এবার বাংলাদেশের উঠতি সংগীত শিল্পী মাঈনুল আহসান নোবেলের বিরুদ্ধে গান চুরির অভিযোগ এনেছেন ভারতীয় সংগীত পরিচালক সৈকত চট্টোপাধ্যায়।
সোমবার নোবেলের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত ‘বাংলা মিলবে কবে’ গানের গীতিকার ও সুরকার সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, তার বারণ করা শর্তেও কোন প্রকাশিত লিখিত চুক্তি ছাড়াই গানটি ইউটিউবে প্রকাশ করেছেন নোবেল।
বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক কপিরাইট আইনে গানের মূল স্বত্ব গীতিকার ও সুরকারের। প্রচলিত কপিরাইট আইনে, সুরকার ও গীতিকারের অনুমতি ছাড়া কোনো গান প্রকাশ করলে তা কপিরাইট আইনের ৭১ ধারার লঙ্ঘন মর্মে ৮২ ধারায় সর্বোচ্চ ৫ বছর কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকার অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।
এমন ঘটনাকে এই ভারতীয় সংগীত পরিচালক ‘চুরি’ হিসাবে আখ্যা দিয়ে ফেসবুকে লিখেছেন, নোবেলম্যানের নোবেল চুরি। স্রষ্টার সার্বিক অনুমতি ছাড়াই একজন শিল্পী স্রষ্টার গান কিভাবে সপাটে প্রকাশ করতে পারে। হতে পারে প্রাথমিক স্তরে কথা হয়েছিল তার গানটা গাওয়া নিয়ে, যেরকম অনেকের সাথেই হয়ে থাকে, না হয় সে কিঞ্চিত অগ্রিমও দিয়েছে, কিন্তু ফাইনালি আমার অফিসিয়ালি বারণ শর্তেও আমার অনুমতি ছাড়াই আমার গান প্রকাশ। বিনা অনুমতি তে পরের জিনিস নিজের বানিয়ে নেওয়াকে কি বলে যেন? আর গানটার কি দশাই না বানিয়েছে?
এছাড়া সৈকত চট্টোপাধ্যায় ভারতীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, যখন নোবেল এখানকার একটি বাংলা রিয়্যালিটি শো এর প্রতিযোগী ছিল, এই গানটা তখনকার। ও বারবার আমাকে অনুরোধ করেছিল, বাংলাদেশে অরিজিন্যালস হবে, তার জন্য একটা গান দিতে। এই গানটি আমি ওকে দিয়েছিলাম। কথা হয়েছিল, ২০২০ সালের আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসে সেই গানটি মুক্তি পাবে। প্রথমে গানটি লোপামুদ্রা মিত্রকে দিয়ে গাওয়াব ভেবেছিলাম, কিন্তু কোনও কারণে হয়ে ওঠেনি। তাই নোবেল বলায়, ওকেই দিয়েছিলাম।
সৈকত আরও জানিয়েছে, কিছুদিন আগে নোবেল আমাদের প্রধানমন্ত্রীর নামে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিল। আমি ওকে বলেছিলাম, ক্লিনচিট না পেলে এ গান ব্যবহার না করতে। ও শুনল না। গানটার জন্য ৩০ হাজার টাকা আমি চেয়েছিলাম। ১০ হাজার টাকাও আমায় দিয়েছিল। আমি সেই টাকাও ফেরত দিতে চেয়েছিলাম। নোবেল প্রথমে বলেছিল, কোনও গরিবকে দিয়ে দিতে। তারপর বলে, ওকেই যেন ফিরিয়ে দিই। আমি তাও বলেছিলাম, গানের যা থিম, সেটা এই মুহূর্তে নোবেলের পক্ষে গাওয়া ঠিক হবে না। আমি এবং আমার পরিবারের পক্ষে এতটা বিতর্কে যাওয়া ঠিক হবে না। ও বলেছিল, গানটা রিলিজ করবে না। তাও করল।
যদিও এই অভিযোগ প্রসঙ্গে নোবেলের মন্তব্য জানতে তার মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
এদিকে গেল বছরের ডিসেম্বরে নোবেলে বিরুদ্ধে প্রথম গান চুরির অভিযোগ উঠে। সে সময় নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ ও ইউটিউবে ‘দেশ’ শিরোনামের একটি গান প্রকাশ করেন নোবেল। যেখানে গানটির কথা ও সুর নিজের বলে দাবি করেন তিনি। এরপরই নোবেলের এই গানটির বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ তোলেন ব্যান্ডদল ‘অ্যাবাউট ডার্ক’। অভিযোগের পর নোবেল সেই গানটি সরিয়েও নিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: এবার নোবেলের বিরুদ্ধে গান চুরির অভিযোগ