রবীন্দ্র সংগীতশিল্পী সাদি মহম্মদ মারা গেছেন

, বিনোদন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2024-03-13 23:25:38

রবীন্দ্র সংগীতশিল্পী সাদি মহম্মদ মারা গেছেন। প্রাথমিকভাবে তিনি ‘আত্মহত্যা’ করেছেন বলে জানা গেছে।

বুধবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যার পর তার মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। গণমাধ্যমকে এমনটাই জানান কিংবদন্তি নৃত্যশিল্পী ও শিল্পীর পারিবারিক বন্ধু শামীম আরা নীপা। তার মরদেহ বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল হাসপাতালে আছে। 

এমন মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে নীপা বলেন, ‘ওনার মা মারা যাওয়ার পর থেকেই একটা ট্রমার মধ্যে চলে যান। ঠিক স্বাভাবিক ছিলেন না মানসিকভাবে। মা হারানোর বেদনা সম্ভবত তিনি নিতে পারেননি। এভাবেই চলছিলো। বুধবার রোজা রাখলেন। ইফতারও করলেন। এরপরই তিনি নীরবে না ফেরার দেশে পাড়ি জমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে মনে করছি।’

উল্লেখ্য, গত বছর ৮ জুলাই মা জেবুন্নেছা সলিমউল্লাহ (৯৬) বার্ধ্যক্যজনিত রোগে মারা গেছেন। এরপর থেকেই নাকি নানা কারণে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন এই সংগীত তারকা।

মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তোফাজ্জল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেছেন, বাসায় যে ঘরে বসে সাদি মহম্মদ গান করতেন, সেখানেই তার ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া গেছে। মনে করা হচ্ছে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। বাসার লোকজন ডাকাডাকি করে তার সাড়া পাননি। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। খবর পেয়ে রাত ৮টার দিকে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।

সাদি মহম্মদ রবীন্দ্র সঙ্গীতের ওপরে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেছেন। ২০০৭ সালে আমাকে খুঁজে পাবে ভোরের শিশিরে অ্যালবামের মাধ্যমে তিনি সুরকার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ২০০৯ সালে তার শ্রাবণ আকাশে ও ২০১২ সালে তার সার্থক জনম আমার অ্যালবাম প্রকাশিত হয়। এছাড়াও তিনি সাংস্কৃতিক সংগঠন রবিরাগের পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

সাদি মহম্মদ মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রহরে শহীদ পিতার সন্তান। তার বাবার নাম শহীদ সলিমউল্লাহ। ১৯৭১ সালে মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডের সি-১২/১০ বাড়িটি ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম সূতিকাগার। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা সলিমউল্লাহর বাড়িতে নিয়মিত বৈঠকে আসতেন দলের শীর্ষ নেতারা, আসতেন বঙ্গবন্ধুপুত্র শহীদ শেখ কামালও।

একাত্তরের ২৩ মার্চ তাজমহল রোডের সেই বাড়িতে সেজ ছেলে সাদি সাদী সাদি মহম্মদের আঁকা বাংলাদেশের পতাকা ওড়ান বাবা সলিমউল্লাহ, সেই পতাকা সেলাই করে দিয়েছিলেন সাদি-শিবলীর মা জেবুন্নেছা সলিমউল্লাহ। 

সেই পতাকা ওড়ানোর সূত্র ধরে একাত্তরের ২৬ মার্চ অবাঙালি বিহারি ও পাকিস্তানি সেনাদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হয়ে ওঠে সলিমউল্লাহর বাড়ি। পুড়িয়ে দেয়া হয় পুরো বাড়ি, গুলি করে মারা হয় সলিমউল্লাহকে।

 

 

 

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর