করোনাকালীন এই সময়ে ভাইরাসটি নিয়ে নিরবিচ্ছিন্নভাবে গবেষণা করে চলছেন বিজ্ঞানীরা। আর তাতেই বেরিয়ে আসছে একের পর এক নিত্য নতুন ঘটনা। করোনা বাতাসে ছড়ায় সেটা অনেক আগেই প্রমাণ করেছেন বিজ্ঞানীরা। মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেটে সে বিষয়ে গবেষণার বিস্তারিত প্রকাশও হয়েছে। তবে এবার যেটা জানা গেল সেটা মানুষের জন্য সত্যিই চিন্তার বিষয়। কারণ এবার বিজ্ঞানীরা বলছেন বাতাসে ৬ ফুট বেশ দূরত্বেও সংক্রমণ করতে পারে করোনাভাইরাস। ফলে ৬ ফুট দূরত্বে থেকেও করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হল মানুষের মধ্যে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’ সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে এমন তথ্য। ভাইরাসের গতি প্রকৃতি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে এমন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ওই স্বাস্থ্য সংস্থা। আর এর ফলে এটা আরও একবার স্পষ্ট হয়ে গেল কোভিড সংক্রমণ রুখতে সামাজিক দূরত্ব বিধি কঠোরভাবে পালন করার কোন বিকল্প নেই।
শ্বাসপ্রশ্বাসের সময় অতি ক্ষুদ্র কণার আকারে করোনাভাইরাস বাতাসে মিশে যায়। কিন্তু একজন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির ৩ থেকে ৬ ফুটের মধ্যেই সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে সবচেয়ে বেশি। এই দূরত্বের মধ্যেই ভাইরাসের ঘনত্ব এবং সক্রিয়তা বেশি থাকে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিসিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের গবেষকরা।
তবে ৬ ফুটের বাইরের পরিসর যে একেবারে নিরাপদ তা কিন্তু নয়। আরও দূরেও ছড়ায় ভাইরাস। সংক্রমণের ঝুঁকি থেকেই যায়। ভাইরাসটি যেমন শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে ছড়াতে পারে, তেমনি ছোঁয়াছুঁয়িতেও সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, মানুষ কথা বলতে গিয়ে বা হাঁচি, কাশি এমনকি সাধারণ শ্বাস নিতে গিয়েও ড্রপলেট ছড়ায়। তাতে ভাইরাস থাকে। দূরত্ব থাকলে সংক্রমণের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
গবেষণায় আরও পাওয়া গেছে, বদ্ধ ঘরে কোনও সংক্রমিত ব্যক্তি যদি অন্ততপক্ষে ১৫ মিনিট কিংবা তার বেশি সময় ধরে থাকেন, তবে সে ক্ষেত্রে তার মুখ থেকে ছিটকে আসা লালাবিন্দু বা ‘এরোসল’ থেকে ৬ ফুটের বেশি দূরত্বে দাঁড়ানো ব্যক্তিও আক্রান্ত হতে পারেন। শুধু তাই নয়, সংক্রমিত ব্যক্তি চলে যাওয়ার পর যদি অন্য কেউ ওই ঘরে ঢোকেন, তারও সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।