গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত বাড়িটির সামনে হামলা হয়েছে ‘মাটির ময়না’খ্যাত গুণী অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচীর ওপর। তার নেতৃত্বে একদল সংস্কৃতিকর্মী সেখানে শোক দিবস উপলক্ষে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করছিলেন। এসময় ৩০-৩৫ জনের একটি দল লাঠিসোটা নিয়ে এসে রোকেয়া প্রাচীর ওপর হামলা করে।
আপনার ওপর কারা হামলা করেছে জানতে চাইলে গুরুতর আহত হয়েছেন এমন অভিযোগ করে রোকেয়া প্রাচী বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘কোটা আন্দোলনকারী, বিএনপিসহ আরও লোকজন ছিলো। টোকাই শ্রেণির দুস্কৃতকারী ওরা নয়, ওদের সঙ্গে রাজনৈতিক সংযোগ রয়েছে। আমাকে টার্গেট করেই এসেছিলো কোটা আন্দোলনের লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে। প্রত্যেককে আমার শিক্ষিত মনে হয়েছে। তারা খুব শুদ্ধ ভাষায় কথা বলেছে। তাদের কথাবার্তা শুনেই বুঝেছি তারা দুষ্কৃতকারী নয়।’
এই তারকা আরও বলেন, ‘সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে আমাদের ওপরে অতর্কিত হামলা হয়। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করছিলাম। হঠাৎ আমাদের ঘিরে ধরে বেধড়ক পেটানো হয়।’
এই অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘আমি জীবনটা নিয়ে ওখান থেকে পালিয়েছি। হাসপাতালে যাওয়ার সাহস পাইনি। যদি সেখানেও আক্রমণের শিকার হই! রাস্তা পার হয়েছি ধমক খেতে খেতে। ওরা বারবার বলছিল, “ওরে পুলিশের হাতে তুলে দে’, যেন আমি বিরাট কোনো অপরাধ করে ফেলেছি। প্রধান উপদেষ্টা কি ধানমন্ডি ৩২ যাওয়া যাবে না বলে কোনো রুল জারি করেছেন? সেনাবাহিনী ঘিরে রেখেছে একটা জায়গা, সেখানেও আমাকে এভাবে পেটানো হলো! এটা আমি বিশ্বাস করতে পারছি না।’’
কোটা সংস্কারের জের ধরে বঙ্গবন্ধুর বাড়িটি সরকার পতনের দিন পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পোড়াবাড়ির একটা অংশে পূর্ব ঘোষণা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নেওয়ার জন্য গিয়েছিলেন রোকেয়া প্রাচী। এ সময় আরো ৭০-৮০ জন সংস্কৃতিকর্মী রোকেয়া প্রাচীর সঙ্গে যোগ দেন। সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের আয়োজন চলাকালে ৩০-৩৫ জন যুবক উপস্থিত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীমতে, তাদের হাতে লাঠিসোটা ছিল। তারা সকলকে হুমকি দিয়ে সরিয়ে দেয়। এরপর বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ভাঙচুর করে। রোকেয়া প্রাচী সেটি ঠিক করতে গেলে তাকে লাঠি দিয়ে মারতে থাকে যুবকেরা। একের পর এক আঘাতে অভিনেত্রী লুটিয়ে পড়েন। পরে তাকে দ্রুত সহশিল্পীরা ধরে বাইরে নিয়ে যান।
দীর্ঘদিন ধরেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত রোকেয়া প্রাচী। দলের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছেন তিনি।