার মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। শুকনো মৌসুমে নদীতে পানি কমে গেলে এই উৎপাদন কমে যায় ২৮৮ মেগাওয়াট। ভুটানের বেশির ভাগ বিদ্যুৎকেন্দ্রই ভারতীয় অনুদান ও ঋণে নির্মিত। এ কারণে ভারত কম দামে সেখান থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করছে। এদিকে, ২০২০ সালের মধ্যে আরও ১০ হাজার মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে ভুটান। এর সবটাই আমদানি করবে ভারত। এরই মধ্যে ভারতের সহযোগিতায় ছয় হাজার ৩০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার ১০টি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে ভুটানে। ২০১৯ সালের মধ্যে উৎপাদনে যাবে আরও ৩টি নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র। এর বাইরে আরও ১৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের মতো জলশক্তি রয়েছে দেশটির।

এ সম্পর্কিত আরও খবর