পুঁজিবাজারের দরপতনের প্রতিবাদে মতিঝিলের রাস্তায় বিনিয়োগকারীদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মতিঝিল থানা পুলিশ।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজানুর রশীদ চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক কাজী আব্দুর রাজ্জাককে ডেকে নিয়ে এই নির্দেশনা দেয় পুলিশ।
পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা সুতরাং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সামনে বিক্ষোভ করা যাবে না। যদি করতে হয় তবে ডিএমপির অনুমোদন লাগবে। এই বিষয়ে ওপর থেকে নির্দেশনা দেওয়া আছে।
এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, বুধবার সকালে মতিঝিল থানার তদন্ত কর্মকর্তা মনির হোসেন আমাদের দুপুর ১২টার মধ্যে থানায় উপস্থিত হতে বলেন। আমরা ১২টায় থানায় হাজির হই। পরে আমাদের দুপুর পৌনে ৩টা পর্যন্ত থানায় বসিয়ে রাখা হয়।
এসময় মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) ইয়াসিন আরাফাত আমাদেরকে মতিঝিলের রাস্তায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করার কারণ জিজ্ঞাসা করেন। আমরা তার ব্যাখ্যা দেই। এরপর তিনি আমাদের বলেন, এখন থেকে বাণিজ্যিক এলাকায় আর কোনো মানববন্ধন কিংবা বিক্ষোভ করা যাবে না। বিক্ষোভ করতে হলে ডিএমপি থেকে অনুমতি নিতে হবে।
তিনি বলেন, এর ফলে আমাদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানায়। আগামীকাল আমরা বিক্ষোভের জন্য ডিএমপি কমিশনারের কাছে আবেদন করবো।
তবে এই বিষয়টি গণমাধ্যমে স্বীকার করেননি মতিঝিল থানার কর্মকর্তরা।
উল্লেখ্য, ২৭ আগস্ট বিক্ষোভ ও মানববন্ধনের নামে দেশের পুঁজিবাজারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার কারণে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় জিডি করে ডিএসই কর্তৃপক্ষ। জিডিতে পুঁজিবাজারের স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে করণীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মতিঝিল থানার অফিসার ইনচার্জকে অনুরোধ করা হয়।
জিডির পরে বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ কার্যক্রম কিছুদিনের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। তবে গত সপ্তাহ থেকে তারা আবারও বিক্ষোভ শুরু করেছে। মঙ্গলবারও ডিএসইর সামনে বিক্ষোভ করে তারা।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়, ২৭ আগস্ট আনুমানিক ২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে ৯-১০ জন লোক ডিএসইর সামনে মাইকসহ বিক্ষোভ করে। যাতে ডিএসই এর সদস্যসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যাতায়াত ও অফিসের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যঘাত ঘটে। এরা বেশ কিছুদিন যাবত এ বিক্ষোভ করে আসছে। এছাড়া বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সম্মানহানিকর মন্তব্য করছে।
জিডিতে আরও বলা হয়, বিনিয়োগকারীদের এ ধরনের কার্যকলাপ দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এছাড়া বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ পুঁজিবাজারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। ফলে বিদেশিরা বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত হচ্ছে।