রাশিয়া বাহিনী পূর্ব ইউক্রেনীয় শহর আভদিভকা দখলের জন্য যুদ্ধ জোরদার করেছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন।
শহরটির শীর্ষ কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে সোমবার (২৭ নভেম্বর) কিয়েভ জানিয়েছে, কয়েক সপ্তাহের লড়াইয়ের পর রাশিয়ার সেনাবাহিনী সবদিকে অগ্রসর হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে পূর্ব ইউক্রেনের একটি বড় অংশ দখল করে নেওয়ার মাধ্যমে রাশিয়ার অর্থায়ন করা বিচ্ছিন্নতাবাদীরা আভদিভকা অবরুদ্ধ করে। পরে শহরটির চারপাশে দুর্গ তৈরি করে রাশিয়ার সেনারা।
রাশিয়ার সেনারা গত অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলের মধ্য দিয়ে লক্ষ্য অর্জনের জন্য আভদিভকায় স্থল ও আকাশভিত্তিক আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে।
আভদিভকার সামরিক প্রশাসনের প্রধান ভিটালি বারাবাশ সর্বশেষ জানিয়েছেন যে, ইউক্রেনের সেনারা রাশিয়ার অগ্রযাত্রাকে থামাতে এবং পিছিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা অগ্রগতি করেছে।
এদিকে, রাশিয়া গত শুক্রবার জানিয়েছে তারা দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে এবং ক্রিমিয়া উপদ্বীপে ইউক্রেনের ১৬টি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রুশ ফেডারেশনের বিভিন্ন স্থানে গত বৃহস্পতিবার রাতে ড্রোন ব্যবহার করে কিয়েভ সরকারের সন্ত্রাসী হামলা চালানোর প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেওয়া হয়েছে।
মস্কোর দাবি, রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইউক্রেনের ওই ১৬টি ড্রোন ধ্বংস করেছে। এসব ড্রোনের মধ্যে ক্রিমীয় উপদ্বীপে ১৩টি এবং ভলগোগ্রাদ অঞ্চলে তিনটি ড্রোন ভুপাতিত করা হয়।
এ ছাড়াও ইউক্রেন বাহিনীর দক্ষিণ খেরসন অঞ্চলের মস্কো কর্তৃক দখলকৃত পূর্ব তীরে যাওয়ার প্রচেষ্টাকে প্রতিহত করার দাবিও করেছে রাশিয়া। মস্কো মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) জানিয়েছে, সম্মুখ যুদ্ধে কিয়েভ সেনাবাহিনী প্রচুর ক্ষতি-ক্ষতির শিকার হয়েছে।
ইউক্রেনের সেনাবাহিনী গত সপ্তাহে জানিয়েছিল, তারা রাশিয়া বাহিনীকে ডিনিপ্রো নদীর তীর থেকে তিন থেকে আট কিলোমিটার পেছনে ঠেলে দিয়েছে।
সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক গোলটেবিল বৈঠকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু বলেছেন, ‘খেরসন এলাকায় অবতরণ অভিযান পরিচালনার জন্য ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সামরিক বাহিনীকে অগ্রিম পদক্ষেপের জন্য ধন্যবাদ। ইউক্রেনের বাহিনী ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।’
যদিও বার্তা সংস্থা এএফপি স্বাধীনভাবে খেরসন অঞ্চলের সামরিক পরিস্থিতি যাচাই করতে পারেনি।
কিন্তু কিছু ক্রেমলিনপন্থী সামরিক ব্লগার শোইগুর বক্তব্যের বিপরীত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
খেরসন অঞ্চলের রাশিয়া নিযুক্ত গভর্নর ভ্লাদিমির সালদো গত সপ্তাহে স্বীকার করেছেন যে, কয়েক ডজন ইউক্রেনীয় সেনা ক্রিঙ্কির ছোট্ট পূর্ব তীর গ্রামের চারপাশে অবস্থান তৈরি করেছে।
খবরটি নিশ্চিত হলে ওই অগ্রগতি ইউক্রেনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হবে, যা ডিনিপ্রো নদী অতিক্রম করার জন্য একাধিক প্রচেষ্টা চালিয়েছে।
২০২২ সালের নভেম্বরে মস্কো পশ্চিম তীর থেকে পিছিয়ে যাওয়ার পর থেকে জলপথটি দুই পক্ষের মধ্যে একটি ডি-ফ্যাক্টো ফ্রন্টলাইনে পরিণত হয়েছে।
এটি অতিক্রম করা ক্রিমিয়ান উপদ্বীপে একটি স্থল সেতু তৈরির ক্ষেত্রে একটি পদক্ষেপ হবে।
তবে অনেক বিশ্লেষক বলেছেন, ইউক্রেনের সেনাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলটি ছোট এবং একটি বাস্তব অগ্রগতিতে রূপান্তর করা কঠিন হবে।