বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সমর্থকদের যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবনে হামলার ঘটনায় বিশ্ব নেতারা নিন্দা জানিয়েছে।
বিশ্ব নেতারা শান্তি ও সুশৃঙ্খলভাবে ক্ষমতা পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, যা ঘটেছে তা ভয়াবহ এবং গণতন্ত্রের ওপর আক্রমণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন তারা।
বুধবার (৬ জানুয়ারি) কংগ্রেস অধিবেশনের বিরোধিতা করে ওয়াশিংটনে জড়ো হন কয়েক হাজার ট্রাম্প সমর্থক, যাদের মধ্যে উগ্রপন্থি বিভিন্ন গ্রুপের সদস্যরাও রয়েছেন। সেই সমাবেশে বক্তব্যে নভেম্বরের নির্বাচনে পরাজয় মেনে না নেওয়ার ঘোষণা দেন ট্রাম্প। এর কিছুক্ষণ পরেই কয়েকশ ট্রাম্প সমর্থক পার্লামেন্ট ভবনের নিরাপত্তা ব্যারিকেড ভেঙে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান। এক পর্যায়ে কংগ্রেসের অধিবেশন চলার মধ্যেই পুলিশের বাধা ভেঙে ক্যাপিটল ভবনে ঢুকে পড়েন তারা।
এতে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জয় অনুমোদন স্থগিত হয়ে গেছে।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন পার্লামেন্ট ভবনে হামলা দৃশ্যকে নিন্দা করে বলেছেন, বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রণি ভূমিকা পালন করে। তাই তিনি শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর হওয়া জরুরি বলে মনে করেন।
যুক্তরাজ্যের অন্যান্য রাজনীতিবিদরা সহিংসতার সমালোচনা করে বলেছেন, এটি গণতন্ত্রের ওপর সরাসরি আক্রমণ।
স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টারজিওন টুইট করেছেন যে ওয়াশিংটনের দৃশ্যগুলি একেবারে ভয়াবহ।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেছেন, আমি মার্কিন গণতন্ত্রের শক্তির ওপর আস্থা রেখেছি। নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাউডেন আমেরিকান জনগণকে একত্রিত করে এই উত্তেজনাপূর্ণ পর্যায়টি কাটিয়ে উঠবেন।
ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিন-ইয়ভেস লে ড্রিয়ান বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবনে হামলা গণতন্ত্রের ওপর মারাত্মক আক্রমণ। আমি এর তীব্র নিন্দা করছি।
ইউরোপীয় সংসদের প্রেসিডেন্ট ডেভিড সাসোলি সহিংস এই দৃশ্যের বিষয়টি গভীরভাবে উদ্বেগজনক বলে বর্ণনা করেছেন।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো তিনি প্রতি মিনিটের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন বলে জানিয়ে বলেছেন, আমি মনে করি আমেরিকান গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী, এবং আশা করছি খুব শিগগিরই সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।
কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাঙ্কোইস-ফিলিপ চ্যাম্পে টুইটারে লিখেছেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের পরিস্থিতি দেখে হতবাক হয়েছি।
তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সবাইকে সংবিধানের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে বলেছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়-পরাজয়ের নির্ধারক ইলেকটোরাল ভোটের হিসাবে ট্রাম্পের ২৩২টির বিপরীতে বাইডেনের পক্ষে আসে ৩০৬টি। এরপর দেশের বিভিন্ন স্টেটে নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তুলে আদালতে গিয়ে বিফল হয় ট্রাম্প।
ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান উভয় দলের নির্বাচন কর্মকর্তা ও নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকরা ৩ নভেম্বরের নির্বাচনে বড় ধরনের জালিয়াতির অভিযোগকে ভ্রান্ত আখ্যা দিয়েছেন। দেশের বিভিন্ন স্টেটে নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তুলে আদালতে গিয়েও বিফল হয় ট্রাম্প শিবির।