সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস বুধবারও (১৮ ডিসেম্বর) পুঁজিবাজারে দরপতন হয়েছে। নতুন করে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ না করায় এই দরপতন হচ্ছে বলে মনে করছে বাজার সংশ্লিষ্টরা।
চলতি সপ্তাহে শুধু সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিনগুলোতে লেনদেন বন্ধ ছিল। তাই সেই সময়ে দরপতন হয়নি। বাকি রোব, মঙ্গল ও বুধবার টানা তিনদিন দরপতন।
বিনিয়োগকারীরা আক্ষেপ করে বলেছেন, এখন পুঁজিবাজারের লেনদেন বন্ধ থাকা উচিত। তাতে অন্তত শেয়ারের দাম না বাড়লেও যে পর্যায়ে রয়েছে তার চেয়ে কমবে না।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে দরপতন শুরু হয়। যা অব্যাহত ছিলো জানুয়ারি মাস পর্যন্ত। ঠিক সেই ধারায় ২০১৯ সালের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে দরপতন শুরু হয়েছে। সর্বশেষ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার (১৫ ডিসেম্বর) সূচক কমেছে ৭৯ পয়েন্টে। এরপর দিন মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সরকারি ছুটি থাকায় দরপতন হওয়ার সুযোগ হয়নি। কিন্তু তারপর দুদিন মঙ্গল ও বুধবার আবারও দরপতন হয়েছে।
এরমধ্যে বুধবারও দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক কমেছে ২ পয়েন্ট। সূচকের পাশাপাশি কমেছে লেনদেন। তবে বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
একই অবস্থায় লেনদেন হয়েছে দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)। বুধবার সিএসইর প্রধান সূচক কমেছে ১ পয়েন্টে। লেনদেনও কমেছে। তবে বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারে দাম।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিএসইর সাবেক পরিচালক বার্তা২৪.কমকে বলেন, পুঁজিবাজারের পরিস্থিতি এখন এমন হয়েছে যে, পুঁজিবাজারকে ছুটিতে রাখা দরকার। কারণ এখন লেনদেন হলেও অর্থাৎ সরকারি ছুটির পর পুঁজিবাজার খুললেই কমছে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি।
তিনি বলেন, ডিএসই, বিএসইসি (বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের কারও প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা নেই। আস্থার সংকটের পাশাপাশি নতুন করে তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে। আর এ কারণে পুঁজিবাজারে দরপতন অব্যাহত রয়েছে।
বাজার চিত্র
চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া দরপতন এখন ভয়াবহ ধসে রূপ নিয়েছে। ফলে ১৮ ডিসেম্বর বুধবার পর্যন্ত বিনিয়োগকারীদের পুঁজি উধাও হয়েছে ৮৩ হাজার ৩২৩ কোটি ৯ লাখ টাকা। একইভাবে সিএসইর বিনিয়োগকারীদেরও পুঁজি কমেছে ৮৩ হাজার কোটি টাকা। সিডিবিএলের তথ্য মতে, ২৫ লাখ ৭৮ হাজার বিনিয়োগকারী রয়েছে।
এর মধ্যে ডিএসইর প্রধান সূচক ১ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৪১৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ২০৩টির, কমেছে ৯৪টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৬টির কোম্পানির শেয়ারের দাম। আর তাতে লেনদেন হয়েছে ২৫৪ কোটি ৩৮ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিলো ২৮১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।
সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৩০টির কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১১৯টির, কমেছে ৭৭টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৪টির। এদিন লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ৩৬ লাখ ৬৩ হাজার টাকা।