রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের পরিবেশনায় আগামী ২৬ ও ২৭ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে মঞ্চায়িত হবে শওকত ওসমান রচিত কালজয়ী উপন্যাস অবলম্বনে নাটক ‘ক্রীতদাসের হাসি’।
নাটকটির নির্দেশনায় রয়েছেন রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের প্রধান ড. সাইদুর রহমান লিপন।
বাগদাদ অধীশ্বর বাদশা হারুন অর রশিদের বেগম জুবায়দার বাঁদী মেহেরজানের সঙ্গে হাবসি গোলাম তাতারীর প্রেম। তারা দুজনে প্রচণ্ড সুখী আর তাদের হৃদয় উৎসারিত হাসি যেন পৃথিবীর সব সুখকে ছাপিয়ে যায়। কিন্তু অসুখী হারুন অর রশিদ সুখের ভিক্ষুক। সে হাসতে পারে না। একদিন নিভৃতে সে তাতারি আর মেহেরজানের হাসি শুনে ঈর্ষান্বিত হয় এই ভেবে যে গোলামেরা এত সুন্দর হাসতে পারে, অথচ আমি হাসতে পারি না! বাদশা ঈর্ষান্বিত হয়ে তাতারি ও মেহেরজানকে বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নেয়। তিনি হাবসি গোলাম তাতারিকে দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্তি দিয়ে প্রচুর ধনদৌলত প্রাচুর্য দিয়ে তাতারির সেই প্রাণখোলা হাসি কিনে নিতে চান। কিন্তু মেহেরজানের কাছ থেকে আলাদা হওয়ার পর সে তার সব হাসি হারিয়ে ফেলে। শত চেষ্টা করেও খলিফা আর তাতারিকে হাসাতে পারেন না।
ক্রীতদাসের হাসি মঞ্চায়ন নিয়ে নাটকটির নির্দেশক ড. সাইদুর রহমান লিপন বলেন, দাস প্রথা বিলুপ্ত হলেও নিউ লিবারেল যুগের বর্তমান আর্থ-সামাজিক বিশ্বব্যবস্থায় দাসত্বের বহুস্তরায়িত রূপান্তর ঘটেছে। ক্ষমতার নিরঙ্কুশ আধিপত্য মানুষের সহজাত চিন্তা, ও কর্মের স্বাধীনতাকে সংকুচিত করে নিয়ত পরাধীনতার শৃঙ্খলে বন্দি করছে। কিছু সংখ্যক মানুষ আজ বিশ্বায়নের যুগে শাসনক্ষমতার কৌশলী ব্যবস্থাপনায় সুবোধ শান্ত আজ্ঞাবহ গোষ্ঠীতে পরিণত হচ্ছে।
এরূপ এক নতুন বাস্তবতায় শওকত ওসমানের ‘ক্রীতদাসের হাসি’ যুগস্পর্শী ও সমকালীন।নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করছে রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মঞ্চ ও পোশাক পরিকল্পনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের প্রভাষক মহসিনা আক্তার, আলোক পরিকল্পনায় ও অভিনয় তত্ত্বাবধানে ধীমান চন্দ্র বর্মণ, সহকারী নির্দেশক আব্দুর রাজ্জাক।